ঢাকা: জামায়াত এমন জিনিস যে সাপ হয়ে কাটে আর ওঝা হয়ে ঝাড়ে! জামায়াতের মতো দলের ক্ষমা চাইলেই কী না চাইলেই কী? তাদের ক্ষমা করার জন্য দেশবাসীর কী হাত ধুয়ে বসে আছে?
ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য মানুষ সবকিছু করে। জামাতে ইসলাম এখন সবকিছু করবে প্রয়োজনে জনগণের পা ধুইয়ে দেবে , যা চাইবে তাই তারা দান করবে।
৫৪ বছর আগে কেন ক্ষমা চান নাই? সাপ মারা গেলে সোজা হয় জামাত তার ভুল ৫৪ বছর পর বুঝতে পেরেছে। অথবা ভুল না বুঝলেও তাদের নতুন খেলা শুরু হয়েছে!
৭১ সালে দেশের স্বাধীনতাবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হওয়ার কথা স্বীকার করে নিলো জামায়াতে ইসলামী?
সাম্প্রতিক সময়ে জামায়াতের সাংগঠনিক টালমাটাল অবস্থা দেখে তাই তো মনে হচ্ছে। জামায়াতের ভেতরে ও বাইরে একটা অস্থির অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে বলে আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে।
দল হিসেবে হয়তো একটা সংকটের মুখোমুখি পড়েছে। বিপদে পড়ে, সরাসৃই ক্ষমতার লোভে কোনোমতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের আশায় কৌশলগত অবস্থান নিয়েছে। সাপের বিশ্বাস আছে জামায়াতের বিশ্বাস নাই।
দলটির নেতারাই একসময় আমাদের মহান স্বাধীনতা আন্দোলন নিয়ে অনেক কটুকথা বলেছেন। কতই না আস্ফালন করেছেন। ভীষণ আজেবাজে কথা বলেছেন।
এমনকি, সব ভুল করেও বীরদর্পে বলেছেন, একাত্তরে ভুল করিনি। কাজেই ক্ষমা চাওয়ার প্রশ্নই আসে না।
জামায়াতের ভেতর এখন যা চলছে তা কি বাস্তব, নাকি সাজানো নাটক? কারণ, এই দলটিকে বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়।
বছরের পর বছর ধরে যে ভুলটা তারা স্বীকার করেনি, আজ কেন সেটা স্বীকার করতে যাচ্ছে? এটা কি রাজনীতির কৌশলগত কোনও অবস্থান?
বিষধর সাপকে যতই পোষ মানানো হোক না কেন, সময় সুযোগ পেলে সে ছোবল দেবেই।
জামায়াতের ভাবটা এমন, এখন আপাতত ভুল স্বীকার করে নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখি। পরে সময় সুযোগ মতো আবার খোলস পাল্টাবো। এরা তো তাই করেছে, করে আসছে!
আমরা ভুলে গিয়েছি জামায়াত কী করেছে ?
৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে জামায়াতের বিতর্কিত ভূমিকার কারণে দেশের লক্ষ লক্ষ নিরীহ, অসহায় মানুষ জীবন দিয়েছে।
স্বাধীনতার এতগুলো বছর পর এ জন্য জামায়াত ভুল স্বীকার করলেইবা না করলেইবা কী?
আর তার চেয়েও বড় কথা হলো শত্রুকে পাশে রেখে পথ হাঁটা মোটেই উচিত নয়। পথে বিপদ এলে শত্রু তার আসল চেহারায় ফিরে আসবেই।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ১৯৪৭ সাল থেকে শুরু করে ২০২৫ সালের ২২ অক্টোবর পর্যন্ত যত ভুল করেছে তার জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছে। ভণ্ডামি দেখে গলে যাবার অবস্থা! হাস্যকর!
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে স্থানীয় সময় বুধবার (২২ অক্টোবর) সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন জামায়াত আমির।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘৪৭ থেকে আজকের দিন (২২ অক্টোবর) পর্যন্ত আমাদের দ্বারা যে যেখানে যত কষ্ট পেয়েছেন আমরা বিনাশর্তে তাদের কাছে মাফ চাই।
জামায়াত আমির আরও বলেন, এই এপোলজি (ক্ষমা প্রার্থনা) কমপক্ষে তিনবার চেয়েছি। অধ্যাপক গোলাম আজম, মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী এবং আমিও দিয়েছি। কিছুদিন আগে এটিএম আজহার যখন জেল থেকে মুক্তি পেলেন তখনও বলেছি।
শুধু এখন নয়, ৪৭ সাল থেকে জামায়াতে ইসলামীর দ্বারা কেউ যদি কোনো কষ্ট পান, কারও কোনো ক্ষতি হয়ে থাকে আমি সব ব্যক্তি এবং সংগঠনের পক্ষে নিঃশর্তে আপনাদের কাছে ক্ষমা চাই, আপনারা আমাদেরকে ক্ষমা করে দেবেন।
তিনি আরও বলেন,আজকের দিন পর্যন্ত; আজকের দিন পর্যন্ত আমরা ভুল করি নাই বলবো কীভাবে।
আমাদের ১০০টার মধ্যে ৯৯টা সিদ্ধান্ত সঠিক, একটা তো বেঠিক হতে পারে। সেই বেঠিক একটা সিদ্ধান্তের জন্য জাতির ক্ষতি হতে পারে। সেইক্ষেত্রে আমার কোনো সিদ্ধান্তের জন্য যদি জাতির ক্ষতি হয় তাহলে আমার মাফ চাইতে অসুবিধা কোথায়।
শফিকুর রহমান বলেন, এখন মাফ চাওয়ার পর বলা হয়, এই ল্যাঙ্গুয়েজে চাইলে হবে না, ওই ল্যাঙ্গুয়েজে চাইতে হবে। বিনাশর্তে মাফ চাইলাম, কোনো শর্তও দিলাম না। তারপরে আর বাকি থাকলো কোনটা।
আজকে আবার একদম প্রকাশ্যে বলে দিলাম, ‘৪৭ থেকে শুরু করে ২০২৫ সালের ২২ অক্টোবর পর্যন্ত আমাদের দ্বারা যে যেখানে যত কষ্ট পেয়েছেন, যারা কষ্ট পেয়েছেন তাদের কাছে মাফ চাই। এটা গোটা জাতি হলেও চাই, ব্যক্তি হলেও চাই।
তিনি বলেন, এরপর আবার বলবে শফিকুর রহমান নিউইয়র্কে গিয়ে ক্ষমা চাইছেন, দেশের বুকে ক্ষমা চায়নি। আমি দেশেও ক্ষমা চেয়েছি।
