ঢাকা: ইস্কনের ওপর আক্রোশ মৌলবাদীদের আজ থেকে নয়। প্রায় ২০০৯ থেকেই চলে আসছে।

এর আগেও বহুবার ইসকনের মন্দির, স্থাপনায় হামলার চেষ্টা হয়েছে কিংবা হয়েছে।

এর আগে পরিকল্পনা অনুযায়ী ইসকন মন্দির ও ইসকনের অন্যান্য স্থাপনায় হামলাসহ বিভিন্ন নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পাঁচ জঙ্গি একত্রিত হয়েছিলেন। পরে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে তাদের আটক করা হয়।

এক সংবাদ সম্মেলনে যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (সিটিটিসি) মো. ইলিয়াছ শরীফ সে সময় জানিয়েছিলেন, নিষিদ্ধ ওই সংগঠনের মধ্যপ্রাচ্য ফেরত দুই নেতার নির্দেশে ইসকন মন্দির ও ইসকনের অন্যান্য স্থাপনায় হামলার পরিকল্পনা করা হয়।

বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের সর্ববৃহৎ সংগঠন হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক রানা দাশ গুপ্ত বেনারকে বলেন, “রামকৃষ্ণ মিশনসহ হিন্দুদের অন্যান্য যেসব ধর্মীয় সংগঠন এখানে সক্রিয় আছে, তাদের চেয়ে ইসকনের কর্মকাণ্ড অনেক বেশি সরব এবং দৃশ্যমান। মূলত এ কারণেই জঙ্গিরা তাদের ‘টার্গেট’ করেছে।”

“ইসকনের কর্মকাণ্ড দেখে তারা মনে করছে, এখানকার হিন্দুদের মধ্যে একটা ধর্মীয় জাগরণ ঘটছে। যে কারণে তারা ইসলামী উগ্রবাদীদের চক্ষুশূল হয়ে গেছে,” বলেন তিনি।

ইসকনের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও গুজব রটানো হচ্ছে। এবং তা এখনো জারি রয়েছে।

এটি আসলে ইসকনের বিরোধিতা না, তিন কোটি সনাতনীর বিরোধিতা।

ইসকনের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় সংগঠনটির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের দাবিতে বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) রাত ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেন তারা।

মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের হল এলাকা থেকে শুরু হয়ে সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের সামনে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।

বিক্ষোভকারীরা এ সময় বিভিন্ন স্লোগান দেন— “ইসকন তুই জঙ্গি, স্বৈরাচারের সঙ্গী”, “একটা একটা ইসকন ধর, ধরে ধরে জেলে ভর”, “আমার সোনার বাংলায়, ইসকনের ঠাঁই নাই।”

সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাহতাপ ইসলাম বলেন, “খতিব মহিবুল্লাহকে পঞ্চগড়ে অপহরণ ও নির্যাতনের ঘটনায় বাংলাদেশের ছাত্রসমাজ ক্ষুব্ধ। ১৭ বছর ধরে ভারতীয় প্রভাবের মাধ্যমে যে স্বৈরাচারী অপশক্তি দেশকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে, আমরা আগস্ট বিপ্লবের মাধ্যমে তা ব্যর্থ করেছি। এখন ইসকনকে ব্যবহার করে আবারও অস্থিতিশীলতা তৈরির চেষ্টা চলছে।”

তিনি আরও বলেন, “চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলী হত্যাসহ একাধিক ঘটনায় ইসকন সদস্যদের সম্পৃক্ততার অভিযোগ উঠেছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে কোনো আপস হবে না—স্বৈরাচারের মতো ইসকনকেও আমরা এই দেশ থেকে বিদায় জানাব।”

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *