নব্বইয়ের দশকে সাবেক সামরিক স্বৈরাচার এরশাদকে ( লে: জে: হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ) বিশ্ব বেহায়া নামে আখ্যা দিয়েছিলেন অমর শিল্পী পটুয়া কামরুল হাসান।

কিন্তু গত ১১ মাস ধরে বাংলাদেশে ঘাড়ে জগদ্দল পাথরের মত যে প্রতারক-ভন্ড-ইসলামী জঙ্গীর মদতদাতা- মেটিকুলাস ডিজাইনের প্রবক্তা ইউনুস চেপে বসেছে তাকে কি উপমা দেয়া যায় বলুনতো ? আমার শব্দ ভান্ডারে এমন কোন যুঁথসই শব্দ খুঁজে পাচ্ছিনা।

এরশাদ যদি বেঁচে থাকতেন তাহলে তিনি নিশ্চয়ই ইউনুসীয় কর্মকান্ড দেখে তাকে স্যালুট বা কদমবুসি করার জন্য ছুটে যেতেন তার কাছে। হয়তো এমনটাই বলতেন- আমি যদি বিশ্ববেহায়া হই, তাহলে আপনিতো সৌরজাগতিক বেহায়া।

আমাদের এই নোবেল লরিয়েট প্রফেসর ড. মুহম্মদ ইউনুসের একটি গল্প মনে পড়ে গেল। এটি তার নিজস্ব স্বীকারোক্তিমুলক বয়ান। যা লেখা রয়েছে তার লিখিত ‘গ্রামীণ ব্যাংক ও আমার জীবন’ নামের বইতে, আমি এমনটিই মনে করতে পারি।

ইউনুসের ( তখন তিনি সাহেব হয়ে ওঠেননি) বয়স তখন বারো বছর। তাই ভদ্র ভাষায় ইউনুস সাহেব বলতে পারছিনা বলে দু:খিত। পরিবারের সাথে থাকেন চট্টগ্রাম নগরীর ব্যস্ততম ব্যবসায়িক এলাকা ২০, বক্সির হাট রোডে।

বই পড়তে পছন্দ করেন। কিন্তু সেই ৫০-এর দশকে বাংলা বই খুব অপ্রতুল। সেসময় কলকাতা থেকে ছোটদের মাসিক পত্রিকা ‘শুকতারা’ প্রকাশিত হত।

ইউনুসের চিন্তা-কিভাবে এই পত্রিকা ফ্রি পাওয়া। সে সময় পত্রিকা ফ্রি পাওয়ার একটি উপায় ছিল। তা হলো, বিভিন্ন পত্রিকা তার পাঠকদের জন্য প্রতিযোগিতা আয়োজন করতো।

আগের সংখ্যার বিজয়ী প্রতিযোগীর নাম ঠিকানা পত্রিকা পরের সংখ্যায় প্রকাশিত হয় এবং পুরষ্কার হিসাবে পত্রিকা বিশেষ ছয় মাস বা ১ বছরের ফ্রি সাবস্ক্রিপশন প্রদান করতো। এইসব আমরা এখনও দেখি। সেই ৫০-এর দশকেও সেই সুযোগ ছিল।

এতটুকু পড়ে আপনারা হয়তো ভাবছেন, ইউনুস এমন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয়েছিলেন নিশ্চয়ই। মেধাবী মানুষ, হতেই পারেন। কিন্তু আসলে বিষয়টি তা নয়।

ইউনুস এক অভিনব পন্থা আবিষ্কার করে ফেললেন। করেছিলেন। আমার ধারণা আজ এত বছর ধরেই তিনি সেই পন্থাটিই অবলম্বন করে এতটুকু উঠেছেন।

এই কিশোর ইউনুস যেটা করেছিলেন তা অনেকেই হয়তো জানেন পাঠকেরা যারা ড. ইউনুসের সেই বইটি পড়েছেন। তিনি পত্রিকার পূর্ববর্তী সংখ্যায় প্রকাশিত একজন বিজয়ীর নাম বেছে নিয়ে সম্পাদক বরাবর চিঠি লিখেছিলেন।

