খাগড়াছড়ি: খাগড়াছড়িতে ছড়িয়ে পড়েছে উত্তেজনা। স্কুলছাত্রী ধর্ষণের প্রতিবাদে ডাকা সড়ক অবরোধকে কেন্দ্র করে খাগড়াছড়িতে আগুন জ্বলছে।

শনিবার দুপুর থেকে জেলা সদরের বিভিন্ন এলাকায় অবরোধ সমর্থক ও ‘সেটেলারদের’ মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

পুলিশ লাঠিচার্জ ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে খাগড়াছড়ি পৌরসভা, সদর উপজেলা ও গুইমারা উপজেলায় অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন।

খাগড়াছড়িতে সাম্প্রদায়িক সহিংস ঘটনায় পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি’ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এবং সকলকে শান্ত থাকার আহ্বান জানানো হচ্ছে।

লিখেছে, গত ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ইং খাগড়াছড়ির সিঙ্গিনালা এলাকার অষ্টম শ্রেণী পড়ুয়া এক জুম্ম কিশোরীকে গণ ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত ধর্ষকদের গ্রেফতারপূর্বক সর্বোচ্চ শাস্তির দাবীতে “জুম্ম ছাত্র জনতা’র” সমাবেশ থেকে অদ্য ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ইং সকাল-সন্ধ্যা অবরোধ কর্মসূচী ডাকা হয়।

পূর্বনির্ধারিত অবরোধ কর্মসূচী চলাকালে পিকেটারদের সাথে একদল বাঙ্গালির পাল্টাপাল্টি হামলা হয়। এ ঘটনাটি এক পর্যায়ে খাগড়াছড়ি পৌর শহরে ছড়িয়ে পড়লে জুম্ম ও বাঙ্গালিদের মধ্যকার ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

ঘটনা এক পর্যায়ে সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় রূপ নেয়। এতে উত্তেজিত বাঙ্গালিরা মহাজনপাড়া ও খেজুরবাগানে জুম্মদের দোকানপাট ভাংচুর করার চেষ্টা চালায় এবং উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন যুবক গুরুতর আহত হয়।

পরে পরিস্থিতি অবনতির লক্ষণ দেখা দিলে খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করে। এর পরপর পুলিশ, বিজিবি ও সেনাবাহিনী মাঠে নেমে উত্তেজিত পাহাড়ি ও বাঙ্গালিকে রাস্তা থেকে ছড়িয়ে দেয়।

পরিস্থিতি কিছু সময়ের জন্য শান্ত হলেও সন্ধ্যা ৭.০০ ঘটিকা সময়ে আবারও য়ংড বৌদ্ধ বিহারের পাশে জুম্ম ও বাঙ্গালিদের মধ্যকার ইট পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে এবং এক পর্যায়ে বাঙ্গালিদের ধারালো দা’য়ের কোপে দুই জুম্ম যুবক গুরুতর জখম হয়। তাদেরকে রক্তাক্ত অবস্থায় খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

পার্বত্য চট্টগ্রামে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত ধর্ষকদের গ্রেফতার পূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়ায় বারবার ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে এবং অপরাধীরা ঘটনা ঘটিয়ে নিরাপদে পার পেয়ে যাচ্ছে।

সেজন্য পাহাড়ে এযাবৎ যতগুলো ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে সেসব ঘটনায় অভিযুক্ত ধর্ষকদেরসহ সম্প্রতি সিঙ্গিনালায় সংঘটিত ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত ধর্ষকদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি জোর দাবী জানাচ্ছে।

একই সাথে সাম্প্রদায়িক সহিংস ঘটনার তীব্র নিন্দা জ্ঞাপনসহ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে। সেই সাথে অনুরুপ সহিংস সাম্প্রদায়িক ঘটনা যাহাতে পুনরাবৃত্তি না ঘটে তজ্জন্য প্রশাসনের যথাযথ সুদৃষ্টি কামনা করছে।

দেশের চলমান বাস্তবতা এবং পবিত্র শারদীয় দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে জুম্ম ও বাঙ্গালিদের মধ্যেকার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে উভয় পক্ষকে শান্ত, সর্বোচ্চ ধৈর্য এবং সংযম প্রদর্শন করার জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছে।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *