সিরাজগঞ্জ: সভ্যতা, বাঙালি সংস্কৃতির উপর আঘাত আসছে বাংলাদেশে। কিন্তু প্রতিবাদ নেই, প্রশাসন চুপ, সরকার তো চুপ -ই।

এবার সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাছারি বাড়িতে হামলা, ভাঙচুরের ঘটনার পর অনির্দিষ্টকালের জন্য দর্শনার্থী প্রবেশ বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।

আজ বুধবার সকালে কাছারি বাড়ির মূল ফটকে বন্ধের নোটিশ ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।

নোটিশে লেখা ‘এতদ্বারা সকল দর্শনার্থীদের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, অনিবার্য কারণবশত রবীন্দ্র কাছারি বাড়ি, শাহজাদপুর অনির্দিষ্টকালের জন্য সকলের পরিদর্শনের জন্য বন্ধ থাকবে।

দর্শনার্থীদের সাময়িক অসুবিধার জন্য আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত।’

এখন যদি এই কাছাড়ি বাড়ি আর না খোলে , তবুও এর প্রতিবাদে এগিয়ে আসার কেউ নেই।

হয়তো এই সুযোগে বন্ধই করে দেয়া হয়েছে!

সভ্যতার লজ্জা এটি। ভাঙচুর রবীন্দ্রস্মৃতি, শাজাদপুর কাছারি বাড়ি।

উল্লেখযোগ্য যে, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলায় রবীন্দ্র কাছারিবাড়ি। ইন্দো-ইউরোপীয় স্থাপত্যশৈলীতে নির্মাণ করা দোতলা ভবনটি এখন পরিচিত রবীন্দ্র স্মৃতি জাদুঘর নামে।

১৮৪০ সালে শাহজাদপুরের জমিদারি কিনে নেন কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পিতামহ প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর।

জমিদারির সঙ্গে তাদের মালিকানায় আসে কাছারি বাড়িটিও। শাহজাদপুর জমিদারি দেখাশোনার কাজে মাঝেমধ্যে এই বাড়িতে আসতেন রবীন্দ্রনাথ। ১৯৬৯ সালে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর বাড়িটিকে সংরক্ষিত পুরাকীর্তি হিসেবে ঘোষণা করে।

আসলে এই দেশে বাঙালি সংস্কৃতির উপর বারবার আঘাত হেনে আরবীয় কালচার চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা চলছে।

মঙ্গল শোভাযাত্রায় মৌলবাদী গোষ্ঠীর আপত্তি থাকে, ২৫ শে বৈশাখ পালনে তাদের আপত্তি থাকে- অথচ অপ -সংস্কৃতি ঠিকই হচ্ছে। বাঙালি সংস্কৃতি এখন ধর্মান্ধ গোষ্ঠীর কাছে হিন্দু কালচার।

ধর্ম আর সংস্কৃতিকে একই দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার করা মানে নির্বুদ্ধিতার পরিচয়। মঙ্গল শোভাযাত্রাকেও তাই করা হয়েছে। রবীন্দ্রনাথ, রবীন সাহিত্য চর্চারও আজ এক অবস্থা দেশে।

অথচ মাদ্রাসায় প্রতিদিন ধর্ষণ হচ্ছে! এই অপ- সংস্একৃতি রোধে কোনো ব্যবস্থা নেই। এগুলো কোনো ব্যাপার না দেশে এখন।

আরো সত্য করে বললে, আফগান, আরব, আফ্রিকান বা অন্য অনেক জাতিকেই আমরা বলি গোঁড়া, মৌলবাদ, সন্ত্রাসী…. কিন্তু এরা কখনোই এদের সংস্কৃতির সাথে কোন সমঝোতা করেনি।

এরা সব সময় এদের নিজেদের সংস্কৃতিকে আঁকড়ে ধরে রেখেছে এবং রক্ষা করে চলেছে। কারণ, এরা খুব ভাল করেই জানে যে “কোন জাতিকে ধ্বংস করতে হলে, সবার আগে ধ্বংস করতে হবে তার সংস্কৃতিকে…”।

অথচ বাঙালি নিজের সংস্কৃতিকে ধ্বংস করে বসে আছে। এভাবে জাতির উন্নতি সম্ভব নয়।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *