ঢাকা: দেশ গেলো রসাতলে। ৭১ এর গালে চপেটাঘাত ছাড়া একে আর কিচ্ছু বলা যায় না। মানবতাবিরোধী, যুদ্ধাপরাধী রাজাকার সাজাপ্রাপ্ত এটিএম আজহারুল ইসলামকে আজ মুক্ত করে দিয়ে মুহাম্মদ ইউনূস সরকার নিজেদের পুরোপুরি ভাবে ‘৭১ বিরোধী সরকার হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করলো।
আজহারের মুক্তির বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ হচ্ছে। ‘আমার সোনার বাংলায় রাজাকারের ঠাঁই নাই ….আজহার তুই রাজাকার তুই রাজাকার ‘ স্লোগানে আজ মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত রাজাকার এটিএম আজহারের মুক্তির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হয়।
মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা রাজাকার এটিএম আজহারের খালাসের প্রতিবাদে ঢাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল হয়। ‘ছ তে ছাত্রশিবির,তুই রাজাকার তুই রাজাকার ‘ স্লোগানে, রাজাকার এটিএম আজহারের মুক্তির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সাব্যস্ত হয়।
যুদ্ধাপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ড থেকে জামায়াতে ইসলামীর নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলামের খালাসের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাম ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতারা।
মঙ্গলবার বিকেল ৫টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিন থেকে মিছিল নিয়ে তাঁরা রাজু ভাস্কর্যে গিয়ে তারা সমাবেশ করেন।
সেখানে ছাত্র ইউনিয়ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক শিমুল কুম্ভকার বলেন, “গণঅভ্যুত্থানের দশ মাসে পরে দেখতে পেলাম একাত্তরের সাজাপ্রাপ্ত আলবদর কমান্ডার আজাহার বেকসুর খালাস হল।
রক্তের উপর দাঁড়ানো এই সরকার আমাদের সঙ্গে বেইমানি করছে। এই সরকারের আমলে একের পর এক মবজাস্টিস, সন্ত্রাসমুক্তি ও একাত্তরের গণহত্যাকারীদেরও মুক্তি দেওয়া হচ্ছে।”
তিনি বলেন, “একাত্তরে যারা দালালি করেছে, বাংলাদেশের সঙ্গে বিরোধিতা করেছে, তাদের এদেশে রাজনীতি করতে দেওয়া হবে না। ‘একজন মানবতাবিরোধী ও গণহত্যাকারীর’ সঙ্গে আপস করা যাবে না’।
উল্লেখযোগ্য যে, রাজাকার এটিএম আজহারের জন্ম রংপুরে।১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় ইসলামি ছাত্র সংঘের একজন শীর্ষ স্থানীয় নেতা ছিলেন তিনি।তৎকালীন সময়ে যে আল-বদর বাহিনী,এই বাহিনী গঠনে তিনি বিশেষ ভূমিকা পালন করেন।
তাঁর বিরুদ্ধে ৬ টি অভিযোগের মধ্যে একটি অভিযোগ হচ্ছে এমন যে,একজন নারী সাক্ষীর উদ্ধৃতি, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় আজহারুল রংপুর টাউন হলে এক গর্ভবতী নারীকে টানা ১৯ দিন ধর্ষণের সাথে জড়িত ছিলেন।
এছাড়া তিনি ঝাড়ুয়ারবিল গণহত্যায় জড়িত ছিলেন সেখানে ১২০০-র বেশি হিন্দু নিরীহ বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা করা হয়েছিল। এসব অপরাধের প্রমাণ বিভিন্ন ডকুমেন্টারি ও প্রামাণ্যচিত্র পাওয়া যায়।
আর, এহেন একজন মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত রাজাকার এটিএম আজহারকে খালাস প্রদান করেন আদালত।এই রায়ের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হচ্ছে।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলাম আপিলের রায়ে খালাস পেয়েছেন।মঙ্গলবার, ২৭ মে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেছেন।
বাংলাদেশের বিচার বিভাগের ইতিহাসে এই প্রথম মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি আপিল বিভাগের রায়ে খালাস পেলেন। এই রায়ের ফলে জামায়াত নেতা আজহারুল ইসলামের মুক্তিতে বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।