দিনাজপুর: বাংলাদেশ কি আবার মন্বন্তরে ফিরছে? এ যে বড় কঠিন সময়!

সংস্কারের গল্প শোনাচ্ছেন মহাজন, এদিকে মানুষ আবর্জনায় পড়ে মরছে, অনাহারে, অবহেলায়! এই তো সংস্কার!

দিনাজপুরের হিলির এক আবর্জনার স্তূপ থেকে উঠে এলো দেশের নির্মম ও কঠিন বাস্তবতা। আবর্জনার ভিড়ে অনাহারে শীর্ণ এক অজ্ঞাত ব্যক্তির মৃতদেহ পড়ে থাকার দৃশ্যটি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে, ইউনূসের সংস্কারের প্রতিশ্রুতির নিচে চাপা পড়ে যাচ্ছে প্রান্তিক মানুষের বেঁচে থাকার আর্তনাদ।

ক্ষুধার এক নির্মম ছবি! ভীষণ বিকট, মর্মান্তিক ছবিটি দেখে কাঁদছে দেশ!

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে দেখা যায়—বড় চুল, অগোছালো দাড়ি, ছেঁড়া কাপড়, গায়ে ময়লায় ভর্তি এক কঙ্কালসার দেহ পড়ে আছে মাটিতে।

চারপাশে ছড়ানো আবর্জনা, প্লাস্টিক, শুকনো পাতা আর খাবারের মোড়ক। যেন মানুষ নয়, সমাজের ফেলে দেওয়া এক অবহেলিত দেহ। এই দৃশ্য দেখে অনেকেই শিউরে উঠেছেন।

আহারে! এ কোন বাংলার ছবি? আমরা কি সত্যিই এগোচ্ছি, নাকি ফিরে যাচ্ছি ইতিহাসের অন্ধকারে? যেখানে এখন একজনের আহার জুটছে না ঠিকমতো।

মনে আছে আপনাদের নিশ্চয়ই, ভুলে যাবার কথাও নয়, মন্বন্তরের ভয়াল স্মৃতি!

এই ছবি মনে করিয়ে দেয় বাংলার ভয়াবহ মন্বন্তরের কথা। ১৭৭০ সালে দুর্ভিক্ষে প্রায় এক কোটি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।

ভাত নয়, একটু ফ্যানের জন্য মানুষ ঘুরে বেড়াতো। ফ্যান দাও, ফ্যান দাও চিৎকার কেবল চারদিকে।

এই দৃশ্য দেখে ২৫৫ বছর আগের সেই ইতিহাস যেন ফের জেগে উঠেছে। এ কার ব্যর্থতা? দেশ কবে বুঝবে?

অর্থনীতিবিদ ড. খালেদ হাসান মন্তব্য করেন, “এটি বিচ্ছিন্ন কোনো দুর্ঘটনা নয়, এটি আমাদের অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনার একটি অবশ্যম্ভাবী পরিণতি।

যখন দেশে বিনিয়োগের পরিবেশ থাকে না, যখন প্রতিহিংসার রাজনীতিতে ব্যবসা-বাণিজ্য ধ্বংস হয়, তখন কর্মসংস্থান সংকুচিত হয়। এর প্রথম শিকার হয় সমাজের সবচেয়ে প্রান্তিক মানুষগুলো।

সরকার ‘সংস্কার’-এর কথা বলছে, কিন্তু অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারলে সেই সংস্কার অর্থহীন। এই মৃতদেহটি আমাদের নীতি নির্ধারকদের জন্য একটি অশনি সংকেত।”

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *