ঢাকা: প্রফেসর ইউনূস বলেন না এই দেশে হিন্দু মুসলমান সব সমান? তা কতটুকু সমান তার প্রমাণ তো দেখছি প্রতি পদে পদে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে এবার কালীপূজা হতে দেওয়া হবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন দুটো কারণ তুলে ধরেন এই সিদ্ধান্তের।

প্রথমতঃ তারা পূজাকালীন নিরাপত্তার দায়িত্ব নিতে পারবেন না।

তাহলে তাঁরা স্বীকার করে নিচ্ছেন মৌলবাদী মুসলমানরা প্রতিমা ভাঙচুর করে। হাওয়ায় প্রতিমা ভাঙে না।

দ্বিতীয় কারণ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সম্মানিত প্রক্টর দাবী করেছেন যে কালীপূজা উত্তরভারতীয় সংস্কৃতি তাই বিশ্ববিদ্যালয়ে কালীপূজা হতে দেওয়া হবে না।

এখন সনাতনী শিক্ষার্থীরা যদি তাঁকে এর পালটা জবাব দিতো, তখন অবশ্য ধর্মীয় অনুভূতির প্রশ্ন আসতো।

এই দেশে সনাতনীদের জন্য অনুভূতিতে আঘাতের বিষয়টা থাকতে নেই, থাকলে এতোক্ষণে তাঁর বিরুদ্ধে অবশ্যই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ব্যবস্থা নিতো।

পড়ুয়াদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রথমে অনুমতি দিয়েও তা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষ কর্তৃপক্ষ অনুমতি দিতে রাজি নন। ‌কর্তৃপক্ষের দাবি, ক্যাম্পাসে কালীপুজোর অনুমতি দিলে আইনশৃংঙ্খলার সমস্যা দেখা দিতে পারে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের হিন্দু ছাত্ররা কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তকে ধর্মীয় স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ ও আঘাত বলে অভিযোগ তুলেছে।‌

জাতীয়তাবাদী ছাত্র দল, ছাত্র অধিকার পরিষদ, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ এবং সোশ্যালিস্ট স্টুডেন্টস ফ্রন্ট হিন্দু পড়ুয়াদের কালীপুজো করার দাবি সমর্থন করেছে।

হিন্দু সম্প্রদায়ের ছাত্ররা বৃহস্পতিবার ক্যাম্পাসে সভা ও মিছিলও করেছেএই নিয়ে। ‌ তারপর কর্তৃপক্ষের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করে তারা কালীপুজো করার অনুমতি চেয়েছে।

পড়ুয়াদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর তাজমুল হক তাঁদের বলেছেন, কালীপুজো একটি উত্তর ভারতীয় পুজো।‌ পড়ুয়ারা উপাচার্য রেজাউল করিমের সঙ্গে দেখা করেছেন।

ছাত্রদের দাবি উপাচার্য বলেছেন, নতুন করে কোন ধর্মীয় উৎসব, পুজো ইত্যাদির অনুমতি দেওয়া হবে না।‌
সনাতন বিদ্যার্থী সংসদের সভাপতি সুমন কুমার দাস অভিযোগ করেন, ‌ক্যাম্পাসে তারা একটি মন্দির প্রতিষ্ঠা করতে চাইছেন। ‌ সেই অনুমতি ও কর্তৃপক্ষ দিচ্ছে না। ‌

উল্লেখযোগ্য যে, এই বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ২০১৯ সালের পূর্বে প্রতিবছরই কালীপূজা হতো, তারপর করোনা মহামারির সময় বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর এই বছর শিক্ষার্থীরা পুনরায় তা শুরু করার প্রয়াস করেছিলো। তবে তাতে বাদ সেধেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন!

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *