ঢাকা: বাংলাদেশটাকে খুবলে খেয়েছে জামাত, বিএনপি, এনসিপি এবং ইউনূস!
জনকন্ঠ দখল, দিনে দুপুরে ডাকাতি, ব্যক্তি মালিকানাধীন একটি প্রতিষ্ঠান সবাই মিলে যৌথভাবে দখল করেছে। কাজটি সুসম্পন্ন হয়েছে এনসিপি, জামায়াত, বিএনপি এবং সরকারের যৌথ প্রযোজনায়।
আর গ্রামে-গঞ্জে, হাটে-বাজারে যদি এই প্রবণতা ছড়িয়ে পড়ে তাহলে তো কথাই নেই! নয়া বন্দোবস্তের সাক্ষাৎ বাস্তবায়ন চলছে, যে যার মতো দখল করুন, করুন ডাকাতি!
কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোরকে নির্যাতনকারীদের একজন নাকি ছিলেন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর আফিজুর রহমান। ওই সময় প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর বা ডিজিএফআইয়ে কর্মরত ছিলেন তিনি।
সম্প্রতি জনকণ্ঠ পত্রিকা ‘দখল’ ইস্যুতে মেজর আফিজের সম্পৃক্ততার বিষয়টি আলোচনায় এলে তাঁকে শনাক্ত করেন এই কার্টুনিস্ট কিশোর।
কার্টুনিস্ট কিশোর তার ফেসবুক পেজ ‘মানুষ কিশোর’ থেকে সোমবার একটি পোস্ট দিয়েছেন।
তিনি লেখেন, “কদিন আগে ফেসবুকের এক বন্ধু আমাকে ব্লগার ও লেখক,সাংবাদিক আরিফ জেবতিক এর একটি পোস্ট নজরে আনে। আরিফ জেবতিক তার পোস্টে জনকণ্ঠ পত্রিকা দখলে মুক্তিযুদ্ধপন্থিদের সরিয়ে জামায়াতপন্থি সাংবাদিকদের নেতৃত্ব দেওয়া মেজর আফিজকে নিয়ে লেখা সেই পোস্টে আমাদের অর্থাৎ আমি এবং মুশতাক ভাইকে গুম, নির্যাতন ও অত্যাচারের সাথে এই মেজর আফিজের জড়িত থাকা নিয়ে সন্দেহের কথা জানায়।”
ফেসবুক পোস্টে ফরেনসিক স্কেচ দিয়ে কিশোর লেখেন, “জামিনে মুক্ত হওয়ার পর আমার স্মৃতিতে আঁকা নির্যাতনকারী দুজনের দুটি ফরেনসিক আর্ট যোগ করে দেই। এর মধ্যে একটি স্কেচের সঙ্গে আফিজের বহুমিল পাই।
আমিও আমার মতো খোঁজ নিতে থাকি এবং বেশ কিছু তথ্য পাই। উল্লেখ্য অনুসন্ধানী সাংবাদিক বলে পরিচিত সায়ের জুলকারনাইন এর সর্বশেষ তথ্য মতে আমাদের গুমের সঙ্গে পলাতক ডিজিএফআইয়ের প্রধান সাইফুল আলমের যোগসাজশ ছিল বলে জানা যায়।
“আমি খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, এই মেজর আফিজ ২০২০ সালে ডিজিএফআইয়ের মিডিয়া উইং এ কর্নেল শাম্মী ফিরোজ এর অধীনে একটি টিমে ছিলেন। তিনি দীর্ঘদিন লেখক মুশতাক ভাইকে অনুসরণ করতেন।
আওয়ামী লীগের মুখপাত্র বলে পরিচিত ব্যারিস্টার নিঝুম মজুমদারের বেশ ঘনিষ্ট ছিল এই আফিজ। আবার এই আফিজ ছিল পলাতক স্বৈরাচার হাসিনার ক্যাশিয়ার বলে পরিচিত ব্যবসায়ী নাফিজ সরাফাতের খুবই ঘনিষ্ঠজন।”
আফিজের বাবা বিগত বিএনপি সরকারের এক মন্ত্রীর এপিএস ছিলেন বলে জানতে পেরেছেন কিশোর।
তিনি লেখেন, “আমি এই মুহূর্তে আফিজের গ্রেপ্তার দাবি করছি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে বহু গুম ও নির্যাতনের ঘটনা বেরিয়ে আসবে বলে মনে করি।”
মেজর আফিজুরের নির্যাতনের ধরন সম্পর্কে তিনি বলেন, “মেজর আফিজুর চোখ বেঁধে মেরেছে। লাথি, ঘুষি, লাঠি দিয়ে পিটিয়েছে। ইলেকট্রিক চেয়ারে বসিয়ে হাত বেঁধেছিল।”
মেজর আফিজের ফরেনসিক স্কেচ সম্পর্কে তিনি বলেন, “আমি জামিন পাওয়ার পর আমার স্মৃতি থেকে নির্যাতনকারীদের ছবি এঁকেছিলাম। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্ট-এর (সিপেজে) কাছে এই স্কেচ জমা দিই। আমার আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়ার কাছে এই ছবি জমা দিয়েছি।”
কিশোর কার্টুনিস্ট আরেকজনের স্কেচ দিয়ে বলেন, “এই লোকটিও নির্যাতনকারী। তার মাথার মধ্যভাগে টাক ও বাকি অংশে কোকড়া চুল রয়েছে।”
কিশোরকে নির্যাতনের সময় সাংবাদিক তাসনিম খলিল, ব্লগার আসিফ মহিউদ্দীন সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়।
জিজ্ঞাসাবাদের সময় পদ্মা ব্যাংকের তৎকালীন চেয়ারম্যান নাফিজ সারাফাত সম্পর্কেও প্রশ্ন করেন তারা। তিনি নাফিজ সারাফাতকে কীভাবে চেনেন, কেন ওই ব্যক্তির কার্টুন এঁকেছেন- সে সম্পর্কে প্রশ্ন করা হয়।
কয়েক দফা জিজ্ঞাসাবাদের পর কিশোরকে র্যাবের কার্যালয়ে রেখে আসা হয়।
৬ মে কার্টুনিস্ট কিশোরকে রমনা থানায় সোর্পদ করা হয়। সেখানে তাদের সঙ্গে দেখা হয় রাষ্ট্র চিন্তার সদস্য দিদারুল ইসলাম ভূঁইয়ার সঙ্গে।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় কারাগারে থাকার পর ১০ মাস পর জামিন পান কার্টুনিস্ট কিশোর।