ঢাকা: বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে জেলে থেকেও আসামি হচ্ছেন সাংবাদিক! বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন কেন্দ্রিক রাজধানীর ভাটারা থানার মো. জাহাঙ্গীর হত্যা মামলায় আওয়ামী লীগের কদমতলী উপজেলার সদস্য এবং দৈনিক সরেজমিন বার্তার সাংবাদিক সিকদার লিটনকে গ্রেফতার দেখিয়েছেন আদালত।

তবে জেলে থেকে তিনি কীভাবে আসামি হলেন এই প্রশ্ন করেন।

গ্রেফতার শুনানিতে লিটন বলেছেন, ‘গত বছরের অক্টোবরের ৪ তারিখে জেল থেকে মুক্তি পাই। আন্দোলনের ৩ মাস পর আমি জেল থেকে মুক্তি পেয়েছি। জেলে থেকে আমি কীভাবে আসামি হলাম?’

তিনি জোরালোভাবে প্রশ্ন তোলেন- ‘আমি একজন সাংবাদিক। সাইবার সিকিউরিটি আইনে আমি জেলে গিয়েছি। জেলে থেকেও কেন আমি আসামি?’

তিনি বলেন, ‘মাননীয় বিচারক আমার আইনজীবী নেই। আমার কথা শুনুন।’ ‘২০২০ সালে শেখ হাসিনার বেয়াই খন্দকার মোশাররফের বিরুদ্ধে নিউজ করেছি। এরপর থেকে আমার বিরুদ্ধে ২৬টা মামলা হয়েছে। গত বছরের অক্টোবরের ৪ তারিখ জেল থেকে মুক্তি পাই। আন্দোলনের ৩ মাস পর আমি জেল থেকে মুক্তি পেয়েছি। জেলে থেকে আমি কীভাবে আসামি হলাম?’

উল্লেখযোগ্য যে, বাংলাদেশে সাংবাদিকদের উপর নির্যাতন ,নিপীড়ন, গ্রেফতার, মিথ্যা হত্যা মামলা, ব্যাংক হিসাব জব্দ করা, নানা ধরনের হয়রানি, সাংবাদিকদের চাকরিচ্যুত করা ,গণমাধ্যমের কন্ঠরোধ চলছেই।

সাংবাদিকের কাজই প্রশ্ন করা ,সেই প্রশ্ন উত্থাপনের জন্য কোন প্রতিষ্ঠান তার কর্মীকে চাকরী থেকে ছাঁটাই করেছে, পৃথিবীর ইতিহাসে এমন ঘটনা বিরল। এই সরকারের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে এইসব ঘটনা ঘটছে। সংবাদপত্র এবং সাংবাদিকদের রাজনৈতিক পক্ষপাত পৃথিবীর সব দেশেই আছে। কিন্ত বাংলাদেশে গত ৮ মাসে ২৯৬ জন সাংবাদিককে অভিযুক্ত করা,৫০ টি মিডিয়া ও প্রেস অফিসে হামলা,৬০০ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা,৬ জন ,সাংবাদিক নিহত, ১৮ জন সাংবাদিক গ্রেপ্তার,১০০ এর অধিক সাংবাদিক আহত হয়েছেন ১০০০ এর অধিক সাংবাদিককে বরখাস্ত/পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছে ,৯৬ জন সাংবাদিকের আর্থিক বিবরণী চাওয়া হয়েছে ,১৬৮ জন সাংবাদিকের প্রেস স্বীকৃতি বাতিল,১৮ জন সাংবাদিকদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ,৮৩ জন সাংবাদিকের প্রেস ক্লাবের সদস্যপদ বাতিল করা হয়েছে এবং বেশিরভাগ মিডিয়া হাউসের মালিকানা জোরপূর্বক কেড়ে নেওয়া সহ নানা নির্যাতনের শিকার হচ্ছে বাংলাদেশের গণমাধ্যম বলে তথ্য পাওয়া গেছে।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *