‘মব ভায়োলেন্স’ এর মধ্য দিয়ে অবৈধভাবে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলকারি ষড়যন্ত্রীদের মূল হোতা নোবেল লরিয়েট ড. মুহম্মদ ইউনুসের কাছ থেকে বাংলাদেশের শান্তিপ্রিয় জনগণ আর কিছু আশা করেনা, শুধুমাত্র তার ও তার সরকারের পতন ছাড়া।
তবে তাদের পতনও শেষপর্যন্ত গণরোষের মধ্য দিয়েই হয় কিনা সে শংকা থেকেই যায়।
যেখানে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, সাবেক উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকতা সর্বোপরি সাংবিধানিক পদের অধিকারি সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে এম নূরুল হুদাকে সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসীদের হাতে হেনস্তা হতে হয় সেই দেশের সরকার প্রধান বা তার সরকারের কাছ থেকে আর কিছুই আশা করা বৃথা।
যেহেতু গত প্রায় ১১ মাসে এই অগণতান্ত্রিক-অবৈধ-অসাংবিধানিক ইউনুস সরকারের বিরুদ্ধে দেশের ভেতরে ও বাইরে বাংলাদেশী নাগরিকরা নানাভাবেই অনাস্থা জ্ঞাপন করছেন, বিক্ষোভ করছেন তাই নৈতিকভাবে এ সরকারের অঅর সরকারি ক্ষমতায় থাকার কোন বৈধতা নেই।
গত ২২ জুন রোববার সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনারের বাসায় যে ‘ মব সন্ত্রাস’ চালানো হয়েছে তার বিরুদ্ধে না অন্তবর্তী সরকার না সেনাবাহিনী কোন ব্যবস্থাই নেয়নি।
উল্টো এই বীর মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলায় গ্রেপ্তার ও সরকারি আজ্ঞাবহ ( আদেশ মানতে বাধ্য) আদালত জিজ্ঞঅসাবাদের জন্য সোমবার অর্থাৎ আজ ২৩ জুন চার দিনের রিমান্ডও মঞ্জুর করেছে !
আবার সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে এখন নাকি মত প্রকাশের চরম স্বাধীনতা বিরাজ করছে ! আইন-আদালত নিজস্ব গতিতে চলছে !
যেখানে ভিন্নমতের আইনজীবীরা আদালতগুলোতে বিএনপি- জামাত- হিযবুত-হেফাজত এর মব সন্ত্রাসের শিকার হচ্ছেন সেখানে নাকি আইনের শাসন চালু আছে ?
এমন মব সন্ত্রাস চলতে থাকলে দেশে গৃহযুদ্ধ আসন্ন-এমন গভীর শংকা করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
সেক্ষেত্রে সংবিধানকে সমুন্নত রাখতে সেনাপ্রধান যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন জাতির কাছে তার বাস্তবায়ন একান্তভাবে অত্যাবশ্যক।
হতে পারে তা কিছুদিনের জন্য সেনাশাসন। কিন্তু মানুষ ও দেশকে বাঁচানোর দায়িত্ব তাদের ওপর দিয়েছে সংবিধান।
একটু পরেই আসছি সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এস নূরুল হূদার প্রতি মব সন্ত্রাসের বিষয়ে। একটু দৃষ্টি ফেরাই আমাদের দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘু হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বর্তমান পরিস্থিতির দিকে।
বিশদ বিবরণে না গিয়েই শুধুমাত্র নেত্রকোনা শহরের দুটি ঘটনার বিষয় উদাহরন দিলেই বোঝা যাবে।
গত শুক্রবার মানে ২০ জুন রাতে নেত্রকোনা শহরের কেন্দ্রস্থল বড়বাজার এলাকাতে স্থানীয় এক ধনাঢ্য হিন্দু ব্যবসায়ী প্রমান্ত কুমার সাহা’র বাড়িতে বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা এই মব সৃষ্টি করে নারকীয় হামলা, ভাংচুর, লুটপাট ও বাসার নারী সদস্যদেরকে নাজেহাল করেছেন।
কারণ তিনি হিন্দু এবং তার বেশ কিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সেগুলো দখল করাই মূল উদ্দেশ্য। অবশ্য এই ব্যবসায়ী ও আওয়ামীরীগ নেতা এই হামলার সময় বাড়িতে ছিলেননা।
তিনি নেত্রকোনা পৌরসভার মেয়র ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদেও ছিলেন একসময়ে। গত ২২ জুন নেত্রকোনা শহর থেকেই এক হিন্দু ছেলেকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে নিয়ে গেছে।
তার অপরাধ সে হিন্দু এবং ছাত্রলীগ-আওয়ামীলীগের সমর্থক ছিল। এসব হামলা-সন্তাসের সময় পুলিশ বা সেনাবাহিনী কোন ভূমিকাই পালন করেনি।
অথচ নরসিংদী স্টেডিয়ামে সেনাবাহিনীর ক্যাম্প রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নেত্রকোনা শহরের কয়েকজন হিন্দু অধিবাসী বলেছেন- ‘ মনে করেছিলাম নির্বাচনের একটি বাতাস বইছে, নির্বাচন হলে মোটামুটি এসব সন্ত্রাস-মব কালচার বন্ধ হবে।
কিন্তু এখন যে পরিস্থিতি তাতে নিজেদেও মমান-সম্মান ও জীবন বাঁচানোই কষ্টকর হয়ে পড়েছে।’
‘মব’ নিয়ে ‘ শান্তি উপদেষ্টা’র বিবৃতি !
সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদার বাসায় ঢুকে ‘মব’ তৈরি এবং তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছে অন্তর্বর্তী সরকার।
রোববার সন্ধায় রাজধানীর উত্তরায় এ ঘটনার পর রাতে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়।
সরকার বলছে, এ ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, “গ্রেপ্তারের সময় সৃষ্ট বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি ও অভিযুক্তকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার বিষয়টি সরকারের নজরে এসেছে।
তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা বেআইনি, আইনের শাসনের পরিপন্থি ও ফৌজদারি অপরাধ।”
সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার নূরুল হুদাকে একটি সুনির্দিষ্ট মামলায় রাজধানীর উত্তরা থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করে বলে বিবৃতিতে তুলে ধরা হয়।
জনগণের ভোট ছাড়া নির্বাচন সম্পন্ন করার অভিযোগে বিএনপির মামলার আসামি হওয়ার ছয় ঘণ্টা পরই কথিত জনতা উত্তরার বাসা থেকে আটক করে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদাকে। পরে তাকে হেফাজতে নেয় পুলিশ।
সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনারের বাসায় ঢুকে তাকে চরমভাবে অপদস্থ করেই ক্ষ্যান্ত হয়নি বিএনপি’র সন্ত্রাসীরা। ওই সময় তাদের কেউ কেউ ফেসবুকে লাইভও করেন।
এমন একটি লাইভে দেখা যায় নূরুল হুদার গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেন এক ব্যক্তি। তার গেঞ্জির কলার ধরে রেখে বক্তব্য দিতে দেখা যায় ওই ব্যক্তিকে।
এসময় ওই ব্যক্তির পাশে পুলিশের পোশাক পরা একজনকে দেখা যায়। উত্তরা পশ্চিম থানার একজন কর্মকর্তা বলেন, পুলিশ যাওয়ার আগেই ’মব’ তাকে যথেষ্ট হেনস্থা করে ফ্ল্যাট থেকে নামিয়ে আনে।
তাকে ডিম ছুড়ে মারা হয়েছিল। তারই ভবন থেকে দুটো জুতা নিয়ে রশির সঙ্গে বেঁধে গলায় ঝুলিয়ে দেয় ওই ব্যক্তিরা। একটি ভিডিওতে দেখা যায় তাকে ধরে থাকা লোকটি জুতার মালা থেকে একটি জুতা নিয়ে তাকে মারধর করছেন। পরে পুলিশ জুতার মালাটি খুলে নিয়ে সাবেক সিইসিকে হেফাজতে নেয়।
বিষয়টি নজরে আসার পর রাতে আইন নিজের হাতে তুলে না নেওয়ার অনুরোধ করে অন্তর্বর্তী সরকার বিবৃতিতে বলেছে, ‘‘সরকার দেশের সকল নাগরিকের প্রতি আবারও আইন নিজের হাতে তুলে না নেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছে।
‘‘অভিযুক্ত সকল ব্যক্তির বিচার দেশের আইন মেনে হবে এবং বিচারাধীন বিষয় ও ব্যক্তির ব্যাপারে আদালত সিদ্ধান্ত দেবেন।’’
এতে ’মব’ নিয়ে আবারও সবাইকে সতর্ক করে দিয়ে বলা হয়, ‘মব’ সৃষ্টি করে উচ্ছৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টিকারী সকলকে চিহ্নিত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে সব নাগরিককে সহনশীল ভূমিকা পালনের অনুরোধও করা হয়েছে বিবৃতিতে।
গত রোববার দুপুরে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় সাবেক সিইসি নূরুল হুদাসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে বিএনপি।
এ মামলার আসামির তালিকায় দশম, একাদশ ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় দায়িত্ব পালন করা তিন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনারদের পাশাপাশি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মোট ১৯ জনের নাম রয়েছে।
সাবেক সচিব নূরুল হুদা ২০১৭ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি সিইসি হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন।
তিনি ছিলেন দেশের দ্বাদশ সিইসি। তার নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের কমিশনের অধীনে ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনসহ স্থানীয় পর্যায়ের সব ভোট হয়। এ ইসির মেয়াদ শেষ হয় ২০২২ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি।
এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা সমালোচনা উঠে এসেছে।
সরকারের সাবেক সচিব ও নানা বিষয়ে বিভিন্ন টিভি টকশো’র জনপ্রিয় আলোচক আবু আলম লিখেছেন- র্ঘণ্য,অসভ,নিষ্ঠুর, নৃশংস আচরনের শিকার হয়েছেন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার।
নিন্দা করার ভাষা নেই। মবের মুল্লুক কি চলতেই থাকবে নোবেল বিজয়ী প্রধান উপদেষ্টা ??
অথচ গত ২০২৪ এর ৫ আগষ্ট টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশ্যে বক্তব্য দানকালে সেনাপ্রধান বলেছিলেন তিনি নাগরিকদেও জান-মালের নিরাপত্তা ও দেশের নিরাপত্তা বিধান করবেন, দায়িত্ব নিয়েছেন।
এরপর গত ২৫ ফেব্রুয়ারি অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তাদেও, এরপর অফিসার্স এড্রেস ও সবশেষ সেনা সদরের ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে মব সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার কথা দৃঢ়ভাবে ব্যক্ত করা হয়েছিল।
সুতরাং স্বাভাবিকভাবেই সেনাবাহিনীর ওপর দেশবাসী আস্থা রেখেছিল। কিন্তু সেই আস্থা বোধ হয় শেষ হতে চলেছে। অঅর তাই নানা সমালোচনার মুখে পড়েছেন সেনাপ্রধান ও সেনাকর্মকর্তাগণ।
সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক নজরুল কবির লিখেছেন- সরি, মাননীয় সেনাপ্রধান, আপনিও কথা রাখলেন না ! মব ভায়োলেন্স বন্ধ হলো না !
আপনার ক্ষমতা পাওয়ার ১ বছর পূর্তিও আগেই মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা চড়লো! লজ্জা!!!
মব সন্ত্রাসে সেনাবাহিনীর নিষ্ক্রিয়তায় বিক্ষুব্ধ হয়ে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা নুরুল আজিম রনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন- মেরুদন্ড-বিহীন সেনাবাহিনী!
বিগত ১০ মাস যাবৎ জাতির জান-মালের নিরাপত্তার দায়িত্ব নেওয়ার গাল-গল্প শুনিয়ে আসছেন। বাস্তবে- কি করেছেন?
মধ্যরাতে রাস্তায় চেকপোষ্ট বসিয়ে- গাড়ি চেক করে, কে মদ খেয়ে আসছে সেটা নিয়ে জেরা করেন।
সাংবাদিক ডেকে তাদের ভিডিও ভাইরাল করেন, বাসে যাত্রি বেশি কেন, ভাড়া বেশি কেন-সেটা নিয়ে জেরা করার ভিডিও গণমাধ্যমে ভাইরাল করেন, মাথায় হেলমেট নাই কেন- সে জেরার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করা ছাড়া গত দশ মাসে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অর্জন কি?
তারা বিগত ১০ মাসে অবৈধ সরকারের ছত্রছায়ায় চলমান মব সন্ত্রাস দমন করতে পারেনি, থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে পারেনি, দেশে চলমান ডাকাতি, চাঁদাবাজি নির্মূল করতে পারেনি, জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দিতে পারেনি।
অথচ তারা নাকি জাতিসংঘের মিশনে গিয়ে বিশ্ব শান্তি রক্ষায় কাজ করে। যারা ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার নিয়ে দেশে শান্তি রক্ষা করতে পারেনা, তারা বিদেশে গিয়ে আসলে কিভাবে শান্তি রক্ষা করেন এমন এক প্রশ্নের জবাবে ফেসবুকে একজন লিখেছেন- ‘তারা অনেকটা নির্মাণ শ্রমিকের মতো-রাস্তা, সেতু, স্কুল ইত্যাদি তৈরি করে।’
আরেকজন বিক্ষুব্ধ মুক্তিযোদ্ধা নাগরিক লিখেছেন- মব এর কাছে কি সারাদেশের মানুষ জিম্মি হয়ে গেলো?
আমি লক্ষ্য করছি যারা এভাবে নির্যাতিত হচ্ছে বা যাদের বাড়ী ঘরে আগুন দেয়া হচ্ছে তারা’তো গোত্রভিত্তিক অনেকে বসবাস করেন।
তাহলে আত্মীয় স্বজন “দায় দিয়েদি” তো প্রতিরোধ করবে বা বাঁধা দিবে এমনকি আহত বা নিহত হওয়ার কথা। আমরা কি আত্মীয়রা আসলে মন থেকে সবাইকে পরিত্যাগ করেছি?
নিউক্লিয়ার পরিবার গঠিত হওয়ায় এবং সংসারে আগত কর্মজীবি নারী তার আপন বলয় সব নিজ স্বার্থে ত্যাগ করার ফলে বিপদে ভাই বোনেরা রাগে অভিমানে সম্পর্ককে অস্বীকার করছে।
একজন মুক্তিযোদ্ধা প্রাক্তন সচিব ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার জুতা পেটা খাবে আর তার আত্মীয়রা বসে দেখবে এটা হতে পারে না।
এরকম একজন মানুষের আত্মীয়রা অবশ্যই সামরিক বেসামরিক উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা থাকা স্বাভাবিক। তারা বিষয়টি হজম করছে কিভাবে?
সিইসি কি ইচ্ছা করলে নির্বাচন সুষ্ঠু করতে পারতেন? তিনি রুটিন দায়িত্ব পালন করেছেন। তার দায়িত্ব পালনে অবহেলা থাকলে বিচার হোক। কিন্তু এটা কি?
বিএনপির নেতৃত্ব নিশ্চই এটাকে অনুমোদন দেয় না। তা হলে সকল সিইসিকে জুতা পেটা করতে হবে। কারণ কোন নির্বাচনে যে দল হারে সে অভিযোগ করে কারচুপি হয়েছে।
অন্যায়ের প্রতিরোধ নিজ থেকে প্রথম করতে হয়।দেখলাম পুলিশ বা সিইসি নিজেও হাত দিয়ে প্রতিরোধ করছেন না। মরার আগেই সকল মুক্তিযোদ্ধা বাকরুদ্ধ হয়ে মারা যাচ্ছে এই ভেবে কি বাংলাদেশ গড়ার জন্য যুদ্ধ করেছিলাম?
হ্যাঁ নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে তার জন্য বিচার হতে পারে। কিন্তু এভাবে অপমান নয়। কিছুটা বিতর্ক থাকলেও বিগত ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের নির্বাচন ছাড়া কোন নির্বাচন বাংলাদেশে সুষ্ঠুভাবে হয়নি বলতে হবেই।
এর ফলে ক্ষমতাও হস্তান্তরিত হয় সুষ্ঠুভাবে। সামরিক বাহিনী মব প্রতিরোধে জোরালো বক্তব্য দিলেও এখনো মব হচ্ছে।
আমরা মব সংস্কৃতির অবসান চাই। দলমত নির্বিশেষে মানুষের মান সম্মান নিয়ে বেঁচে থাকার অধিকার নিশ্চিত হোক। মব সৃষ্টিকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হোক।
অন্যায়ভাবে আমাকে বা আমার ভাইবোনকে মেরে আপনি নিরাপদে রাস্তায় চলাচল করবেন তা কি করে হয়? মানুষকে স্বস্তি দিন।
অন্যায়কারীর জন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থা আছে তারা দেখবে। মব করে পুলিশি ভূমিকা থেকে বিরত থাকুন।
মোবারক আলী ফেইসবুকে লিখেছেন, সংবিধান রক্ষার শপথ নিয়ে সংবিধান নিয়ে ছিনিমিনি খেলার অংশ হয়ে যাচ্ছে তারা, বহি শত্রুর আক্রমণ প্রতিহতের সামর্থ্য তো দূরের কথা নিজেদের ঐক্য পর্যন্ত ধরে রাখতে পারে নাই।
তারা এখন রাজনৈতিক আদর্শে দলে দলে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। দেশের এই কঠিন সময়ে স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, সংবিধানের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে তাদের ভুমিকা রাখার পরিবর্তে নিজেদের বেতন ভাতার সুরক্ষা নিশ্চিত করা নিয়ে তারা ব্যস্ত সময় পার করছে।
মব সন্ত্রাস সহ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির ক্ষেত্রে তাদের উদাসীনতা প্রমাণ করে তারা ও পুলিশ বাহিনীর মতো ভীত হয়ে পড়েছে।
আমাদের দেশের নতুন গজিয়ে উঠা আবালদের হুমকিতেই নমনীয়তার সাথে অন্যায় অবিচার মেনে নেওয়া এই বাহিনীর যুদ্ধ করার বা প্রতিরোধ করার মতো মানসিক বা কৌশলগত সক্ষমতা নাই।
দেশের জন্য জীবন উৎসর্গ করার শপথ নিয়ে ভীত দিশাহীন এই সেনাবাহিনী কি আসলেই আমাদের দেশের জন্য কোন কাজে আসবে?
প্রতারক ইউনুস সরকারের ওপর জনগনের আস্থা নেই তা প্রমাণিত। তবে সেনাবাহিনী নিষ্ক্রিয় কেন বা তাদেরকে কোন অলৌকিক শক্তিবলে ( জাতিসংঘ মিশনে গেলে বিপুল অর্থের হাতছানি !) অথর্ব করে রাখা হয়েছে তাও এখন জনগনের প্রশ্ন।
গত তিনটি নির্বাচন নিয়ে আওয়ামীলীগের অনেক কারচুপি নিশ্চয়ই সমালোচনার উর্ধ্বে নয়। তা নিয়ে আওয়ামীলীগ সরকারের সময়েই প্রচুর সমালোচনা হয়েছে, এখনো হচ্ছে।
তবে ১৯৯৬ সালে ১৫ ফেব্রুয়ারি বিডিআর, সেনাবাহিনী দিয়ে ভোটারবিহীন নির্বাচন করেছিল। কিন্তু সেই নির্বাচনে গায়ের জোরে ক্ষমতা নিলেও তা অল্পকিছুদিন ছিল মাত্র।
সুতরাং বর্তমান চরম অস্থির পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীকেই তাদের ওপর যে সাংবিধানিক দায়িত্ব দেয়া রয়েছে তা পালনে সচেষ্ট হতে হবে।
প্রয়োজনে সেনাশাসন দিয়ে হলেও আওয়ামীলীগমহ সব দলের অংশগ্রহণে একটি অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক নির্বাচন দিয়ে সেনাবাহিনীকে ব্যারাকে ফিরে যাওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন দেশের অধিকাংশ জনগণ।
# ইশরাত জাহান, লেখিকা, প্রাবন্ধিক, ঢাকা