ঢাকা: একজন সরকারি উপদেষ্টা নৌকা উপহার পেয়েছেন। সেই নৌকা এখন তিনি কী করবেন সেই প্রশ্ন রাখলেন পাঠকের কাছে?
আসলে এই উপদেষ্টার নিজেকে এত স্বচ্ছ, সরিফ দেখানোর মানেটা কী? তিনি কী শিষ্টাচারও জানেন না? নৌকা আওয়ামী লীগের, কিন্তু আন্তর্জাতিক উপহার আওয়ামী লীগের নৌকা মার্কা সূচিত করছে এই কথা কোন যুক্তিতে জ্বালানি উপদেষ্টার মনে হলো?
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানকে নৌকা উপহার দিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত আলজেরিয়ার রাষ্ট্রদূত আবদেল ওহাব সালদানি।
শনিবার (১ নভেম্বর) আলজেরিয়া বিপ্লবের ৭১তম বার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে এই উপহার দেওয়া হয়।
এই উপহার নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা শুরু হয়। বেশিরভাগই টিপ্পনি কাটছেন লোকজন। বলছেন নৌকা তাঁকে ছাড়েনি।
যাই হোক, এইগুলো টিপ্পনির তো যুক্তি নেই। এতবড় একজন উপদেষ্টা তিনি এত সিরিয়াস হয়ে গেলেন বিষয়টাতে হঠাৎ? ভয় পেলেন সত্যিই নৌকা পেয়ে নিজেদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে?
রবিবার (২ নভেম্বর) এক ফেসবুক পোস্টে বিষয়টি ব্যাখ্যা করেছেন উপদেষ্টা নিজেই। এই উপহার নিয়ে কী করবেন, তা জানতে জনগণের কাছ থেকে পরামর্শ চেয়েছেন।
হাস্যকর সব কথাবার্তা তাঁদের।
তিনি লিখেছেন, গত সন্ধ্যায় আলজেরিয়ার জাতীয় দিবসে, আমি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মনোনয়নক্রমে, প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দিই। অনুষ্ঠানে আমাকে পালতোলা দাঁড় পরিচালনাকারী মাঝিসহ নৌকার প্রতিকৃতি উপহার হিসেবে দেওয়া হয়।
কূটনৈতিক সৌজন্যবশত: আমি তা গ্রহণ করি। উপহারটিতে দূতাবাসের নাম লিখিত আছে। লক্ষ্য করুন, এটার সঙ্গে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীকের কোন মিল নাই।
পরামর্শ চেয়ে তিনি আরও লেখেন, এখন আমি এটি আলজেরিয়া দূতাবাসে ফেরত পাঠাতে পারি। এটা অসৌজন্যমূলক ও হীনমন্যতা প্রসূত হবে; সরকারি তোশাখানায় জমা দিতে পারি।
যদিও এটা খুব মূল্যবান কিছু নয়; শৈলান প্রবীণ নিবাসে রাখতে পারি; অথবা নিজে রেখে দিতে পারি।
তিনি শেষে লেখেন, পাঠকের পরামর্শ পেলে উপকৃত হব।
সেখানে কমেন্ট বক্সে একজন খুব গুরুত্বপূর্ণ কথা লিখেছেন। যা খুব অন্তর্দৃষ্টিমূলক কথা হয়েছে। তিনি পরিষ্কার লিখেছেন:
“এটা একটা ছেলে মানুষী উক্তি। রাষ্ট্রীয় প্রোটোকলে বিদেশী উপঢৌকন গ্রহণ কূটনৈতিক শিষ্টাচারের অংশ। এখানে বিদেশী উপহারের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্নতোলা এক ধরনের ন্যাকামি।
কথায় বলে না, ‘ঠাকুর ঘরে কে রে? আমি কলা খাইনি।’
নৌকা বাংলাদেশের আদি ও অকৃত্তিম একটি বাহন। যার সাথে বাংলার আবহমান সংস্কৃতি জড়িত। আওয়ামী লীগের মার্কা নৌকা ছিল তাই মনে হচ্ছে সমগ্র বাংলাদেশ থেকে নৌকার অস্তিত্বই মুছে ফেলতে হবে।
এতরকম মনোভাব যারা পোষণ করে তারা সভ্যতা বিকাশের অন্যতম অন্তরায়। আর যদি কেহ নৌকা ভয় পান তাহলে এটা সে দেশে ফেরত দেয়া যায় এই বলে যে বর্তমান ক্ষমতাসীনদের কোন সিম্বল সম্বলিত উপহার নিয়ে আসুন”।
