ঢাকা: রাজাকার, জামাত শিবিরের তাণ্ডবে এই দেশে কেউ এখন চুলও বড় রাখতে পারবে না? কেউ ফকির হয়ে, গৃহত্যাগী হয়ে ঘুরতেও পারবে না।

লম্বা চুল দাড়ির মানুষগুলো অতীতেও হেঁটে বেড়াতো স্বাধীনভাবে। কেউ কিছু বলতো না। সবার স্বাধীনতা আছে এই দেশে।

কিন্তু ইদানিং সব নাটক শুরু হয়েছে। ইদানিং বলতে বিগত এক বছরে বেশি হয়েছে। জোর করে ধরে নিয়ে তাদের চুল দাড়ি কেটে দেওয়া হচ্ছে। মাজারে আগুন দেওয়া, লাশ তুলে পুড়িয়ে দেওয়া হয় এখন।

এই সব ভয়াবহ কান্ড কবে বন্ধ হবে?
ইসলাম ও সুফিজম (তাসাউফ) একই সঙ্গে আছে এই দেশে। সুফি সাধক, দরবেশ, ফকির ও আউলিয়াদের হাত ধরে ইসলাম এখানে এসেছিল। যার যার বিশ্বাস তার তার কাছে।

তাঁদের জীবনাচার, আধ্যাত্মিক বিশ্বাসে এইভাবে হস্তক্ষেপ করার মানে কী?

কে এই উগ্রবাদী ,রাজাকারকে অনুমতি দিচ্ছে রাস্তার পাগলদের ধরে মাথার চুল,দাড়ি কেটে দিতে?

অন্যান্য দেশে এই অনিয়ম করা হয় না।ইসলামে জোর পূর্বক করে কোন কাজ করা অন্যায়! এরা তাহলে মুসলমান কীভাবে?

মানুষের ইচ্ছাকে পদদলিত করে, ধর্মের নামে বলপূর্বক কারো চুল-দাড়ি কেটে দেওয়া কোনো সেবা নয় — এটা নির্লজ্জ আগ্রাসন! এক বৃদ্ধ মানুষকে চারদিক থেকে চেপে ধরে মাথার চুল কেটে দেওয়া মানবতা নয়, এটা জুলুম।

আর শুধু চুল কেটে দিয়ে দায়িত্ব শেষ হবে না — তার খাবার, চিকিৎসা, বাসস্থান, জীবনযাত্রার সব দায়িত্বও নিতে হবে।

নইলে এটা স্রেফ নিজের ইচ্ছা চাপিয়ে দেওয়া আর মানুষের স্বাধীনতা হরণ ছাড়া আর কিছুই নয়।

মানবিক সেবা কখনো জোর করে হয় না। সেবা মানে সম্মান, ভালোবাসা আর মর্যাদা। সেগুলো কী করা হচ্ছে?

তবে এই ধরনের পৈশাচিক ঘটনা গত কিছু মাস নিয়মিতভাবেই হচ্ছে। গত বছর ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর এর মাত্রা বেড়ে গেছে। এর অন্ত কোথায়?

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটা ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে, সাধুর মতো দেখতে যাঁদের অনেকে পাগলও বলে থাকে, এমন একজন বয়স্ক ব্যক্তিকে তিনজন লোক ধরে চুল কেটে দিচ্ছেন জোর করে।

সাধু মানুষটি অনেকক্ষণ চেষ্টা করলেন নিজেকে ছাড়িয়ে নেয়ার জন্য।

ওই তিনজন লোক কারা? ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, তাঁরা পোশাক-আশাকে চেহারা-সুরতে ইসলাম বেশধারী।

তাঁদের সঙ্গে শক্তিতে কুলিয়ে উঠতে পারলেন না বয়স্ক লোকটি। যেভাবে জোর করে ধরে তাঁর চুল-দাড়ি কেটে দেওয়া হলো, সেই দৃশ্য দেখে জনগণ সহ্য করতে পারছে না।

ভুক্তভোগী মানুষটি শেষ দিকে বারবার বলছিলেন, ‘আল্লাহ তুই দেহিস।’

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *