বাংলাদেশে গত জুলাই- আগষ্টে নির্মম- নৃশংসভাবে “মেটিকুলাস ডিজাইনে” যে হত্যাকান্ড- ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড চালিয়েছে ড. ইউনুসের সহযোগীরা তার কিছু কিছু এরই মধ্য নানা সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে।
এখনো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও প্রকাশিত হচ্ছে। যদিও জঙ্গী মদদদাতা ইউনুস গং সে ব্যাপারে নির্বিকার।
অতি সম্প্রতি কথিত বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের এক নেতা বাংলাদেশে বাইরে গিয়ে সেখানকার মিডিয়াতে ” বিষ্ফোরক” বেশ কিছু তথ্য দিয়েছেন।
অষ্ট্রেলিয়া প্রবাসী খ্যাতনামা সাংবাদিক- রাজনৈতিক বিশ্লেষক সেই সাক্ষাৎকারের কিছু অংশ প্রকাশ করেছেন।
তবে ‘সোনার বাংলা’ র পক্ষ থেকে সেই সাক্ষাৎকারের সত্যতা যাচাই করা সম্ভব না হলেও উৎসুক পাঠক ও নাগরিকদের জন্য তা পুরোটাই তুলে ধরা হলো।
ফজলুল বারী লিখেছেন– জুলাই হত্যাকাণ্ড,ক্ষমতা দখলের রক্তাক্ত নীলনকশা ফাঁস হওয়া শুরু হয়েছে।
বাংলাদেশের ইতিহাসে জুলাই মাস এক বিভীষিকাময় অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে।
আন্দোলনের নামে রক্তগঙ্গা বইয়ে দেওয়া, রাষ্ট্রযন্ত্রকে ধ্বংস করে দেওয়ার গভীর ষড়যন্ত্র, এবং গণতন্ত্রকে হত্যা করার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের চেষ্টা—সবকিছু মিলিয়ে এটি ছিল এক ভয়ংকর রাজনৈতিক ও বৈদেশিক ষড়যন্ত্রের বহিঃপ্রকাশ।
একাধিক সূত্রে উঠে এসেছে, এই নৃশংসতার নেপথ্যে ছিল একটি সুপরিকল্পিত এবং বহুমাত্রিক গোষ্ঠীচক্র।
গোপন স্বীকারোক্তি: ইউরোপে পালিয়ে যাওয়া এনসিপি নেতার বিস্ফোরক দাবি
একজন উচ্চ পর্যায়ের এনসিপি নেতা, যিনি বর্তমানে ইউরোপে অবস্থান করছেন, নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইউরোপভিত্তিক একটি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, পুলিশের গুলিতে মারা গেছে মাত্র ৭ জন।
কিন্তু আন্দোলনকে চাঙ্গা করতে এবং আন্তর্জাতিক সহানুভূতি অর্জনের জন্য বাকি ২১৩ জনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়। উদ্দেশ্য ছিল—রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি করে শেখ হাসিনার সরকারকে পতন ঘটানো।
এই ভয়ংকর হত্যাযজ্ঞে জড়িতদের মধ্যে রয়েছেন:
✓ শিবিরের ৮০ জন ক্যাডার,
✓ হিজবুত তাহরীরের ৬০ জন সদস্য,
✓ হেফাজতের ২২ জন ‘আন্দোলন সমন্বয়কারী’,
✓ এনসিপির ৪০ জন সদস্য,
✓ সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ১১ জন কর্মকর্তা।
তাঁরা সকলেই নিজ নিজ ভূমিকা পালন করেছেন এই গণহত্যা, সহিংসতা ও রাষ্ট্রবিরোধী পরিকল্পনায়। এতে আহত হয়েছেন ৫০০ জনেরও বেশি মানুষ।
সারাদেশজুড়ে পরিকল্পিত আগুন সন্ত্রাস ও থানালুট, উত্তরা, যাত্রাবাড়ীসহ রাজধানীর বেশকিছু থানা এবং চট্টগ্রামের দুটি গুরুত্বপূর্ণ থানা চিহ্নিত বৈষম্যবিরোধীদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়া হয়েছিল।
সেদিন সারাদেশের শতাধিক থানায় হামলা হয়। থানালুট, অস্ত্র ছিনতাই, ফাইলপত্র ধ্বংস এবং পুলিশের উপর বর্বর হামলার নেতৃত্ব দেয় বিএনপি, জামাত, শিবির, এবং তাদের অঙ্গ সংগঠনের প্রশিক্ষিত স্কোয়াড।
একাধিক সূত্রে প্রকাশ, ১২০০ এর বেশি পুলিশ সদস্য হত্যার পরিকল্পনা ছিল, যার একটি বড় অংশ আংশিকভাবে বাস্তবায়িতও হয়।
বিদেশি দূতাবাসের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ
উক্ত এনসিপি নেতার ভাষ্যমতে, জুলাই হত্যাকাণ্ড এবং সরকার পতনের ষড়যন্ত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে পাকিস্তানি, তুরস্ক, চীন ও আমেরিকান দূতাবাস।
এই দূতাবাসগুলোর কিছু কর্মকর্তা এনসিপি, ইউনুস সেন্টার এবং ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন একাডেমিকের মাধ্যমে সরাসরি মাঠ পর্যায়ে যোগাযোগ রাখতেন।
তাদের মধ্যে মুসফিক ফজল আনসারী এবং ইউনুস সেন্টারের কয়েকজন উচ্চপদস্থ ব্যক্তি ছিলেন অন্যতম ‘কো-অর্ডিনেটর’।
এটা আন্দোলন নয়, এটা অভ্যুত্থান
একটি গণতান্ত্রিক সরকারকে হটিয়ে একটি ষড়যন্ত্রমূলক সরকার কায়েমের জন্য এই হত্যাকাণ্ডকে ব্যবহার করা হয়েছে।
এমনকি গুজব, বিভ্রান্তি ছড়িয়ে জনমনে ভয়, উসকানি এবং সরকারবিরোধী আবেগ জাগ্রত করার মাধ্যমে জনগণকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে।
জুলাইয়ের হত্যাকাণ্ড এখন আর রহস্য নয়, বরং ধীরে ধীরে সত্য উন্মোচিত হচ্ছে।
এই ঘটনায় জড়িত প্রতিটি ব্যক্তি ও সংস্থাকে চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনা জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্ন।
এটি কেবল রাজনৈতিক সহিংসতা নয়, এটি একটি রাষ্ট্রবিরোধী অপরাধ, একটি স্বাধীন দেশের সার্বভৌমত্বের উপর সরাসরি আঘাত।
আন্তর্জাতিক নিরপেক্ষ তদন্ত হলে ষড়যন্ত্রের সঠিক তথ্য বেরিয়ে আসবে।
# ইশরাত জাহান, লেখিকা, প্রাবন্ধিক, ঢাকা।