‘কয়লা ধুলেও ময়লা যায় না ’- এ প্রবাদটি বাংলাদেশের কওমী মাদ্রাসা ভিত্তিক ধর্মান্ধ উগ্রবাদী সংগঠন হেফাজতে ইসলামী আবারো প্রমাণ দিলো। ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৩ মে’র মহাসমাবেশে দুই বক্তার ‘আপত্তিকর’ শব্দচয়নের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। অবশ্য এই লোক দেখানো দু:খ প্রকাশ তারা এমনি এমনি করেনি।
যেহেতু দেশব্যাপী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা দিক থেকে প্রতিবাদ উঠছে এবং হেফাজতে ইসলামী’র বিরুদ্ধে আইনী নোটিশ দিয়েছেন বাংলাদেশের ৬ নারী, তাই হেফাজত এমন একটি ‘ লোকদেখানো দু:খ প্রকাশ’ করে বিবৃতি দিয়ে দায় সারতে চেয়েছে বলেই মনে করছেন অনেকে।
তবে দু:খ প্রকাশের পাশাপাশি তারা কিন্তু হুমকিও জারি রেখেছে। সংগঠনের যুগ্ম মহাসচিব আজিজুল হক ইসলামাবাদী ৬ মে মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বলেছেন, “আমাদের মহাসমাবেশে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে দুজন বক্তা আপত্তিকর শব্দচয়ন করেছেন, যা আমরা সমর্থন করি না। কেউ এতে আহত হলে তাদের প্রতিও আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখপ্রকাশ করছি।”
অথচ এর পাশাপাশি আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেন, “আমাদের এই সামাজিক ভূমিকা ও ধর্মীয় অবস্থান আধুনিক ব্যবস্থায় এদেশের নারীকে ‘পণ্য’বানানোর পশ্চিমা এজেন্ডা বাস্তবায়নের অন্তরায় বলেই সাম্রাজ্যবাদী গোষ্ঠী আমাদের বিরুদ্ধে একদল উগ্র নারীবাদীকে লেলিয়ে দিয়েছে বলে আমরা মনে করি। কিন্তু ধর্মীয় ইস্যুতে বাড়াবাড়ি করলে আমরা ছাড় দেবো না।”
পাঠকদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, এই উগ্র ধর্মান্ধ নারীবিদ্বেষী গোষ্ঠী হেফাজতে ইসলামের সাবেক আমীর প্রয়াত শাহ আহমদ শফী তার জীবদ্দশায় নারীদের নিয়ে নানা কটুক্তি করে বিভিন্ন সময়েই সংবাদের শিরোনামে এসেছেন। কি ছিল তার সেসব উক্তি তা একটু দেখলেই বুঝতে পারবেন। নারীদেরকে তেঁতুলের সাথে তুলনা করে এই হুজুর উপাধি পেয়েছিলেন ‘ তেঁতুল হুজুর ” নামে। এবার তার সেই কিছু বয়ান তুলে ধরছি ।
বয়ানগুলো হলো-“ শোনো নারীরা, চার দেয়ালের ভেতরই তোমাদের থাকতে হবে। স্বামীর বাড়িতে বসে তোমরা আসবাবপত্র দেখভাল করবা, শিশু লালন-পালন, পুরুষ শিশুদের যত্ন করবা। এই হলো তোমাদের কাজ। তোমাদের কেন বাইরে যেতে হবে?”
“মহিলাদের ক্লাসের সামনে বসানো হয় কলেজে ভার্সিটিতে, পুরুষরা কি লেখাপড়া কইরতেছে? মহিলা তেঁতুলের মতো-তেঁতুলের মতো-তেঁতুলের মতো। ছোট্ট একটা ছেলে তেঁতুল খাইতেসে, আপনে দেখতেছেন, আপনার মুখ দিয়া লালা বাইর হবে। সত্য না মিথ্যা বলেন তো? তেঁতুল বৃক্ষের নিচ দিকে আপনে হাইটা যান, আপনার মুখ থেকে লালা বাইর হয়। মার্কেটে যেখানে তেঁতুল বিক্রি করে ওদিকে যদি আপনে যান, আপনার মুখ থেকে লালা বাইর হয়। মহিলা তার থেকেও বেশি খারাপ! মহিলাদেরকে দেখলে দিলের মইধ্যে লালা বাইর হয়, বিবাহ করতে ইচ্ছা হয়। লাভ ম্যারেজ/কোর্ট ম্যারেজ করতে ইচ্ছা হয়। হয় কিনা বলেন? এই মহিলারা তেঁতুলের মতো।”
‘ দিনেরাত্রে মহিলাদের সাথে পড়ালেখা করতেছেন, আপনার দিল ঠিক রাখতে পারবেন না। রাস্তাঘাটে হাঁটাহুটা করতেছেন, হ্যান্ডশেক কইরা কইরা, আপনার দিল ঠিক রাখতে পারবেন না। যতোই বুজুর্গ হোক না কেন, এই মহিলাকে দেখলে, মহিলার সাথে হ্যান্ডশেক করলে আপনার দিলের মধ্যে কুখেয়াল আইসা যাবে, খারাপ খেয়াল। এইটা মনের জেনা, দিলের জেনা হইতে হইতে আসল জেনায় পরিণত হবে। এটা সত্য না মিথ্যা?”
“গার্মেন্টসে কেন দিছেন আপনার মেয়েকে? ফজরে ৭/৮ টা বাজে চলে যায়, রাত ৮টা, ১০টা, ১২টায়ও আসে না। কোন পুরুষের সাথে ঘোরাফেরা করতেসে তুমি তো জানো না। কতোজনের মধ্যে মত্তলা হচ্ছে আপনার মেয়ে, আপনে তো জানেন না। জেনা কইরা কইরা টাকা রোজগার করতেছে, কী বরকত হবে?” “আপনারই মেয়ে স্কুলে, কলেজে, ভার্সিটিতে লেখাপড়া করছে। আরে, ক্লাস ফোর ফাইভ পর্যন্ত লেখাপড়া করান। বিবাহ-শাদি দিলে স্বামীর টাকা-পয়সার হিসাব কইরতে পারে মতো, অতটুকু দরকার। বেশি বেশি আপনার মেয়েকে আইজকে স্কুলে কলেজে ভার্সিটিতে লেখাপড়া করাইতেছেন, লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করতেছেন। কিছুদিন পরে আপনার মেয়ে স্বামী একটা নিজে নিজে ধরি নিবে, লাভ ম্যারেজ-কোর্ট ম্যারেজ করি চলি যাবে।”
এই হলো তার কিছু বয়ানের নমুনা। যে সংগঠনটির এসময়কার নেতা এমন মন্তব্য করতে পারেন নারী সম্পর্কে তাহলে সেই সংগঠনটির অন্য নেতৃত্ব আর ভালো কিছু বলবেন তা আশা করা তো অরণ্যে রোদন। কিন্তু এই কওমী মাদ্রাসার হুজুরদেরকে কাছে টেনে নিয়েছিলেন বাংলােেশর সাবেক প্রধানমন্ত্রী, আওয়ামীলীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। কওমী মাদ্রাসা থেকে পাশ করা ছাত্রদেরকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমমানের ডিগ্রী হিসেবে বিবেচিত হবে বলেও ঘোষনা দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। যার ফলে তাকে এই হেফাজতে ইসলামীই প্রকাশ্য জনসভায় ‘ কওমী মাতা’ হিসেবে ঘোষনা দিয়েছিল।
কিন্তু অত্যন্ত ইসলাম পছন্দ-ভোট পছন্দ শেখ হাসিনা বুঝতে পারেননি যে- ধর্মান্ধ গোষ্ঠী তাকে এবং তার দলকে, নারী নেতৃত্বকে কখনোই সমর্থন করেনি।গত ২০২৪ এর অভ্যূত্থানে এই হেফাজতের ক্যাডাররা সবসময়েই মাঠে ময়দানে যে জঙ্গীত্ব প্রদর্শন করেছে তা নিশ্চয় ভুলে যায়নি এদেশের মানুষ। তারা কখনোই মুক্তিযুদ্ধকে সম্মান করেনি, ধর্মনিরপেক্ষতাকে ঘৃনা করেছে, প্রগতিশীলতাকে বেহায়াপনা বলেছে, যা এখনো বলছে।
সর্বশেষ প্রমাণ তারা দিলো গত ৩ মে রাজধানী সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হেফাজতে ইসলামীর সমাবেশে। তারপরও শিক্ষা হবেনা এদেশের নারী সমাজের ? মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের মানুষদের? কথিত প্রগতিশীল নেতাকর্মীদের যারা এতদিন লাল বিপ্লব লাল বিপ্লব বলে মাঠ গরম করেছে গত বছর জুলাই-আগষ্টসহ এখন পর্যন্ত ? তবে কিছু কিছু বোধোদয় বোধ হয় হচ্ছে তাদের এখন। অনেকেই ভোল পাল্টাচ্ছেন। তাদেরকে বলতে শোনা যাচ্ছে- এজন্যই কি আমরা জুলাই-আগষ্টে মাঠে নেমেছিলাম? প্রাণ দিয়েছিল এদেশের মানুষ ? তেমনই একটি লাল দল বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি বা সিপিবি।
সেই দলটির সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম এক ফেইসবুক পোষ্টে লিখেছেন-‘ যে নারী তোমাকে গর্ভে ধারণ করে এই দুনিয়ার আলো দেখায় তাকে বন্দী করে কোন দ্বীনের আলো তুমি পৃথিবীতে ছড়িয়ে দেবে ? ”
প্রসঙ্গত: উড়ে এসে জুড়ে বসা ড. ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত নারী সংস্কার কমিশন গত ১৯ এপ্রিল প্রধান উপদেষ্টার কাছে তাদের প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর থেকেই ধর্মভিত্তিক দলগুলো এর বিরোধিতা করে আসছে। ইসলামি উত্তরাধিকার আইন ও ইসলামি পারিবারিক আইন নিয়ে যে পর্যবেক্ষণ ও সুপারিশ কমিশন দিয়েছে, তা নিয়ে আপত্তি রয়েছে ইসলামি দলগুলোর। এছাড়া শ্রম আইন সংশোধন করে যৌনকর্মীদের মর্যাদা ও শ্রম অধিকার নিশ্চিত করার সুপারিশ নিয়েও দলগুলো ক্ষোভ প্রকাশ করে আসছে।
নারী সংস্কার কমিশন বাতিলসহ ৪ দফা দাবিতে গত ৩ মে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশ করে হেফাজতে ইসলাম। সেখানে অনেক বক্তাই নারীর প্রতি অবমাননাকর বক্তব্য দেন। একজন বক্তা নারী কমিশনকে ‘বেশ্যা কমিশন’ আখ্যায়িত করেন। আরেকজন বলেন, ‘অবৈধ সন্তানকে স্বীকৃতি দিতে’ কমিশন যৌনকর্মীদের স্বীকৃতির দাবি তুলেছে।
জনসম্মুখে এ ধরনের বক্তব্য দেওয়ায় হেফাজতে ইসলামকে উকিল নোটিস দিয়েছেন ছয় নারী, যাদের মধ্যে তিনজন জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির নেত্রী এবং বাকিরা সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের বিশিষ্টজন। সেখানে বলা হয়, “নারীদের প্রতি হেফাজতের প্রকাশ্য বিদ্বেষমূলক মন্তব্য, বিশেষ করে মাইকে নারীকে ‘বেশ্যা’ বলে গালি দেওয়া, কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।”
দুই বক্তার শব্দচয়ন নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করে মঙ্গলবার হেফাজতে ইসলামের বিবৃতিতে আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেন, “নারীর প্রতি আমাদের ঘৃণার প্রশ্নই আসে না। মতাদর্শিক লড়াইকে ‘নারীর প্রতি ঘৃণা’আকারে দেখাটা স্রেফ মুর্খতা। আমরা আবারও বলছি, যার যার ধর্মীয় বিধান অনুসারে নারীর ন্যায্য অধিকার রক্ষায় আমরাও সংস্কারকাজে সম্পৃক্ত হতে আগ্রহী।“
অন্তর্বর্তী সরকার যেভাবে এই নারী সংস্কার কমিশন গঠন করেছে, তা নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেন হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব। এতে বলা হয়-“শুরুতেই আলেম-ওলামা ও অন্যান্য ধর্মীয় বিশেষজ্ঞকে বাদ দিয়ে একদল এনজিওবাজ নারীবাদীকে নিয়ে নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন গঠন করা হলো। যার ফলে এমন একচেটিয়া প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে, যেখানে সেক্যুলার প্রগতিশীল নারীসমাজের স্বার্থ ও মতাদর্শ রক্ষিত হলেও ধর্মপ্রাণ বৃহত্তর নারীসমাজের ধর্মীয় চিন্তা ও বিবেচনা উপেক্ষিত হয়েছে। এই বৈষম্য মেনে নেওয়ার সুযোগ নেই।”
তিনি বলেন, “উগ্র ইসলামবিদ্বেষী গোষ্ঠী কর্তৃক আমাদের ‘নারীবিদ্বেষী’ অপবাদ দেয়ার অপরাজনীতি বহু পুরনো। অথচ দেশজুড়ে আমাদের মহিলা কওমি মাদরাসাগুলোতে প্রতি বছর উল্লেখযোগ্য হারে ছাত্রীসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সরকারি বরাদ্দমুক্ত এসব মাদরাসায় সমাজের হাজার হাজার প্রান্তিক ও সুবিধাবঞ্চিত মেয়েদের জন্যও বিনামূল্যে থাকা-খাওয়া, নিরাপত্তা ও ধর্মীয় শিক্ষার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। “ফলে এদেশের নারীদের স্বাক্ষরতার হার বৃদ্ধিতে আমাদেরও উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে। কিন্তু কখনো আলেম-ওলামার সামাজিক অবদানের স্বীকৃতি দেয়া হয় না।”
আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেন, “আমাদের এই সামাজিক ভূমিকা ও ধর্মীয় অবস্থান আধুনিক ব্যবস্থায় এদেশের নারীকে ‘পণ্য’বানানোর পশ্চিমা এজেন্ডা বাস্তবায়নের অন্তরায় বলেই সাম্রাজ্যবাদী গোষ্ঠী আমাদের বিরুদ্ধে একদল উগ্র নারীবাদীকে লেলিয়ে দিয়েছে বলে আমরা মনে করি। কিন্তু ধর্মীয় ইস্যুতে বাড়াবাড়ি করলে আমরা ছাড় দেব না।”
সেই সঙ্গে তিনি ‘সেক্যুলার প্রগতিশীলদের’ হুঁশিয়ার করে বলেন, “যারা এতকাল আলেম-ওলামাকে বিদ্বেষমূলকভাবে ‘জঙ্গি, ‘মৌলবাদী, ‘ধর্মব্যবসায়ী’ ও ‘সাম্প্রদায়িক’বলে কটাক্ষ করে এসেছেন, তাদেরকেও আমরা এ ধরনের আপত্তিকর শব্দচয়ন থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাই। আর শাপলা চত্বরের গণহত্যায় আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শক্তিকে কারা উৎসাহ দিয়েছিল তা আমরা ভুলে যাইনি।”
এর আগে জনসম্মুখে নারীদের ‘বেশ্যা’ বলার অভিযোগে হেফাজতে ইসলামকে গত ৫ মে আইনি নোটিস দিয়েছেন ছয় নারী, যাদের মধ্যে তিনজন জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির নেত্রী এবং বাকিরা সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের বিশিষ্টজন। সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বদের মধ্যে রয়েছেন উম্মে রায়হানা, উম্মে ফারহানা ও ক্যামেলিয়া শারমিন চূড়া। বর্তমান সরকারের মদদপুষ্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের নবগঠিত রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)’ র তিন নারী নেত্রী হলেন সৈয়দা নীলিমা দোলা, দ্যুতি অরণ্য চৌধুরী এবং নীলা আফরোজ। গত ২৮ ফেব্রæয়ারি’২০২৫ সালে এই এনসিপি আত্মপ্রকাশ করে রাজনৈতিক দল হিসেবে।
সৈয়দা নীলিমা দোলা ও দ্যুতি অরণ্য চৌধুরীর সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নারীদের প্রতি হেফাজতের প্রকাশ্য বিদ্বেষমূলক মন্তব্য, বিশেষ করে মাইকে নারীকে ‘বেশ্যা’ বলে গালি দেওয়া, কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এই মন্তব্যের প্রতিবাদে আইনজীবীর মাধ্যমে গত ৫ মে সোমবার দুপুরে হেফাজতে ইসলামকে লিগ্যাল নোটিস পাঠানো হয়।
নারী সংস্কার কমিশন গঠনের প্রস্তাবনার প্রেক্ষাপটে নোটিস পাঠানো নারীরা বলেছেন, পাবলিক স্পেসে নারীকে গালি দেওয়ার অধিকার কারো নেই। নতুন বাংলাদেশে এ ধরনের নিপীড়নের কোনো স্থান নেই। “জুলাই অভ্যুত্থানে নারীদের অবদান ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ফলে, এই নতুন বাংলাদেশে সকলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে নারীদের প্রতি সম্মান অপরিহার্য,” বলা হয় বিজ্ঞপ্তিতে।
এত বলা হয়- প্রস্তাাবিত নারী সংস্কার কমিশন নিয়ে মতবিরোধ থাকতে পারে, কিন্তু তার মানে এই নয় যে নারীদের প্রতি অবমাননাকর ভাষা ব্যবহার করা যাবে, মন্তব্যও করেন নোটিসদাতারা। ইসলামী যে আইন দেশে আছে সে অনুযায়ী হেফাজতের নেতারা তাদের পরিবারের নারীদের সম্পত্তি দিয়েছেন কি না, সেই প্রশ্নও তুলেছেন তারা। তবে যে যাই বলুক কওমী মাদ্রাসা ভিত্তিক ধর্মান্ধ উগ্র ইসলামী সংগঠন হেফাজতে ইসলামী তাদের প্রয়াত আমীর ‘ তেঁতুল হুজুর’ এর দেখানো পথেই চলছে। শুধু তাই নয়, আরো উগ্রভাবে তাদের আস্ফালন দেখছে বাংলাদেশসহ বিশ্বেও নাগরিকরা।
রাকীব হুসেইন: বাংলাদেশে অবস্থানকারি লেখক।