চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম বন্দরে যে কোন মূল্যে মার্কিন অপারেটরই নিয়োগ দেয়া হবে– এ বিষয়টি আকারে- ইঙ্গিতে জানিয়ে দিলেন নৌ পরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার শাখাওয়াত হোসেন( অব:)।
শুক্রবার চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শনকাল তিনি সাংবাদিকদের কাছে এমন মনোভাবই প্রকাশ করেছেন।
অথচ চট্টগ্রাম বন্দরের অপারেশনাল কর্মকান্ড কোন বিদেশি অপারেটরকে না দেয়ার দাবিতে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন, রাজনৈতিক দলগুলো তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে।
কিন্তু মার্কিনীদের কাছে দাসখত দেয়া নোবেল লরিয়েট ড. ইউনুস গং সরকার যে কোন মূল্যে তা বিদেশি অপারেটরের কাছে তুলে দেবেনই। তাতেও যদি ইউনুসের গদি রক্ষা হয়।
শুক্রবার চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন ও সংশ্লিষ্ট সরকারি উর্ধতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এসময় তিনি দেশের স্বার্থে চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে প্রোপাগান্ডা না করার আহবান জানান।
নৌপরিবহন উপদেষ্টা বলেন, চট্টগ্রাম পোর্ট বাংলাদেশের পোর্ট। চট্টগ্রাম পোর্ট আমাদের সম্পত্তি।
এটা আমাদের কাছেই থাকবে। যদি কেউ অন্যভাবে প্রোপাগান্ডা করে থাকে, আমি আশা করব দেশের স্বার্থে এ ধরনের প্রোপাগান্ডা যেন না করে।
আমরা সামনের দিকে যেতে চাই। বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে আমরা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যেতে চাই। আমরা পেছনে পড়ে থাকতে চাই না।
উপদেষ্টা বলেন, নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) এর কার্যক্রম সমূহকে আরে বেশি দক্ষ ও কার্যকর করার জন্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
সাইফ পাওয়ারটেক প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, ‘১৭-১৮ বছর ধরে এনসিটি এবং আরেকটি টার্মিনাল পরিচালনাকারী এই বেসরকারি প্রতিষ্ঠানটি ভালো কাজ করেছে।
তবে সরকার এখন তাদের তুলনায় আরও দক্ষতার সঙ্গে টার্মিনাল পরিচালনার উদ্যোগ নিয়েছে।’
তিনি বলেন, এখানে যে কনটেইনার লোড হচ্ছে তা সিঙ্গাপুর যাবে। ট্রান্সশিপমেন্ট হবে। সিঙ্গাপুরে বেশিরভাগ পোর্টই প্রাইভেটলি পরিচালনা হচ্ছে।
আমাদের যদি ইফিশিয়েন্সি বাড়াতে হয় তাহলে বাইরের টেকনোলজিস আনতে হবে। নিজেরা নিজেরা করছি। নিজেরা অনেক ইফিশিয়নটলি করছি।
এ ইফিশিয়েন্সি বাড়ানোর আমাদের দরকার হচ্ছে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রবেশ করানো। একটা পোর্ট তখনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রবেশ করবে যখন একটা আন্তর্জাতিক অপারেটর আসবে।
ইন্টেরিম পিরিয়ডের জন্য আমরা এনসিটি ড্রাইডককে দিয়েছি। যার সঙ্গে বাংলাদেশ নৌবাহিনী (নেভি) রয়েছে। আমি অত্যন্ত আনন্দিত আগের থেকে গড়ে ৩০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এটা কিন্তু বড় ধরনের অগ্রগতি। আমি আশা করব, এটা যাতে ধরে রাখে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে নৌপরিবহন উপদেষ্টা বলেন, বন্দরের ট্যারিফ আলোচনা করে বাড়িয়েছি। এককভাবে মন্ত্রণালয় বাড়ায়নি।
আন্তঃমন্ত্রণালয়ে কথা হয়েছে এবং স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে কথা হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন মেইন পোর্টের ট্যারিফ দেখার পর দেখা গেছে এখনো এখানে ট্যারিফ অনেক কম।
এমনকি মোংলা থেকেও কম। ১৯৮৬ সালের পর বন্দরের ট্যারিফ আর বাড়ানো হয়নি। আপনি দেখেন ১৯৮৬ সালের এক টাকার মূল্য এখন কত হয়েছে।
এ সময় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান, কমান্ডার চট্টগ্রাম নৌ অঞ্চল রিয়ার অ্যাডমিরাল মীর এরশাদ আলী, বন্দরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং বর্তমানে এনসিটি পরিচালনায় নিয়োজিত চট্টগ্রাম ড্রাইডক লিমিটেডের (সিডিডিএল) কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।