ছাত্র-তরুণদের সামরিক প্রশিক্ষণ দিয়ে নতুন সন্ত্রাসী গোষ্ঠী মানে নতুন জঙ্গী গোষ্ঠী তৈরী করার প্রকল্প নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। সরকারিভাবে ঘোষণা দিয়েই তা করা হচ্ছে, কোন রাখঢাক নেই তাতে।
এটি কি জঙ্গীদের সমন্বয়ে প্যারামিলিটারি গ্রুপ? কাদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে এই প্যারামিলিটারি জঙ্গী তৈরীর জন্য ইউনুস সরকার উঠেপড়ে লেগেছে?
দেশে সেনা-নৌ-বিমান, বিজিবি, র্যা ব, এপিবিএন, পুলিশ, আনসার থাকতে আবার স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা জঙ্গী আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া কি তার নিজের নিয়ন্ত্রণাধীন জঙ্গী বাহিনী তৈরী করতে চান ?

এমনিতেই নানা সময়ে নানা আচার আচরণ, কাজ ও বক্তব্যের মধ্য দিয়ে এই জঙ্গী তরুণ উপদেষ্টা বিতর্কের সৃষ্টি করেছেন। এই জঙ্গী সশস্ত্র বাহিনী কি বাংলাদেশে ইরান-আফগান স্টাইলে ইসলামী বিপ্লব ঘটানোর নতুন ষড়যন্ত্র করছে? এমন প্রশ্ন এখন ঘুরপাক খাচ্ছে বাংলাদেশের মানুষের মনে।

এরই মধ্যে গত ২০ ও ২১ অক্টোবর এই জঙ্গী আসিফ তার ফেইসবুক পোষ্টে ঘোষনা দিয়েছেন- “জাতীয় প্রতিরক্ষা জোরদারে দেশের ৭ টি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে প্রাথমিকভাবে ১৮-৩৫ বছর বয়সী মোট ৮,২৫০ জন যুব ও ৬০০ জন যুব নারীকে জুডো, কারাতে, তায়কোয়ানডো ও শ্যুটিং বিষয়ে আত্মরক্ষামূলক মৌলিক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে।”
স্বাভাবিকভাবেই আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার সাম্প্রতিক ঘোষণাটি শুনে যে কারও মাথায় হাত পড়ে যাবার কথা। জাতীয় প্রতিরক্ষা জোরদারের নামে ৮৮৫০ জন যুবক-যুবতীকে কারাতে, জুডো, তায়কোয়ান্ডো এবং আগ্নেয়াস্ত্রের প্রশিক্ষণ দেওয়ার পরিকল্পনা।
শুনতে হয়তো দেশপ্রেমের কথা মনে হতে পারে, কিন্তু যখন এই ঘোষণা আসছে একটি অবৈধ সরকারের পক্ষ থেকে, যারা জুলাই মাসে জঙ্গী সহিংসতা আর সামরিক বাহিনীর প্রত্যক্ষ সহায়তায় ক্ষমতায় এসেছে, তখন এই প্রশিক্ষণের আসল উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তোলা ছাড়া উপায় থাকে না।
গত চব্বিশের জুলাই-আগষ্টে যা হয়েছিল সেটা যে কোনো গনতান্ত্রিক আন্দোলন ছিলনা তাতো আর নতুন করে বলে দেয়ার অপেক্ষা রাখেনা। ‘মার্কিন ডিপস্টেট’ আর ইউনুসীয় ‘মেটিকুলাস ডিজাইন প্ল্যান’ এর অংশ হিসেবেই সুপরিকল্পিত নাশকতা ঘটানো হয়েছে।

যেখানে বিদেশি অর্থায়ন, জঙ্গি সংগঠনের সহযোগিতা এবং কিছু সামরিক ব্যক্তিত্বের মদদ ছিল যা দেশবাসীর কাছে স্পষ্ট হয়ে গেছে অনেক আগেই। রাস্তায় রক্ত ঝরেছে, সাধারণ মানুষ মারা গেছে, সম্পত্তি ধ্বংস হয়েছে। আর সেই বিশৃঙ্খলার সুযোগে নির্বাচিত একটি সরকারকে ‘জঙ্গী-সামরিক ক্যু’ করে উৎখাত করা হলো।
আর এখন সেই একই দাঙ্গাবাজ জঙ্গীরা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায অবৈধভাবে দখল করে তাদের ক্যাডার বাহিনীকে অস্ত্র প্রশিক্ষণ দিতে চাইছে।
মুহাম্মদ ইউনূস যাকে বলা হচ্ছে এই অবৈধ সরকারের প্রধান, তাঁর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন অনেক দিনের। সুদী মহাজনি ব্যবসার মাধ্যমে গরিব মানুষকে আরও গরিব করার পাশাপাশি তিনি এবার দেশের রাজনৈতিক ময়দানে নেমে পড়েছেন। কিন্তু কোনো গণতান্ত্রিক পথে নয়, সহিংসতা আর ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে। তার সাথে আছে আসিফ ভূঁইয়ার মতো জুলাইয়ের জঙ্গী সন্ত্রাসীরা, যারা এখন সরকারের মন্ত্রীর চেয়ারে বসে দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে খেলছে।
এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচির নামে আসলে কী করা হচ্ছে সেটা বোঝা কঠিন নয়। দেশের সাতটি কেন্দ্রে প্রায় নয় হাজার যুবক-যুবতীকে আগ্নেয়াস্ত্রসহ বিভিন্ন ধরনের সশস্ত্র প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। প্রশ্ন হলো, কেন? দেশে কি কোনো যুদ্ধ চলছে? নাকি এই অস্ত্র প্রশিক্ষিত বাহিনী দিয়ে জনগণের ওপর আরেকটি সহিংস আক্রমণের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে?
চব্বিশের জুলাই মাস থেকে যেভাবে সারাদেশে সাধারণ মানুষের ওপর হামলা হয়েছিল, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল, এখনো চলছে সে অত্যাচার-নির্যাতন-ভাংচুর-দখল সেই একই কায়দায় কি আবার আক্রমণ করার জন্য একটি সুশিক্ষিত বাহিনী তৈরি করা হচ্ছে ?

এটা কোনো স্বাভাবিক সরকারি কার্যক্রম নয়। একটি বৈধ সরকার যদি জাতীয় প্রতিরক্ষা নিয়ে চিন্তিত হয়, তাহলে সেটা করবে সেনাবাহিনীর মাধ্যমে, প্রতিষ্ঠিত প্রতিরক্ষা কাঠামোর মধ্যে থেকে।
কিন্তু যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আগ্নেয়াস্ত্রের প্রশিক্ষণ দেওয়ার ঘোষণা শুনলে যে কেউ বুঝবে এখানে অন্য কোনো এজেন্ডা কাজ করছে। এটা দেশরক্ষা নয়, এটা একটি রাজনৈতিক মিলিশিয়া বাহিনী গঠনের চেষ্টা।
যারা জুলাইয়ের জঙ্গী হামলা-মানুষ খুন-পুলিশখুন-পুলিশ পুড়িয়ে মেরে ঝুলিয়ে রাখা, একসাথে দেশের আশি শতাংশ থানা আক্রমণ, অগ্নিসংযোগ, অস্ত্র গোলাবারুদ লুটপাট, সরকারি অনেক সম্পত্তি জ্বালিয়ে পুড়িয়ে শেষ করে দেয়াসহ নানা মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে তাদের অনেককেই এখন ‘ বীর’ হিসেবে প্রচার করা হচ্ছে।

তাদেরকেই এখন আবার নতুন করে আইনী কাঠামোর মধ্যে গড়ে তোলা হবে আগ্নেয়াস্ত্রের প্রশিক্ষণ। এ বিষয়টি নিশ্চিত যে, এই প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জঙ্গী যুবকরা হীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই ব্যবহৃত হবে। আর এর ফলে দেশে আরেকটি রক্তক্ষয়ী সংঘাতের সংঘাতের আশংকা রয়েছে। আর সেই দায় কার ওপর পড়বে? যারা এই অস্ত্র প্রশিক্ষণের অনুমোদন দিচ্ছে, তাদের ওপরই।
জুলাই-আগষ্টের ‘সামরিক-জঙ্গী ক্যু’ ও তার পরবর্তী নানা কর্মকান্ড থেকে এ বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে, ইসলামী জঙ্গীদের মাধ্যমেই দেশকে আবার সেই মধ্যযুগীয় বর্বরতার যুগে ফিরিয়ে নেয়া হচ্ছে।
সামরিক-বেসামরিক বিভিন্ন প্রশাসন, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাঙ্গনসহ দেশের হেন কোন প্রতিষ্ঠান নেই যেখানে এই ইসলামী জঙ্গীবাদের লোকজনকে বসানো হয়নি।

তবে যুব মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে এই সামরিক প্রশিক্ষণ প্রাপ্তরা যে আরো উগ্র ইসলামী জঙ্গী সন্ত্রাসী হয়ে উঠবে তাতে কোন সন্দেহ নেই। প্রশাসনে বসে আছে জঙ্গীবাদের সমস্ত নেতারা,যাদের অধিকাংশই একেবারে ক্লিনসেভ-স্যুটেড-বুটেড আধুনিক পোশাকে বেশ ধরে আছে।
এজন্য নতুন করে যুবকদের অস্ত্র ট্রেনিং দেয়ার সুদুরপ্রসারী পরিকল্পনা নেয় হয়েছে। আর যতটুকু জানা গেছে এই ট্রেনিংয়ে কওমী মাদ্রাসার হেফাজতপন্থী থেকে শুরু করে জামায়াত শিবির, হিযবুত তাহরিরসহ বিভিণ্ন উগ্রবাদী ইসলামী জঙ্গী সংগঠনের তরুণদেরকেই এতে বেশি করে ঢোকানো হচ্ছে।
যুব মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট থাকলেও সেই ওয়েবসাইটের মাধ্যমেই ইসলামী বিপ্লবের তাত্ত্বিক ও সামরিক ট্রেনিংপ্রাপ্ত লোকজনই তাদেরকে যাচাই-বাছাই করে তালিকা করবে।
এই পুরো পরিকল্পনাটি একটি গণতান্ত্রিক দেশের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগজনক। একটি নির্বাচিত সরকারকে ক্যু করে ক্ষমতায় আসা লোকেরা এখন দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে নিজেদের মতো করে সাজাতে চাইছে।
তারা জাতীয় প্রতিরক্ষার নামে আসলে নিজেদের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করতে চাইছে। যা দেশের জন্য ভয়ংকর একটি পরিস্থিতি।
**আগে থেকেই সব ষড়যন্ত্রের ছক রেডি রেখেছিল আসিফ-নাহিদের নেতৃত্বাধীন এই জুলাই জঙ্গীরা।
এই জঙ্গী টোকাই উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া এ বছর যে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছিলেন তার ভেরিফায়েড ফেইসবুকের মাধ্যমে তা নিশ্চয়ই দেশবাসি ভুলে যাননি।
তিনি বলেছিলেন, “চব্বিশের ৫ আগষ্ট সরকার পতনের চূড়ান্ত আন্দোলন যদি সফল না হতো তাহলে অস্ত্র তুলে নেওয়ার ঘোষণা দিতাম।”
দৈনিক জনকন্ঠের অনলাইনে গত ২১মার্চ ২০২৫ প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুযায়ী অন্তবর্তী সরকারের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, ৫ তারিখে (২০২৪ এর ৫ আগষ্ঠ) সফল না হলে আমাদের সশস্ত্র অভ্যুত্থানের প্রস্তুতিও ছিল।
২১ মার্চ নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক ভিডিও বার্তায় এ কথা বলেন আসিফ। উপদেষ্টা আসিফ তার পোস্টে বলেন, যখন থেকে আমরা নিশ্চিত ছিলাম শেখ হাসিনাকে চলে যেতে হবে; আমাদের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনাটা করতে হতো।
আমরাতো শেখ হাসিনা চলে যাওয়ার পরে দেশটাকে ছেড়ে দিতে পারি না। তো এ জায়গা থেকে দেখা যায়,ওই সময়টা আসলে এটাও বিশ্বাস করা কষ্ট হয়ে যায়।
৫ তারিখের মধ্যেই বিষয়টা হয়ে যাবে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, আমাদের সশস্ত্র অভ্যুত্থানের প্রস্তুতিও ছিল। এমনকি ৫ তারিখে যদি আমরা সফল না হতাম তাহলে আমরা অস্ত্র তুলে নেওয়ার ঘোষণা দিতাম।
নাহিদ ভাই (সাবেক উপদেষ্টা ও এনসিপি’র আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম) ভিডিও বার্তা রেডি রেখেছিল। এমনকি আমি কি ঘোষণা দিব সেটাও রেডি ছিল।

এ বছরই ২৯ জুন মরক্কো যাওয়ার সময় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রবিবার (২৯ জুন) সকালে এই আলোচিত জঙ্গীনেতা ও ইউনুস সরকারে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়ার ব্যাগ থেকে গুলির ম্যাগাজিন উদ্ধার করা হয়।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে দিনভর আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। একটি সংবাদমাধ্যম এ বিষয়ে তখন খবর প্রবাশ করেও খুব অল্প সময়ের মধ্যেই তা সরিয়ে ফেলে।
সেদিন রাতেই আবার তিনি তার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে এক পোস্টে ব্যাগে ম্যাগাজিন পাওয়ার বিষয়ে ব্যাখ্যা দেন।
তিনি সেখানে দম্ভের সাথেই ঘোষণা দিয়ে বলেছেন- ‘‘নিরাপত্তার স্বার্থে আমার লাইসেন্স করা বৈধ অস্ত্র আছে। গণঅভ্যুত্থানের নেতৃত্বের ওপরে কয়েক দফায় যেভাবে হত্যাচেষ্টা চালানো হয়েছে, তাতে অস্ত্র রাখাটাই স্বাভাবিক। যখন সরকারি প্রোটোকল বা সিকিউরিটি থাকে না, তখন নিজের এবং পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিতের উদ্দেশ্যে লাইসেন্সড অস্ত্র রাখা।”
তিনি আরো লিখেছেন, ‘‘মরক্কোর মারাকেশে অনুষ্ঠিতব্য ওআইসি ইয়ুথ ক্যাপিটাল ইন্টারন্যাশনাল প্রোগ্রামে অংশগ্রহণের জন্য আজ (রবিবার) ভোর ৬টা ৫০ মিনিটে ফ্লাইট ছিল।
ভোরে প্যাকিং করার সময় অস্ত্রসহ একটা ম্যাগাজিন রেখে এলেও ভুলবশত আরেকটি ম্যাগাজিন ব্যাগেই থেকে যায়, যেটা স্ক্যানে আসার পর আমার প্রোটোকল অফিসারের কাছে হস্তান্তর করে আসি। বিষয়টি সম্পূর্ণ আনইন্টেনশনাল। শুধু ম্যাগাজিন দিয়ে আমি কী করবো ভাই? ইন্টেনশন থাকলে অবশ্যই অস্ত্র রেখে আসতাম না।
আর ইউনুস সরকারের আরেক জঙ্গী স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে: জে: জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীকে সাংবাদিকেরা আসিফ মাহমুদের কাছে বিমানবন্দরে অস্ত্র পাওয়ার বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি অত্যন্ত হালকাভাবে বলেন, এটি অনেকটা দশমার বদলে মোবাইল বা মোবাইলের বদলে চশমা ব্যাগে ঢুকিয়ে ফেলার মত বিষয়।

তার মানে এই সুচতুর সাবেক সামরিক অফিসার স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর এভাবে ছ্যাবলামি করে জবাব দেয়ার মানে কি তা নিশ্চয় সচেতন দেশবাসী বুঝেছেন। কিছু প্রশ্নতো থেকেই যায়।
বয়স, আয় এবং তার নির্দিষ্ট পরিমান আয়কর দেয়ার বিষয়ও জড়িত এই অগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স পেতে। তা চেক করলে দেখা যাবে সেক্ষেত্রে যথেষ্ট গন্ডগোল-গোজামিল রয়েছে। তবে কিছু ব্যতিক্রম রয়েছে মন্ত্রী- এমপিদের ক্ষেত্রে।
ব্যতিক্রমের সুযোগ থাকা সত্ত্বেও এখন কয়েকটি প্রশ্ন সামনে এসেছে। উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেছেন, তার লাইসেন্স করা আগ্নেয়াস্ত্র আছে।
প্রশ্ন হলো:
১. তিনি কোন ধরনের আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স নিয়েছেন?
২. কোন সময়ে নিয়েছেন?
৩. বিমানবন্দরে যে ম্যাগাজিন ধরা পড়েছে, তা পুলিশ হেফাজতে নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা না করেই কেন তার প্রটোকল অফিসারকে দেয়া হলো?
উড়োজাহাজে বৈধ অস্ত্র হ্যান্ড ব্যাগে বহনের নিয়ম নেই।
আর এই টোকাই জঙ্গী উপদেষ্টা বিপুল পরিমাণ টাকার আয়কর যদি দিয়েই থাকেন তাহলে সেই টাকার উৎস কি? কোথায় পেলেন তিনি সেই টাকা? তার স্কুলশিক্ষক পিতার সম্পত্তি কি এত পরিমান ছিল? এবং তা যদি না হয় তাহলে কোন যুক্তি ও আইনে তিনি এই আগ্নেয়য়াস্ত্রের লাইসেন্স পেয়েছেন? জানি এসবের কোন জবাব নেই।
কারণ এখন আইন-কানুন সব এই ইউনুসীয় জঙ্গী সরকারের নিয়ন্ত্রনে। তারা যা বলবে সেটাই আইন। সেটা করবেন সেটাই কানুন। মানে জোর যার মুল্লুক তার বলে যে কথা চালূ আছে, বাংলাদেশেও ঠিক তাই চলছে।
যেহেতু একটি অস্বাভাবিক- শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে দেশে, তাই এদেশের মানুষও শুধু অপেক্ষা করে আছে সঠিক সময়ের। যখন সবকিছু মিলে মানুষ ত্যক্ত বিরক্ত হয়ে উঠবে তখন শুধু কোন একটি সঠিক নেতৃত্ব থেকে সঠিক ডাক আসলেই হবে।
তখন এসব সশস্ত্র জঙ্গী- সেনা- বিজিবি-মিলিশিয়া কোন কিছু দিয়েই আর রক্ষা করতে পারবেনা ইউনুসীয় সরকার তাদের ক্ষমতা-গদি।
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর যখন বিশ্বের অন্যতম শক্তিধর পাকিস্তানী সামরিক বাহিনী ( বলা হতো তখন) ৯৫ লাখ সশস্ত্র অফিসার-সৈন্য ও তাদের এদেশীয় রাজাকার- আলবদর- আলশামস বাহিনী স্যারেন্ডার করতে বাধ্য হয়েছিল বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ভারতের সহায়তায় গঠিত মিত্র বহিনীর কাছে। নিশ্চয়ই সেই স্যারেন্ডারের কথা ভুলে যায়নি একাত্তরের পরাজিত দেশি বিদেশী অপশক্তি।
তা মার্কিন-পাকিস্তান-চীন সমর্থিত বা মার্কিন-পাকিস্তান-তুরষ্ক সমর্থিতই হোক না কেন। একাত্তরের সেই মুক্তিযোদ্ধারা হয়তো অনেকেই নেই। কিন্তু পরবর্তী প্রজন্মতো তৈরী আছে। সেই প্রজন্ম নিশ্চয় জেগে উঠে তার প্রতিবাদ ও প্রতিরোধের জন্য আবার ফিনিক্স পাখির মত জেগে উঠে এই উগ্র সাম্প্রদায়িক জঙ্গী সশস্ত্র গোষ্ঠীকে বিনাশ করবেই।
তবে এখনই সাবধান হতে হবে নতুন ষড়যন্ত্র থেকে।
# নুরুল ইসলাম আনসারি, লেখক, প্রাবন্ধিক।
