অতীতেও দেখা গেছে বাংলাদেশের রাজনীতি চাঙ্গা হয় শীতকালে। মোটামুটি নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি এ কয়মাস প্রকৃতি অনেকটা শান্ত থাকায় রাজনৈতিক দলগুলো তাদের সভা-সমাবেশসহ নানা আন্দোলন করে থাকে।
তবে ২০২৫ এর নভেম্বরে রাজনৈতিক ঘূর্ণিঝড় শুরু হয়ে গেছে। আর সেই ঘূর্ণিঝড় যদি সমুদ্রে হয় তাহলে তা যে সুনামীতে পরিণত হবে অনিবার্যভাবে সে আর বলার অপেক্ষা রাখেনা।
জঙ্গী ইউনুসীয় সরকার ও তার ষড়যন্ত্রের সহযোগীদের হঠাতে বাংলাদেশে সেই রাজনৈতিক সুনামী বোধহয় আসন্ন।
এজন্যই কথাগুলো বলছি যে, আমরা দেখলাম গত চব্বিশের ৫ আগষ্টে আওয়ামীলীগ ও শেখ হাসিনার সরকারকে ষড়যন্ত্র করে ক্ষমতা থেকে সরানোর পর থেকে দলটির ওপর যে ঝড়-ঝাপটা যাচ্ছে তা অনেকটাই সামলে নিয়ে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে এদেশের মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দানকারি দলটি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তাঁর দলের অনেক নেতাকর্মীই দেশ ছাড়া। হাজার হাজার নেতাকর্মী কারাগারে।অনেককেই খুন করা হয়েছে, গুম করে ফেলা হয়েছে। কিন্তু যে দলটির ভিত্তি রয়েছে এদেশের মাটি আর গণমানুষের মধ্যে তাকে শেষ করে ফেলতে চাইলেই কি আর পারা যায়?
বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায়-সেই পাকিস্তান আমল থেকে অদ্যাবধি এই আওয়ামীলীগের ওপর কম স্টীমরোলার চলেনি।
কিন্তু সাময়িকভাবে দলটি বিপাকে পড়লেও আবার ঠিকই ঘুরে দাঁড়িয়েছে এ দেশের আপামর জনসাধারণকে নিয়ে।
তবে হ্যাঁ বিভিন্ন সময় দলের নেতাদের মানে নীতিনির্ধারকদের সঠিক পদক্ষেপের অভাবে, দলের ত্যাগী নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন না করায় দল বিপাকে পড়েছে। সেই সাথে রাজনৈতিক মিত্র কারা হবে বা থাকলে দলটির জন্য ভালো হবে এবং কারা গিরগিটির মতো রং বদলে মীরজাফর-মোশতাকদের মত দলকে ছোবল মারবে তা নির্ধারণে অনেক অদূরদর্শী পদক্ষেপও দলটিকে পিছিয়ে দিয়েছে। গত চব্বিশে জুলাই-আগষ্টের দেশি-বিদেশী আন্তর্জাতিক চক্রান্তে দলের এমন পরিণতি কিন্তু সেটিকেই স্মরণ করিয়ে দেয়।
বাংলাদেশের স্থপতি ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নানা রাজনৈতিক সীমাবদ্ধতা ছিল সেটি যেমন অস্বীকার করা যাবেনা। কিন্তু সেই সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও তাঁর মতো এমন দেশপ্রেমিক জাতীয়তাবাদী নেতার উত্থান হয়েছিল বলেই একটি রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বিশ্বের মানচিত্রে একটি স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম হয়েছিল।
আর সেই স্বাধীন দেশেই ১৯৭৫ এর ১৫ আগষ্ট তাঁকে সপরিবারে হত্যা করলো পাক-মার্কিন চক্র। এটি মূলত একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের প্রতিশোধ নিয়েছিল তারা। কিন্তু গত চব্বিশে আবারো শেষবারের মত বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ও তাঁর বোন শেখ রেহানাকেও নির্মূল করে দিতে চেয়েছিল। সেই ষড়যন্ত্রের দিকেই যাচ্ছিল। কিন্তু সৌভাগ্যক্রমে এ দুজনকে অত্যন্ত দ্রুত অথচ নানা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে প্রাণে রক্ষা করা গেছে।

তাদেরকে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনী অনেকটা বাধ্য হয়েই আকাশপথে বাংলাদেশের উড়োযানে করে ভারতে পাঠিয়ে দিয়েছে। অন্তত প্রাণে বেঁচেছেন তাঁরা।
তবে এই দুই বোনের জন্য এটিই যে প্রথম নির্বাসন তা কিন্তু নয়। পঁচাত্তরের সেই বিয়োগান্তক ঘটনার পর ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী যে মহানুভবতার সাথে তাঁদেরকে আশ্রয় ও বাঁচার সংস্থান করে দিয়েছিলেন তা ভুলে গেলে চলবেনা।
আবার গত ২০২৪ এর ৫ আগষ্টও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আন্তরিক সদিচ্ছায় এই দুই বোন বেঁচে আছেন। যে শেখ হাসিনা পঁচাত্তরে জাতীয় রাজনীতি করতেন না তিনিই পরবর্তীতে বিধ্বস্থ দলটির দায়িত্ব নিয়ে নানা আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে জনতার ম্যান্ডেট নিয়ে সরকার পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছিলেন।

বেশ কয়েকদফায় দেশ পরিচালনার এই দায়িত্ব পালনের সময়ে নানা ত্রুটি যেমন ছিল তেমনি সফলতার অংশটুকুও নেহাত কম নয়। তবে এটি অস্বীকার করার উপায় নেই যে, শেষদিকে দলীয় প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুধু দেশের কাঠামোগত ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে বেশি জোর দিয়েছেন। কিন্তু দলটিকেও যে গোছাতে হবে তা আর খেয়াল ছিলনা।
বেশিমাত্রায় সামরিক-বেসামরিক আমলাতন্ত্রের ওপর নির্ভরশীলতা দলটিকে জনগণ থেকে অনেকটাই দূরে ঠেলে দিয়েছে। দলীয় ত্যাগী নেতা-কর্মীরাও দূরে ছিল।
তবে প্রবাসে থাকলেও এরই মধ্যে অতি সম্প্রতি (গত ২৩ অক্টোবর) প্রথমে আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা (অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস) এপি’র সঙ্গে শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের সাক্ষাৎকার বাংলাদেশের ক্ষমতায় অবৈধ দখলদার ইউনুস সরকারের মধ্যে মধ্যে কাঁপন দেখা দেয়।

এর কয়েকদিন পরেই গত ২৯ অক্টোবর তিনটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম রয়টার্স, এএফপি ও দ্য ইন্ডিপেনডেন্টকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সাক্ষাৎকারে সাবেক প্রধানমন্ত্রী গত চব্বিশের জুলাই-আগষ্টের জঙ্গী সামরিক ক্যু, নানা হত্যাকান্ড-ধ্বংসযজ্ঞ, আসন্ন নির্বাচন, দেশে ফেরা, ট্রাইব্যুনালে তাঁর বিচার এবং রাজনৈতিক উত্তরাধিকার নিয়ে নানা কথা বলেছেন। যা বিশ্বের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে।
এসব সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হওয়ায় অবৈধ-প্রতারক-ভন্ড ইউনুস সরকার ও তার সহযোগীদের মধ্যে প্রচন্ড কম্পন শুরু হয়ে যায়। অথচ শেখ হাসিনা দেশে নেই।
আওয়ামীলীগের অনেক নেতাকর্মীর অনুপস্থিতিতেই শুধুমাত্র সাক্ষাৎকার যে কতটা ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে ইউনুস সরকার-জামায়াত-বিএনপি ও কিংসপার্টি এনসিপি’র মধ্যে তা তাদের অবস্থান ও কর্মকান্ডে দেখা গেছে।
এমনিতেই গত ১৫ মাসেরও বেশি সময়ের শাসনকালে ইউনুস ও তার সহযোগীরা দেশে-বিদেশে নানাভাবে যে পরিমাণ সমালোচনার শিকার হচ্ছে তাতে করে এখন সত্যিকার অর্থেই ইউনুস ‘ ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি’ অবস্থায় রয়েছে।
কারণ বাইডেন প্রশাসনের যে মার্কিন ডিপস্টেটের ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে ইউনুস গংদের বাংলাদেশের ক্ষমতায় বসানো হয়েছিল তা এখনকার মার্কিন ট্রাম্প প্রশাসন অনেকটাই তুলে নিয়েছে । পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মহলেও ইউনুসের সমর্থন অনেকটাই কমে গেছে।

গত ১৫ মাসে ইউনুস যেসব বিদেশ সফর করেছেন সেখানে তিনি পাননি কোন রাষ্ট্রীয় আতিথেয়তা, মর্যাদা। কিন্তু তিনি বেহায়ার মতো গিয়েছেন, আর তার প্রচার সচিব মানে ডাষ্টবিন শফিক ও তার দলবল নানাভাবে বাংলাদেশের মিডিয়াতে প্রচার করেছে।
অবশ্য দেশের মিডিয়াগুলোতে তা প্রচার না করলেই বরং ঝামেলায় পড়বে তাই করেছে। অবশ্য এই জঙ্গী-অবৈধ সরকারকে তেল দিয়ে চলে এমন মিডিয়ার সংখ্যাও কম নেই দেশে।
আগামী ১৩ নভেম্বর বাংলাদেশে মানবাধিকার বিরোধী অপরাধ বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক ট্রাইবুন্যাল রয়েছে সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার রায় ঘোষণা করা হবে। কিন্তু এই বিচার প্রক্রিয়া মূলত একটি সাজানো বিষয় যেটিকে ক্যাঙ্গারু আদালতের বিচারকাজ হিসেবেই বিবেচিত হচ্ছে এদেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে। তবে আওয়ামীলীগও বসে নেই।
তারাও নানাভাবে বিভিন্ন রাষ্ট্র, মানবাধিকার সংস্থা ও রাজনৈতিক গবেষণা করে এমন প্রতিষ্ঠানের কাছে ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মানবাধিকার আদালতে ইউনুস সরকারের অত্যাচার ও অব্যবস্থাপনা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়গুলো তুলে ধরছে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যেসব স্থানে গণতান্ত্রিকভাবে সভা সমাবেশ করা যায় সেসব দেশে আওয়ামীলীগ ও তার অনুসারিরা সভা সমাবেশ করছে। দেশের প্রকৃত অবস্থাটি তুলে ধরে মানবাধিকার ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য বিশ্ব বিবেকের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছেন।
আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম, মানবাধিকার সংস্থা, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার যেসব সংস্থা পর্যবেক্ষক সংস্থা রয়েছে তারাও নানাভাবে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে এ ব্যাপারে রিপোর্ট ও কিছু সুপারিশমালা দিয়েছে ও দিচ্ছে।
অধিকাংশ মানবাধিকার সংস্থা ও আন্তর্জাতিক রাজনীতি পর্যবেক্ষণ সংস্থা বাংলাদেশে সব দলের অংশগ্রহণমূলক, মানবাধিকার সংরক্ষিত হয় এমন একটি গণতান্ত্রিক উপায়ে নির্বাচন করার কথা বলছেন।
কিন্তু ‘নোবেল লরিয়েটে ইউনুস’ গং সেদিকে যাচ্ছেনা। তারা নিত্যনতুন ফন্দি বের করছে কীভাবে আওয়ামীগকে আরো দমন করে জাতীয় সংসদ নির্বাচন না দিয়ে ক্ষমতায় আরো বেশিদিন থাকা যায়। কিন্তু সরকারকে নানামুখী আন্তর্জাতিক চাপ সহ্য করতে হচ্ছে।
বিশেষ করে মার্কিন ট্রাম্প প্রশাসন ও মার্কিন বলয় ও বন্ধুপ্রতীম যেসব প্রভাবশালী দেশ রয়েছে সেসব দেশ থেকেও নানামুখী চাপ অব্যাহত রয়েছে ইউনুস সরকারের ওপর।
তার উপর আগামী ১৩ নভেম্বর আওয়ামীলীগ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায় ঘোষণার দিনে ঢাকায় যে সর্বাত্মক লকডাউন আহ্বান করেছে তাতে সরকারের অবস্থান অনেকটা নড়বড়ে হয়ে গেছে।
এমনিতেই এই সরকার টিকে আছে সশস্ত্র বাহিনীর ওপর নির্ভর করে। এতদিন সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার দিয়ে তাদেরকে মাঠে রাখা হয়েছিল। কিন্তু গত ৫ নভেম্বর থেকে ৫০ শতাংশ সেনাবাহিনীকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। আর যে বাকী ৫০ শতাংশ রয়েছে তারাও খুব একটা গা করছেনা আর ইউনুস সরকারের আচার-আচরণে।
অপরদিকে পুলিশের মধ্যে তেমন গরজ নেই অযথা আওয়ামীলীগের সঙ্গে গায়ে পড়ে বিরোধ বাঁধানোর। তারা অনেকটা দোদুল্যমানতায় রয়েছে।
তাছাড়া এই জামাত-শিবির-বিএনপি ও তৎকালীন বৈষম্যবিরোধী জঙ্গী সন্ত্রাসীরা পুলিশের ওপর যে অত্যাচার ও হত্যাকান্ড চালিয়েছে তাও নিশ্চয়ই তারা ভুলে যাননি। গত চব্বিশের জুলাই-আগষ্টে কতজন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছিলেন তার সঠিক পরিসংখ্যান না পাওয়া গেলেও বিভিন্ন সূত্রে যা জানা গেছে তাতে এই সংখ্যা সাড়ে তিন হাজারের কম নয়।
পুলিশ হত্যা করে উল্টো করে ঝুলিয়ে রাখা ও অন্তঃস্বত্তা পুলিশ সদস্যকে তার শত অনুরোধ সত্ত্বেও অমানুষিকভাবে তাকে ও তার সন্তানকে খুন করার যে নির্মম-নৃশংসতা তারা দেখিয়েছে তাও নিশ্চয় পুলিশ বহিনীর সদস্যরা ভুলে যায়নি।

অনেক পুলিশ সদস্য এখনো নিঁখোজ, অনেকে পলাতক রয়েছেন। এমনভাবে যারা অত্যাচার-খুন করেছে, একযোগে থানা জ্বালিয়ে দিয়েছে, অস্ত্র, গোলাবারুদ লুট করেছে তাদেরকে নিশ্চয়ই ভালো চোখে দেখার কোন কারণ নেই। কিন্তু তারপরও চাকরি বাঁচানোর তাগিদে অনেকে নানা অন্যায় আদেশ মানতে বাধ্য হচ্ছেন।
আওয়ামীলীগ ঘোষিত লকডাউন ঘিরে ইতিমধ্যেই ইউনুস সরকার ও তার সমর্থিত রাজনৈতিক দল বিশেষ করে জামায়াত-এনসিপি ও অন্যান্য ইসলামী দলগুলেঅর মধ্যে চরম আতংক বিরাজ করছে। সরকার ইতিমধ্যেই সারাদেশে আওয়ামীলীগ নেতাকর্মী যারা রয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে স্টিমরোলার চালানো শুরু করে দিয়েছে নতুন করে।
এরই মধ্যে সারাদেশে বিভিন্ন জায়গা থেকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে শত শত নেতাকর্মীকে। পিচ্ছি আসিফ বা বাচ্চা আসিফ হিসেবে পরিচিত সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া ইতিমধ্যেই তার মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দেয়া অস্ত্র ও জঙ্গী প্রশিক্ষিত তরুণ মিলিশিয়াদেরকে মাঠে নামিয়েছে পুলিশের ছত্রচ্ছায়ায়।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে অন্তত ৫ হাজার এমন সশস্ত্র মিলিশিয়াকে মাঠে নামানো হয়েছে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদেরকে দমন করার জন্য। এদেরকে সরাসরি পুলিশ হেডকোয়ার্টার থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।
এসব মিলিশিয়াদের মধ্যে অধিকাংশই হচ্ছে ইসলামী ছাত্র শিবির, হেফাজত ও হিযবুত তাহরীরসহ মাদ্রাসার শিক্ষার্থী। এদেরকে কৌশলে ব্যবহার করা হচ্ছে আওয়ামীলীগকে দমন করার জন্য।
তবে এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে নানা বাধা উপেক্ষা করে আওয়ামীলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা মাঠে নেমে গেছে। বিক্ষোভ মিছিল হচ্ছে। নানা জায়গা থেকে সংঘাতের খবরও পাওয়া যাচ্ছে।
ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে কয়েকটি গাড়ি পোড়ানো, ককটেল বিস্ফোরণ করাসহ নানা নাশকতার খবর পাওয়া যাচ্ছে। তবে এসব যে আন্দোলন আহ্বানকারিরা করছে তা কিন্তু নয়। গত জুলাই-আগষ্টে যে জঙ্গী বাহিনী নানা নাশকতা করেছিল তারাই মূলত এসব নাশকতা চালিয়ে উল্টো আওয়ামীলীগ ও আন্দোলনকারিদের ওপর দোষ চাপাতে চাইছে।

কারণ তাহলে দেশের মানুষের কাছে আওয়ামীলীগের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করা যাবে। পাশাপাশি বহির্বিশ্বেও একধরনের নেতিবাচক প্রচারণা চালাতে পারবে সরকার।
সবকিছু মিলিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতির মাঠ প্রচন্ড রকমের অস্থির হয়ে উঠছে। ইউনুস ও তার সমর্থিত অবৈধ সরকারের বিরুদ্ধে যে আন্দোলনে নেমেছে সেখান থেকে তাদের ফিরে আসার কোন উপায় নেই। কৌশলগত কারণে হলেও এই অসমান একটি যুদ্ধ তাদেরকে করতেই হচ্ছে। তবে অযথা বোকার মত শক্তি ক্ষয় না করে কৌশলগত অবস্থানে থেকে যদি আওয়ামীলীগ ত্যক্ত-বিরক্ত মানুষকে সাথে নিয়ে আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে তাহলে একটি সময়ে বিজয় আসবেই।
তবে সেজন্য অবশ্যই সহনশীল হতে হবে তাদেরকে। পাশাপাশি আন্দোলনের কৌশল-নেতৃত্ব ও সঠিক পন্থার মধ্য দিয়েই এগুতে হবে অতীতের তিক্ত অভিজ্ঞতাকে মাথায় রেখে। যে আন্দোলন জনতার, সে আন্দোলন কখনো বৃথা যায়না।
# নুরুল ইসলাম আনসারি, লেখক, প্রাবন্ধিক।