তাতে তিনি লিখেছিলেন- ‘মাননীয় সম্পাদক, আমি অমুক, একজন বিজয়ী প্রতিযোগী। আমার ঠিকানা বদল হয়েছে। এখন থেকে আমার বিনামূল্যে প্রাপ্য সংখ্যা বক্সির হাট রোডের অমুক ঠিকানায় পাঠাবেন।’

তার এই কূটকৌশল ছিল অত্যন্ত কার্যকর। পত্রিকা কর্তৃপক্ষ সেই চিঠির ঠিকানা অনুযায়ী পরের মাস থেকে তাকে ফ্রি পত্রিকা পাঠাতে থাকে। কিন্তু তিনি একবারের জন্যও ভাবেননি এটি অত্যন্ত প্রতারণার বিষয়।

তিনি সত্যিকার বিজয়ীকে বঞ্চিত করেছেন। অন্য মানুষের বিজয়কে নিজের নামে শিফট করে বেনিফিটেড হওয়ার কার্যকর পদ্ধতি, ইউনুস সাহেব ১২ বছর বয়সেই রপ্ত বা আবিষ্কার করেছিলেন।এমনই এক প্রতারকের খপ্পরে পড়েছে বাংলাদেশের জনগণ।

বাংলা নামের দেশটি।তার কাছেই এখন ক্ষমতা। তাহলে একটু ভাবুনতো কোথায় এবং কেমন আছি আমরা এই বাংলাদেশের জনগণ?

এই সেই শান্তিতে নোবেল পাওয়া প্রফেসর ড, মুহম্মদ ইউনুস। যতদূর জানা যায় তিনি নিজে ব্যক্তিগতভাবে নামাজ-কালাম-হজ-রোজার ধারে কাছেও নেই।

যদিও সম্প্রতি ঈদের জামাতে চেয়ারেও বসে নামাজ পড়ার ভান করতে দেখা গেছে। সেটিও ইসলাম ধর্মের সাথে প্রতারণা। দেশবাসীর সাথে প্রতারণা। এই প্রতারক ইউনুসই কিন্তু নানা ফন্দি-ফিকির করে সুদের ব্যবসায় অত্যন্ত সফল হয়েছেন।

এবার তিনি আবার ইসলামকে কাজে লাগাচ্ছেন। সম্প্রতি তিনি ইসলামি এনজিওগুলোকে সামাজিক ব্যবসায় যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

মুসলিম বিশ্বে সহায়তা দেওয়ার লক্ষ্যে ইসলামি ধারার বেসরকারি সংস্থা-এনজিওগুলোকে আরও বেশি সামাজিক ব্যবসা উদ্যোগে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।

বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) সূত্রে জানা যায় , গত ৬ জুলাই রোববার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বিভিন্ন মুসলিম দেশের এনজিওর একটি প্রতিনিধি দল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, “আমাদের বিশ্বে আমরা নারীদের স্বাস্থ্যসেবাকে গুরুত্ব দিই। যদি আপনি গরিব হন, তাহলে আপনার স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে সমস্যা থাকবে। আমরা স্বাস্থ্যসেবাকে গরিবদের সহায়তার একটি উপায় হিসেবে দেখেছি।

“সামাজিক ব্যবসা এই সহায়তা প্রদানের একটি ভালো উপায়।”

সারা বিশ্বের তরুণদের সামাজিক ব্যবসায় যুক্ত হয়ে উদ্যোক্তা হতে উৎসাহ দেওয়ার কথাও বলেছেন তিনি।নারীর চূড়ান্ত অপমান করেও যিনি কোন ব্যবস্থা নেন না তিনি কিন্তু নারীদের নিয়ে ব্যবসা করতে ছাড়েন না। এই হলো শান্তিতে নোবেল জয়ী ড. ইউনুস।

সাক্ষাৎকালে বিদেশি প্রতিনিধিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- তুরস্ক থেকে ইসলামি বিশ্বের এনজিও ইউনিয়নের (ইউএনআইডব্লিউ) মহাসচিব আইয়ুপ আকবাল, টার্কিশ আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন (এটিএএ) এর প্রতিনিধি মুহাম্মদ হুসেইন আক্তা, মালয়েশিয়া থেকে পারসাতুয়ান ওয়াদাহ পেন্সারদাসান উম্মাহ (ডবিøউএডিএএইচ) এবং ইউএনআইডবিøউর ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল ফাওয়াজ বিন হাসবুল্লাহ, পাকিস্তান থেকে আল খিদমাত ফাউন্ডেশনের সভাপতি ও ইউএনআইডবিøউর ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ আবদুস শাকুর ও ইন্দোনেশিয়া থেকে ইউএনআইডব্লিউর অডিটিং বোর্ড সদস্য সালামুন বাসরি।

তার মানে নিজে ইসলাম ধর্ম পালনে না করেও কিন্তু ইসলাম ধর্মকে ব্যবসার কাজে লাগাচ্ছেন ইউনুস সাহেব। তবে অনেকেই বলছেন- এইসব ইসলামী এনজিওর মাধ্যমে জঙ্গী গোষ্ঠীগুলোকে অর্থনৈতিক সুবিধাসহ নানা ধরনের সুযোগ তৈরীর একটি সুপরিকল্পিত নকশা করছেন তিনি।

যদিও ইউনুস একটি মেটিকুলাস ডিজাইনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে ক্ষমতা দখল করেছে ইসলামী জঙ্গীদের সহায়তায়।

জঙ্গী নেই ! সেই পুরনো গীত ?

গত ১ জুলাই, ছিল হোলি আর্টিজান হত্যাযজ্ঞের ৯ বছর পূর্তি। আর সেদিনই ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী এক প্রশ্নের উত্তরে সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, দেশে নাকি ‘জঙ্গি নাই’।

তিনি আশু কর্তব্য হিসেবে ছিনতাই ঠেকানোর ওপর জোর দিয়েছেন। তার ভাষ্য, “জঙ্গি থাকলে না জঙ্গি নিয়ে ভাবব। আওয়ামী লীগের সময় জঙ্গি নাটক সাজিয়ে ছেলেপেলেদের মারছে, কিসের জঙ্গি?”

তার এই বক্তব্য গভীরভাবে রাষ্ট্রীয় কৌশল ও অতীতের ঘটনাকে অস্বীকার করার ইঙ্গিত দেয়। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বিশ্বকে নাড়া দেওয়া ঘটনা আজ ‘নাটক’ হয়ে যাচ্ছে!

তাহলে ডিএমপি কমিশনারে যে দুজন সহকর্মী সেদিন প্রাণ দিয়েছেন, তারা কি সাজানো নাটকের বলি হয়েছিলেন? পুলিশ প্রশাসন কি তাহলে রাষ্ট্রের ’মিথ্যা’ প্রতিষ্ঠার মাধ্যম?

যদি তা-ই হয় তাহলে তিনি তার নিজের অবস্থানকেই প্রশ্নবিদ্ধ করলেন। আর যদি তা না হয়, তাহলে তার আজকের বক্তব্য সেই সত্যকে অস্বীকার করার কৌশল।

যে কৌশল অবলম্বন করে তিনি বর্তমান সরকারের সময়টা নির্বিঘ্নে পার করে দিতে চাইছেন বলে কেউ কেউ মনে করছেন। অথচ বিগত সরকারের আমলে হয়তো তিনিও সেই সময়ের ‘জঙ্গি নাটক’ (তার ভাষ্য মতে) আয়োজনের অংশী হয়েছেন, কিংবা নীরব থেকে সুবিধা নিয়েছেন।

যে রাষ্ট্র এক সময় জঙ্গি দমনে ছিলো ‘জিরো টলারেন্স’ ভূমিকায়, সেই রাষ্ট্র এখন জঙ্গিবাদের অস্তিত্বকেই অস্বীকার করছে। এই জঙ্গিবাদের অস্তিত্ব অস্বীকার আদতে দেশের জন্য আরও বড় ক্ষতি বইয়ে আনবে।

কেননা একটি সমাজের সমস্যা অস্বীকার করলে, তার সমাধানেরও কোনো পথ থাকে না। সরকার যদি সত্যিকার অর্থে জঙ্গিবাদের অস্তিত্ব মুছে দিতে চায়, তাহলে তার অস্তিত্ব স্বীকার করতে হবে এবং পেশাদারিত্বের সঙ্গে তার মোকাবিলা করতে হবে।

অথচ মালয়েশিয়া সরকার ৩৬ বাংলাদেশিকে জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে গ্রেপ্তার করেছে এই সেদিন। আমরা দেখেছি অতীতে দেশে এমন অনেক জঙ্গি ধরা পড়েছে, যারা একসময় মালয়েশিয়া বা মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে ছিলেন।

এই বাস্তবতা কিন্তু বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের অস্তিত্বকে আরও স্পষ্ট করে দেয়। তারা কি সত্যিই বুঝতে পারছে না যে এই অস্বীকারের রাজনীতি দেশকে কোথায় নিয়ে যেতে পারে? নাকি তারা ইচ্ছাকৃতভাবে দেশকে সেই পথেই ধাবিত করতে চাইছে?

অতীতে জঙ্গি থাকলেও এখন সব ‘নির্মূল’: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

‘জঙ্গিবাদে জড়িত’ থাকার অভিযোগে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশিদের গ্রেপ্তার এবং তিনজনকে ফেরত পাঠানো হলেও দেশে জঙ্গিবাদের কোনো অস্তিত্ব দেখছেন না স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

দেশে অতীতে জঙ্গি তৎপরতা থাকলেও এখন সেসব ‘নির্মূল করা হয়েছে’ বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। গত রোববার ৬ জুলাই ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রপ্তানি কার্গো ভিলেজ ও বিএডিসি হিমাগার পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের কাছে এমনটাই দাবি করলৈন তিনি।

সেখানে এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশের জঙ্গিবাদের কোনো অবস্থান নেই। এখানে কোনো ধরনের জঙ্গিবাদ নেই। আপনাদের সহযোগিতায় জঙ্গিবাদ নির্মূল করে দেওয়া হয়েছে।”

তবে বাংলাদেশে জঙ্গী নেই স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও ডিএমপি কমিশনারের এ বক্তব্যের সঙ্গে কিন্তু পুলিশের আইজিপি বাহারুল আলমের বক্তব্য যথেষ্ট সাংঘর্ষিক।

আইজিপি বলেন, “দেশে টোটালি কোনো জঙ্গি নেই- এমন নিশ্চয়তা কেউ দিতে পারে না।”

অথচ মালয়েশিয়ার পুলিশের মহাপরিদর্শক মোহাম্মদ খালিদ ইসমাইল গত ৪ জুলাই শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, চলতি বছরের এপ্রিল থেকে পরিচালিত ধারাবাহিক অভিযানে ওই ৩৬ বাংলাদেশিকে আটক করা হয়; তারা মূলত কারখানা, নির্মাণ ও সেবা খাতে কর্মরত ছিলেন।

তাদের মধ্যে পাঁচজনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। গোয়েন্দা তথ্যের বরাতে মালয়েশিয়া পুলিশের আইজি খালিদ ইসমাইল বলছেন, বাংলাদেশিদের ওই চক্রটি অন্য বাংলাদেশি শ্রমিকদের মধ্যে থেকে সদস্য বাড়াচ্ছিল এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও মেসেজিং অ্যাপের মাধ্যমে ‘উগ্রবাদী মতাদর্শ’ ছড়াচ্ছিল।

তিনি বলেন, এই চক্র আন্তর্জাতিক মানি ট্রান্সফার সার্ভিস ও ই-ওয়ালেট ব্যবহার করে সিরিয়া ও বাংলাদেশে ‘আইএসের জন্য’ অর্থ পাঠাত।

মালয়েশিয়া পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের কাউন্টার টেরোরিজম ডিভিশন অর্থ সংগ্রহের প্রমাণ পেয়েছে।

মালয়েশিয়ার পুলিশ প্রধানের বক্তব্য এবং এবং আইএসের জন্য’ অর্থ যোগানের বিষয়ে প্রশ্নের জবাব স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন,”বাংলাদেশ এদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। সেখানকার পুলিশ প্রধান কী বলেছেন আমাদের জানা নেই। সরকারি লেভেলে আমাদের কোন মেসেজ নেই।”

বিএনপি-জামাত সরকারের সাথে ইউনুস সরকারের প্রচন্ড মিল!

জঙ্গী বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বক্তব্য শুনে আবার কিছু পুরনো কথা ও দৃশ্য মনে পড়ে গেল।

সেসব বয়ান ও দৃশ্য দেখলে বিএনপি-জামায়াত সরকারের সময়কার ঘটনাবলীর সাথে গত বছরের আগষ্ট থেকে এ পর্যন্ত সময়কার ঘটনাবলীর যথেষ্ট সাদৃশ্য পাওয়া যায়।

কি প্রচন্ড মিল দেখুন সেই বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের কাজ ও বয়ানের সাথে ইউনুস সরকারের কাজ ও বয়ানের সাথে!

এতে দুয়ে দুয়ে চার মেলাতে কোন অসুবিধে হয়না কারোই। ২০০১ সালের অক্টোবরে নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় আসার পর দেশে জামায়াতুল মুজাহেদীন বাংলাদেশ ( জেএমবি), হরকাতুল জেহাদসহ আরো অনেক জঙ্গী গোষ্ঠীর নৃশংস কর্মকান্ড নিশ্চয়ই দেশবাসী ভুলে যাননি।

২০০৫ সালের ১৭ আগষ্ট বাংলাদেশের ৬৩ টি জেলায় একযোগে সিরিজ বোমা হামলা চালিয়েছিল জেএমবি। পৃথিবীর ইতিহাসে একসাথে এতগুলো জায়গায় বোমা হামলার এমন কোন নজির নেই।

এই জেএমবি’র অন্যতম নাটের গুরু ছিলেন সিদ্দিকুল ইসলাম ওরফে বাংলা ভাই। কিন্তু তখন প্রথমদিকে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের পক্ষ থেকে উল্টো প্রশ্ন করা হয়েছিল- কোথায় জঙ্গী ? কোথায় বাংলা ভাই ?

তৎকালীন সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা এসব বাংলা ভাই-টাই সব মিডিয়ার সৃষ্টি। রাজশাহী ও নওগাঁ জেলার বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে এই বাংলা ভাই এর জঙ্গী ক্যাডাররা তাদের বিরুদ্ধাচারণকারিদেরকে গাছে পা বেঁধে উল্টো করে ঝুলিয়ে নির্যাতন ও হত্যা করতো প্রকাশ্যে।

২০২৪ সালেও জুলাই- আগষ্ট মাসে জঙ্গী মদতপুষ্ট ক্যু’ এর সময় পুলিশকে খুন করে পা উপরে ও মাথা নীচে করে ঝুলিয়ে রাখার মত নৃশংসতা করেছিল সে সময়কার কথিত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা।

রাজধানীর যাত্রাবাড়ির রায়েরবাগ এলাকায় পুলিশ সদস্য গিয়াস উদ্দিনকে হত্যার পর ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল।

যা বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় জেএমবি’র নির্মম-নৃশংসতাকে শুধু স্মরণ করিয়ে দেয় না।

বরং সাধারণ জনগণকে জঙ্গীরা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে যে- দেখো আমরা অতীতে যেভাবে খুন করেছি এখনো সেভাবেই খুন করতে পারি।

তখন সাধারণ মানুষ মেরে ঝুলিয়ে রেখেছি, আর ’২৪ এ এসে পুলিশকে মেরে ঝুলিয়ে রেখেছি। সম্প্রতি চট্টগ্রামের পটিয়া থানার ওসি কে একই কায়দার মেরে ঝুলিয়ে রাখারও হুমকি দিয়েছিল চব্বিশের সেই কথিত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা।

তাই নতুন করে প্রমাণ করার দরকার নেই বাংলাদেশে ইসলামী জঙ্গী আছে কি নেই।

প্রমাণিত সত্যকে গোয়েবলসীয় কায়দায় যতই অপচেষ্টা করা হোক না কেন বাংলাদেশের একটু সচেতন নাগরিক এমনকি বিশ্বের কাছেও নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেবার দরকার নেই এই ইউনুস ও তার নেতৃত্বাধীন সরকারের আসল পরিচয় সম্পর্কে।

তাই স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন জাগে-প্রতারক-ভন্ড-ইসলামী জঙ্গীর মদতদাতা- মেটিকুলাস ডিজাইনার ইউনুসের শেষ কোথায় ?

#রাকীব হুসেইন, লেখক, প্রাবন্ধিক।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *