ঢাকা: মুক্তিযোদ্ধার তো কোনো জায়গা নেই বিএনপিতে। ফজলুর রহমানকে শাস্তির মুখে পড়তে হলো, খালেদা জিয়া মুক্তিযোদ্ধা হলে তাঁকেও শাস্তি তো পেতে হয়, বৈষম্য রাখা যায় না!
খালেদা জিয়া নাকি প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা, দাবী বিএনপির!
২০২১ সাল থেকে হঠাৎ বিএনপি খালেদা, তারেক, কোকোসহ পুরো জিয়া পরিবারকে মুক্তিযোদ্ধা দাবী শুরু করে। অথচ, এর আগে এসব ইতিহাস কেউই জানতোনা।
এখন আবার এরা নাড়াচাড়া করছে।
বেগম খালেদা জিয়া দেশের প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লা বুলু।
সোমবার (২৫ আগস্ট) কুমিল্লা নগরীর টাউন হল মাঠে আদর্শ সদর উপজেলা বিএনপির সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই বিভৎস্য মন্তব্য করেন।
বরকতউল্লা বুলু বলেন, ‘শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে ওনার প্রিয় সহধর্মিণী বেগম খালেদা জিয়াকে একটি চিরকুট পাঠিয়েছিলেন। চিঠিতে লেখা ছিল, “তুমি যেভাবে হোক তোমার দুটি নাবালক সন্তানকে পালিয়ে আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে চলে যাও।
ঢাকা বা দিনাজপুর যেখানে যাও, বেঁচে থাকলে দেখা হবে, দেশ স্বাধীন হলে দেখা হবে, নাইলে মাফ করে দিয়ো।”
এ চিঠি পাওয়ার পর বেগম জিয়া অনেক কষ্টে ঢাকায় আসলেন, সিদ্ধেশ্বরীতে ওনার এক আত্মীয়ের বাসায় আত্মগোপনে রইলেন। কিন্তু পাক হানাদার বাহিনী তাকে খুঁজতে খুঁজতে ১৯৭১ সালের ২২ জুলাই দুই সন্তানসহ গ্রেপ্তার করে ক্যান্টনমেন্টে নিয়ে যায়। সেখানে তিনি বন্দী ছিলেন।
কাজেই বেগম খালেদা জিয়াই হচ্ছেন বাংলাদেশের প্রথম মহিলা মুক্তিযোদ্ধা।’
তা মুক্তিযোদ্ধারা দেশ রক্ষা করে, অমানবিকতার ইতিহাস বানায় না।
২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা: ২০০৪ সালের ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা সুস্পষ্টভাবে ছিল বিএনপি-জামায়াতের এক মাস্টারপ্ল্যান। আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করা এবং শেখ হাসিনাকে চিরতরে নিঃশেষ করে দেওয়ার জন্য গ্রেনেড হামলার এই ঘৃণ্য ঘটনা হয়েছিল। এটি আজ আদালতের রায়ে প্রমাণিত।
খালেদা জিয়া তখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। আদালতের রায়ে দেখা যায়, রাষ্ট্রের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাকে ব্যবহার করা হয়েছিল সে সময়।
খালেদা জিয়া এই গ্রেনেড হামলার পর ন্যূনতম দুঃখ প্রকাশ করেননি বরং তিনি তৎকালীন বিরোধী দলের নেতা শেখ হাসিনা ‘ভ্যানিটি ব্যাগে করে গ্রেনেড নিয়ে গিয়েছিলেন’ এমন উদ্ভট, অমানবিক ও দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য করেছিলেন।
১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস। জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার বিয়োগান্তক দিন। এই দিনে ভুয়া জন্মদিন পালন করেছিলেন খালেদা জিয়া। এবং শুধু ভুয়া জন্মদিন পালন করেই তিনি ক্ষান্ত হননি, ভুয়া জন্মদিনের তিনি বড় বড় কেক কাটার উৎসব করেছিলেন যেন শোকের আবহ নষ্ট হয়।
একজন মানুষ কতটা অমানবিক হলে রাষ্ট্রের স্থপতির শাহাদাৎ দিবসে ভুয়া জন্মদিনের উৎসব করেন।
এবং এই ইতিহাস সবাই জানেন যে, মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্থানি সামরিক কর্মকর্তা কর্নেল জানজুয়ার সাথে স্বেচ্ছায় থেকে যাওয়ার কারণে যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে খালেদা জিয়াকে গ্রহণ করেননি তার স্বামী জিয়াউর রহমান।
বঙ্গবন্ধু নিজের মেয়ে বলে স্বীকৃতি দেয়ায় সেই খালেদা জিয়াকে গ্রহণ করে জিয়া। আর তার প্রতিদান খালেদা জিয়া দিয়েছেন ১৫ আগস্টে কেক কেটে! এটিই খালেদা জিয়ার অমানবিকতার উদাহরণ।