ঢাকা: আফগানিস্তানে কী করেছিল তালিবানরা? ঘরে ঘরে গিয়ে বাদ্যযন্ত্র ভেঙ্গে ফেলেছিল! তারা গান বাজনা সহ্য করবে না জানিয়ে দিয়েছিল।

বাংলাদেশেও তালিবানি শাসন শুরু হয়ে গেছে। গান বাজনার সব যন্ত্রপাতি ভেঙে ফেলছে। তারা এদেশে নাচ গান সহ্য করবে না।

অথচ নবীর দেশ বলা হয় সৌদি আরবকে, সৌদি আরবেও নিজ ভূখণ্ডে প্রকাশ্যে মদ (অ্যালকোহল) পানের অনুমোদন দিয়েছে।

রাজনৈতিক কৌশলে এখন আর সৌদির উদাহরণ টানে না বাংলাদেশের তালিবানরা।

তালিবানি রাজত্বে প্রায় সব ধরনেরই সুর শিক্ষা নিষিদ্ধ। প্রায় সমস্ত ধরনের গান-বাজনার চর্চায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল তাদের শাসনকালের প্রথম পর্বে।

প্রথম প্রথম অবশ্য তারা বলেছিলো, মেয়েদের স্কুল-কলেজে পড়তে দেবে। শরিয়ত আইন মানলে বাধা থাকবে না কর্মক্ষেত্রেও।

কিন্তু বাস্তবে যতখানি মেয়েদের বস্তাবন্দি করা যায়, ততখানি করেছে। গৃহবন্দিই শিল্পীরা, বিশেষত মহিলারা।

১৯৯৬ থেকে ২০০১ কালপর্বের স্মৃতি ঘেঁটে আফগান শিল্পীরা বলেছেন, আবার ফিরে আসতে চলেছে অন্ধকার যুগ।

বাংলাদেশও ঠিক সেই পথে হাঁটছে। শুটিং এর জন্য রাস্তা জ্যাম হলে তার প্রতিকার করা উচিৎ, শুটিং বন্ধ করা নয়।

রোগ হলে ওষুধ দেয়া হয়, রোগীকে মেরে ফেলা হয় না। বাংলাদেশে রোগীকেই মেরে ফেলছে মৌলবাদ গোষ্ঠী।

উত্তরায় সিনেমা–নাটকের শুটিং বন্ধে চিঠি দেয়া হয়েছে। শিল্পীরা ক্ষোভ উগড়ে দিচ্ছেন।

কিন্তু এই ক্ষোভে কিছুই হবে না। দেশ এক পা রেখে দিয়েছে তালিবানি শাসনে।

ঢাকার উত্তরা সেক্টর-৪-এ অবস্থিত শুটিং হাউসগুলোতে সিনেমা–নাটকের শুটিং বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে স্থানীয় কল্যাণ সমিতি।

২০ জুলাই সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত চিঠিতে হাউস মালিকদের বলা হয়েছে, শুটিংয়ের কারণে রাস্তায় ভিড়, যান চলাচলে বিঘ্ন এবং বাসিন্দাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় সমস্যা হচ্ছে।

চিঠিতে আরও বলা হয়, আবাসিক এলাকায় বাণিজ্যিক কার্যক্রম নীতিমালার পরিপন্থী এবং পরিবেশ ও সুনাম রক্ষায় হাউস মালিকদের দায়িত্বশীল ভূমিকা আশা করা হয়।

উত্তরা সেক্টর-৪–এ তিনটি প্রধান শুটিং হাউস রয়েছে: লাবণী-৪, লাবণী-৫, আপনঘর-২।

এই হাউসগুলোর একটি, লাবণী-৪-এর মালিক আসলাম হোসাইন সংবাদমাধ্যমকে জানিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

তিনি বলেন, ‘২৫ বছর ধরে ব্যবসা করছি, কেউ কখনো অভিযোগ করেনি। এখন হঠাৎ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। ডিরেক্টর গিল্ডকে জানিয়েছি। আশা করি পাশে পাব।’

অভিনেতা ও ডিরেক্টর গিল্ড সভাপতি শহীদুজ্জামান সেলিম বলেন, ‘একটা ধারাবাহিক নাটকের অনেক কন্টিনিউটি থাকে। হঠাৎ করেই বন্ধ বলা যায় না। আমরা প্রতিবাদ জানিয়েছি, আজই চিঠি পাঠাব।’

নির্মাতা মাহমুদ দিদার বলেন, ‘উত্তরায় অনেক বছর ধরে শুটিং হয়। এখন বলা হচ্ছে বন্ধ করতে। মনে হচ্ছে শুটিং কালচারই উঠে যাবে’।

নির্মাতা তপু খান বলেন, ‘শিল্প-সংস্কৃতি বিকাশে বাধা এই সিদ্ধান্ত। আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হোক।’

অভিনেতা ও অভিনয়শিল্পী সংঘ সাবেক সাধারণ সম্পাদক রওনক হাসান বলেন, ‘অফিস, স্কুল, ব্যবসা সব হয় আবাসিকে। শুধু শুটিং নিয়ে সমস্যা? আগেও সমাধান হয়েছে। এবারও তা-ই হবে আশা করি।’

আসলে সমাধান এখন কেউ চায় না, গান , বাজনা, শুটিং , বিনোদন সব শেষ করা হবে। এখন শুধু হবে ধর্ম। ধর্ম তো নয়, ধর্মের মোড়কে ব্যবসা। মেয়েদের বস্তাবন্দি করা।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *