কুমিল্লা: হায়রে অভাগা দেশ! এ কোন দেশ দেখছি আমরা যেখানে বকুল গাছকে ‘আবর্জনার মতো লাগে’- এই কথা বলে কেটে ফেলা হচ্ছে!

এখন এমন এক অবস্থা হয়েছে দেশের অল্প বিদ্যা ভয়ঙ্করীরা তাদের মনে যা চাইছে তাই করছে, তাদের এই অল্প বিদ্যা দেশের জন্য ভয়ংকর হয়ে উঠেছে।

রাস্তার ডিভাইডারের উপরে সারি সারি বকুল ফুলের গাছ এক ধার্মিক ব্যক্তির কাছে আবর্জনার মতো লাগে বলে তিনি আধা কিলোমিটার পর্যন্ত যতো বকুল গাছ পেয়েছেন তা কেটে ফেলেছেন।

আচ্ছা এদের কাছে কি সকল সুন্দর জিনিসই দেখতে আবর্জনার মতো লাগে? কেন?

বকুল কিংবা জারুল, সৌন্দর্য হোক বা ভাষ্কর্য বা শৈল্পিক যে কোন নিদর্শন, তাদের চোখে আবর্জনা বা বেকার লাগে। কী অদ্ভুত দেশ!

এরা গান ভালবাসে না, ফুল ভালবাসে না, জীবকুলের প্রতি দয়া করে না; হত্যা করে; বুকের ভিতরে শুধু ঘৃণা, অশান্তি, অতৃপ্তি।

এরা সব কিছু ধ্বংস করতে চায়। এদের কাছে পৃথিবী অনিরাপদ। ১ মাসের কন্যাশিশু থেকে একটি পাখির ছানা কিংবা একটা গাছের চারাও এদের কাছে নিরাপদ নয়।

হায় রে কী কষ্টে বেঁচে আছে এই দেশের সংবেদনশীল মানুষগুলো!

অবশেষে নানান তালবাহানার পর গাছ খাদক মো. আজমির হোসেন (৩৭) কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার বেলতলী এলাকায় ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিভাজকে লাগানো অর্ধশতাধিক বকুলগাছ কেটে ফেলার ঘটনায় তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

এ ঘটনায় সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ থানায় মামলা করেছে।

জানা যায়, শনিবার রাতে বেলতলী এলাকায় অভিযান চালিয়ে আজমির হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ সেলিম।

আজ রোববার তাঁকে আদালতে পাঠানো হবে।

এই গাছ খাদক আজমিরের বাড়ি সদর দক্ষিণ উপজেলার সাওড়াতলী গ্রামে।

তবে তিনি বেলতলী এলাকায় উদ্বোধনের অপেক্ষায় থাকা ১০০ শয্যার শিশু হাসপাতালের ফটকের পাশে চা–বিস্কুট বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন।

তাঁর কাছে পৃথিবীর সকল সুন্দর জিনিস অসুন্দর লাগে। তাঁর এই নির্মমভাবে গাছ কাটা নিয়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার রাতেই পুলিশ মামলা নিয়ে আজমিরকে গ্রেপ্তার করে।

গত বুধবার আজমির হোসেন বলেছিলেন, বিভাজকের গাছগুলো তার চোখে ‘আবর্জনার মতো লাগে’ এবং ‘কোনো কাজে আসে না’, তাই তিনি কেটে ফেলেছেন।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *