ঢাকা: কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বঙ্গবীর আব্দুল কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম বলেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর কাছে মায়ের মতো শ্রদ্ধার পাত্রী।

তিনি বলেন, পৃথিবীতে আমার মায়ের চাইতে কোনো সম্মানী ব্যক্তি নাই আমার কাছে। কেউ না।

আমার বড় দুই ভাইবোন মারা গেছেন। আমার ছোট সন্তানের মতো তিনজন বোন আছে। কিন্তু আমার কোনো বড় বোন ছিল না। তাঁর অভাব ছিল।

শনিবার (১৫ নভেম্বর) ‘চিঠি’ নামের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত এক ভিডিওতে কথাগুলো বলেন তিনি।

বঙ্গবীর আব্দুল কাদের সিদ্দিকী বলেন, জন্মদিনে এখন যা দেখা যায়, তাতে শেখ হাসিনা তিন চার মাসের ছোট আমার থেকে। আমি তাকে না হলেও শতবার পায়ে হাত দিয়ে সালাম করেছি। সেটা রাজদরবার, না জনপথ, না গৃহ- আমি এগুলোকে বিবেচনা করিনি।

আমি কখনো এটাকে বিবেচনা করে পা ফেলি না। তো শেখ হাসিনার সঙ্গে আমার সম্পর্কের কোনো দূরত্ব নেই। আমার ভাইবোনদেরকে আমি যেভাবে ভালোবাসি, তাকেও আমি সেভাবে ভালোবাসি। এখনো, এখনো। তিনি বলেন, তার সঙ্গে আমার দূরত্ব তাঁর কর্মকাণ্ডের।

তিনি এই কথাও বলেন, তাঁর বহু কর্মকাণ্ডকে আমি সমর্থন করি না। তিনি যখন দেশের সরকার প্রধান হয়েছেন, আমি মনে করি সবার জন্য তাঁর দায়িত্ব আছে। এমনকি চোরের জন্যও তাঁর দায়িত্ব আছে। সেটা বোধহয় উনি ওইভাবে গুরুত্বের সঙ্গে উপলব্ধি করেননি। এটাতে আমার কাছে দূরত্ব আছে।

শেখ হাসিনা বক্তৃতা করতে শুরু করলেই বিএনপি, জামায়াত এবং অন্যান্য বলেছেন। তার এ ধারণাতেও আমার দূরত্ব আছে। বিরোধী দল সবসময় চেষ্টা করবেন সরকারকে অজনপ্রিয় করা। সেটাই তাঁদের পবিত্র দায়িত্ব। সেই দায়িত্ব পালনে সরকারি দল বা সরকার অন্যায়ভাবে কোনো বাধা দিতে পারবে না। ন্যায়ত যতটুকু করার তার বাইরে যেতে পারবেন না। এটা আমার দূরত্ব আছে।

আমি অনেকবার শেখ হাসিনাকে বলার চেষ্টা করেছি এবং সামনাসামনি বলেছি যে আপনি ৬ মাস শুধু ‘বিএনপি-জামায়াত’ এই কথাগুলো বক্তৃতায় দাঁড়িয়ে বাদ দেন। দেখবেন, উনাদের না হলেও ১০ শতাংশ জনপ্রিয়তা কমবে। অযৌক্তিক কথা সাধারণ মানুষ মানতে চায় না। এটাতে নিশ্চয়ই আমার উনার সঙ্গে দূরত্ব আছে।

শেখ হাসিনার সঙ্গে ব্যক্তিজীবনে আমার কোনো দূরত্ব নাই। আমি আগেও তাকে মায়ের মতো সম্মান করেছি। এখনো করি। তাকে দেশ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে যে যে অভিযোগ আসবে, আইনত এর প্রতিকার করতে হবে।

প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে। আমি সেটাকে সমর্থন করব। কিন্তু তিনি আইনের ঊর্ধ্বে- এটাকে আমি মানব না। আবার যারা আছেন, তাকে আইন ছাড়াই তার বিচার করবেন। এটাকেও সমর্থন করব না। এখন যারা বলেন, শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছে। ব্যাকরণগত দিক থেকে এটাকে আমি মানি না।

শেখ হাসিনা পালায়নি। শেখ হাসিনাকে রাষ্ট্রীয়ভাবে এখান থেকে ভারতে পাঠানো হয়েছে। ভারত তাকে গ্রহণ করেছে। তিনি পালিয়ে গেলে অন্য একটি হেলিকপ্টারে যেতেন। বুঝতাম, তিনি একটি যাত্রীবাহী বিমানে যেতেন। বলা যেত, পালিয়ে গেছেন। তিনি সেনাবাহিনীর, বিমান বাহিনীর বিমানে গেছেন এবং ভারতে গিয়ে বিমান ঘাঁটিতে নেমেছেন।

উনি যাত্রীবাহী বিমান বন্দরে নামেননি। উনি সামরিক বিমান ঘাঁটিতে নেমেছেন। তাই উনি পালিয়ে যাননি।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *