ঢাকা: মুক্তিযুদ্ধ করে, দেশকে স্বাধীন করে মনে হয় অন্যায় করেছিলেন মুক্তিযোদ্ধারা। তার খেসারত এখন দিতে হচ্ছে।
তথাকথিত জুলাই ষড়যন্ত্রের অভ্যুত্থান হয়েছে আর বাংলাদেশের দশদিকে ক্ষতি। স্বামীর কবরে শায়িত বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিয়া চৌধুরী, পেলেন না রাষ্ট্রীয় সম্মাননা, বীর মুক্তিযোদ্ধা মঈনুদ্দীন খান বাদলের কবরে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করেছে জুলাই যোদ্ধারা।
কুমিল্লায় মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা পরিয়ে জামায়াত শিবিরের নগ্ন উল্লাস দেখা গিয়েছে।
আর ধর্ষক জেল থেকে বেরোলে তাকে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করা হয়েছে। এই হচ্ছে আজকের বাংলাদেশের পরিস্থিতি।
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও ভোলা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য তোফায়েল আহমেদের মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াশা ও দেশের মূলধারার পত্রিকাগুলো এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশ না করার অভিযোগ তুলে জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মাসুদ কামাল বলেছেন, তোফায়েল আহমেদ কোথায় আছেন? বেঁচে আছেন? না কি মরে গেছেন?- খবরটা নিয়ে কেন এত আলোচনা হচ্ছে? আলোচনাটা হচ্ছে এই কারণে- এর আগে গত এক সপ্তাহের মধ্যে সাবেক শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন মারা গেছেন।
উনার মৃত্যুটা কিভাবে হয়েছে, আপনারা সবাই দেখেছেন। সেটাও কিন্তু খুব একটা গুরুত্ব পায়নি। উনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন।
এখন আমাদের দেশের বাস্তবতাটা এমন দাঁড়িয়েছে, ‘মুক্তিযোদ্ধা’ কথাটা বলতেও লোকে ভয় পায়। আমি যে মুক্তিযোদ্ধা ছিলাম, তাহলে কি আমি অপরাধ করেছি? যিনি আল বদর ছিলেন, তিনি বুক ফুলিয়ে বলেন, আমি আল বদর ছিলাম। কোনো সমস্যা নাই। কিন্তু যিনি মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন, উনি ভয় পান।
যিনি রাজাকার ছিলেন, উনি বুক ফুলিয়ে বলেন, আমি রাজাকার ছিলাম। কিন্তু যিনি মুক্তিযোদ্ধার কমান্ডার ছিলেন, উনি বলতে ভয় পান, আমি মুক্তিযোদ্ধার কমান্ডার ছিলাম। এই বাস্তবতা এই দেশে কে তৈরি করেছে?
দেশটা যারা স্বাধীন করল, তাদের ব্যাপারে এরকম নেগেটিভ কথাবার্তা বলার যে মানসিকতাটা- এটা কী করে দেশে তৈরি হলো? এই প্রশ্নের মুখোমুখি একদিন দায়িত্বপ্রাপ্ত যারা আছেন, তাদেরকে হতে হবে।
শনিবার (৪ অক্টোবর) ‘কথা’ নামের নিজের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত এক ভিডিওতে এসব কথা বলেন তিনি।
মাসুদ কামাল বলেন, নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূনের বাড়ি নরসিংদী। উনি মারা গেছেন। উনি শিল্পমন্ত্রী ছিলেন। উনি কীভাবে মারা গেলেন? কেউ জিজ্ঞাসা করেছেন? মৃত্যুর সময় আমরা একটা ছবি দেখলাম, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বেডে, কোনো কেবিনে নয়। একটা অপরিচ্ছন্ন বিছানার উপর উনি পড়ে আছেন।
পাশে একটা আধা-খাওয়া পানির বোতল এবং উনার হাতে হাতকড়া। যার হাতে হাতে হাতকড়া, তিনি মৃত। মৃত মানুষের হাতে হাতকড়া, কেউ দেখেছেন কখনো?
এই জীবনে আমরা দেখলাম। উনার কী হয়েছিল? জানেন কেউ? উনি অসুস্থ হয়ে মারা গেছেন, কী রোগ হয়েছিল উনার? কেউ জানেন? জাস্ট এই সময় যে রোগটা হচ্ছে প্রচন্ডভাবে, ডেঙ্গু রোগ হয়েছিল।
