গোপালগঞ্জ: গোপালগঞ্জের শান্তিপ্রিয়, মব বিরোধী জনগণকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ক্ষেপিয়ে তুলেছে জঙ্গী বাহিনী। গোপালগঞ্জবাসী বঙ্গবন্ধুর প্রশ্নে আপোষহীন।
এবং ১৬ জুলাই সেটা আবারো প্রমাণ করে দিয়েছে। বুক পেতে নিজের জীবন দিতে দ্বিধা করেনা গোপালগঞ্জের মানুষ। আওয়ামী লীগ এদের ধর্ম। বঙ্গবন্ধু তাদের দেবতা।
আর এই গোপালগঞ্জবাসীর উপর পুলিশ, সেনাবাহিনী নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে।
ফ্যাসিস্ট ইউনূস সরকার, তার বখে যাওয়া কিশোর গ্যাং বাহিনী কর্তৃক পূণ্যভূমি গোপালগঞ্জের সাধারণ মানুষ, ছাত্র, শ্রমিক, নারী এবং আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীদের উপর নির্বিচারে-নিষ্ঠুরভাবে গুলিবর্ষণের মাধ্যমে ১৮ জনকে হত্যা করেছে।
কয়েক শতাধিক আহত হওয়ার প্রতিবাদে এবং দেশধ্বংসকারী ইউনূসকে চিরতরে উৎখাত করার লক্ষ্যে আসন্ন ‘ যমুনা ঘেরাও ‘ কর্মসূচি বাস্তবায়নের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ, আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ এবং বাংলাদেশ ছাত্রলীগ নিম্নোক্ত কর্মসূচি ঘোষণা করছে-
১৭ জুলাই: দেশব্যাপী বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ
গোপালগঞ্জবাসীর ডাকা সকাল-সন্ধ্যা হরতাল সর্বাত্মকভাবে পালন
১৮ জুলাই: দেশব্যাপী শোক মিছিল, গায়েবানা জানাজা, শহিদের জন্য দোয়া এবং সকল ধর্মীয় উপাসনালয়ে প্রার্থনা
২০২৪ সালের রক্তাক্ত-নৃ্শংস-পরিকল্পিত জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডের ধারাবাহিকতার ঠিক এক বছর পর আবারও পরিকল্পিতভাবে আজ রক্ত ঝরানো হলো, মানুষ হত্যা করা হলো, মায়ের বুক খালি করা হলো।
গোপালগঞ্জে হত্যার শিকার হয়েছেন ছাত্রলীগ কর্মী দীপ্ত, রমজান, সোহেল, ইমন ও নাম না জানা আরও অনেকে।
‘প্রিয় মাতৃভূমিকে বিদেশীদের হাতে তুলে দেয়ার, জঙ্গিঘাটি বানানোর এবং যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত করার ইউনূসীয় ষড়যন্ত্র কোনভাবেই আমরা বাস্তবায়ন হতে দিবো না’।
‘আমরা ইউনূসকে হটিয়ে দিবো। গুঁড়িয়ে দিবো। বিজয় আমাদেরই হবে। প্রস্তুত করুন নিজেকে’।
গোপালগঞ্জ গণহত্যার প্রতিবাদে আওয়ামীলীগসহ অন্যদের যৌথ বিবৃতি ও কর্মসূচি ঘোষণা। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
গোপালগঞ্জে সংঘটিত নারকীয় হামলা ও বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়ে শেখ হাসিনার বিবৃতি:
বিবৃতিতে তিনি বলেন, গোটা দেশবাসী প্রত্যক্ষ করেছে, বাঙালির পবিত্র তীর্থভূমি বঙ্গবন্ধুর বাসভবন, মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্মারক যাদুঘর, জাতীয় পতাকা, জাতীয় সংগীত, পবিত্র সংবিধানকে বিগত ৫ আগস্টের পর থেকে কারা ক্ষত-বিক্ষত করেছে, কারা গণহত্যা, পুলিশ হত্যা, ধর্ষণ, ডাকাতি, ছিনতাই, রাহাজানি-সহ অসংখ্য মানুষের বাড়িঘর, অফিস,ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে ও ধ্বংস করেছে।
গণশত্রু খুনি-ফ্যাসিস্ট দেশবিরোধী, জঙ্গিবাদের পৃষ্ঠপোষক ইউনূস এবং তার মবসন্ত্রাসী তথা এনসিপির মাধ্যমে নব্য উত্থিত জঙ্গি-সন্ত্রাসীদের ৫ আগস্টের ধারাবাহিকতায় আবারও ‘মার্চ টু গোপালগঞ্জ’ কর্মসূচির নামে বাঙালির অস্তিত্বের ঠিকানা টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধি গুড়িয়ে দেওয়ার সব ধরনের প্রস্তুতিও দেশবাসী প্রত্যক্ষ করেছে।
বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ এক ও অবিচ্ছেদ্য। এই দুয়ের একটির উপরেও আঘাত আসলে বাঙালি জাতি বসে থাকবে না। আজও গোপালগঞ্জবাসী বসে থাকেনি।
বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধু রক্ষার সংগ্রামে গোপালগঞ্জবাসী শত প্রতিকূলতা, ঝঞ্ঝা, টিয়ারশেল, গুলি উপেক্ষা করেই তারা বঙ্গবন্ধুর সমাধি রক্ষা করেছে।
খুনি-ফ্যাসিস্ট ইউনূসের পেটোয়াবাহিনী গোপালগঞ্জের সাধারণ মানুষের উপর নির্বিচারে গুলি চালায়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলিতে কয়েকজন শহিদ হয়েছে, মারাত্মকভাবে আহত অসংখ্য মানুষ।
খুনি-ফ্যাসিস্ট ইউনূসের লেলিয়ে দেওয়া সরকারি বাহিনী ও সন্ত্রাসী গ্রুপের এ ধরনের ন্যক্কারজনক সন্ত্রাস মধ্যযুগীয় বর্বরতাকেও হার মানায়। আমি এ ধরনের নারকীয় হত্যাকাণ্ড ও স্টেট পেট্রোনাইজড সন্ত্রাসের তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও ধিক্কার জানাই।
তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, খুনি-ফ্যাসিস্ট ইউনূস গং এ ধরনের বর্বরতা, পৈশাচিকতা বাংলাদেশের জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার রুদ্ধ করতে পারবে না। দেশবিরোধী খুনি-ফ্যাসিস্ট ইউনূস গংদের দ্বারা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু, আমাদের সুমহান মুক্তিযুদ্ধ ও অস্তিত্ব বিনষ্ট এবং ধ্বংসাত্মক অপকর্মের কারণে দেশবাসী সংক্ষুব্ধ।
এদের দেশধ্বংসের সকল অপকার্যক্রম রুখে দিতে বাংলার জনগণ আজ সংঘবদ্ধ, চেতনায় শাণিত। জনতার শক্তি অপ্রতিরোধ্য ও অপ্রাজেয়।
বাংলাদেশের জনগণ একবার মুখে যা এনেছে, তা বাস্তবায়ন করে ছেড়েছে। দেশবাসীর কাছে আহ্বান, খুনি-ফ্যাসিস্ট গণশত্রু ইউনূসের বাংলাদেশ ধ্বংসের সকল অপতৎপরতা রুখে দিতে প্রগতিশীল-গণতান্ত্রিক আধুনিক-অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে মবসন্ত্রাসের জনক খুনি-ফ্যাসিস্ট ইউনূসের অপশাসনের দেয়ালে পদাঘাত করুণ, বাংলাদেশ রক্ষা করুন।
বীর প্রসবিনী গোপালগঞ্জের বীর জনতা ইউনূসের বিরুদ্ধে এই প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য তাদের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা নিহত শহিদদের পবিত্র আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনদের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন এবং আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন।