ঢাকা: বাংলাদেশে শেখ হাসিনার পদচ্যুতির পর সাংবাদিকদের উপর নির্মম অত্যাচার হয়েছে, হচ্ছেও।

ফারুকির মতো অনেককেই প্রশ্ন করা যায় না। প্রশ্ন করলেই হয় জেল, নাহয় চাকরি থেকে বাদ!

সাংবাদিকদের কাজ প্রশ্ন করা, সঠিক তথ্য উপস্থাপন করা। সেটাই যদি তারা পারছেন না, তো তাদের দাঁড়াবার জায়গাটা কোথায়?

নির্যাতন, হয়রানি, লাঞ্ছনার শিকার হয়েছেন হাজার হাজার সাংবাদিক। গ্রেপ্তারি তো আছেই।

দখলদার ইউনূস ক্ষমতায় বসার পর দেশকে একদম লণ্ডভণ্ড করে ফেলেছেন।

প্রশাসন থেকেও জঙ্গীর জোর বেশি। মব করে করে মারা হচ্ছে।

অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের কয়েক সপ্তাহ পরও থানাগুলোয় পুলিশের পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ ছিল না। কিন্তু ১০ মাস পরে এসেও কেন ‘মব জাস্টিস’ দেখতে হচ্ছে।

কোনো বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তোলা যাবে না। তুললেই শেষ।

ইউনূস কেবল নিজের জঙ্গী বাহিনী নিয়ে দেশে কাজ করবেন, দেশ বিক্রি করবেন, টাকা পকেট ভরাবেন।

সাংবাদিক সংগঠনের (ডিইউজে ও সিইউজে) কার্যালয় ১১ মাস ধরে তালাবদ্ধ। এই নিয়ে কোনো প্রতিবাদ নেই। করলেই মব করে মেরে ফেলবেন ইউনূস। তিনি জঙ্গীদের প্রশ্রয়।

দেশব্যাপী গণমাধ্যমে হামলা, সাংবাদিকদের হয়রানি-হুমকি-নির্যাতন, কারাবন্দি সাংবাদিকদের জামিন না দেওয়ার প্রতিবাদে এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিতের দাবিতে যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত ৫১ জন সাংবাদিক।

তবে এতমাস পর এই বিবৃতি কেন? হয়তো যারা বিবৃতি দিয়েছেন, তাঁরা দিতেই সাহস পাচ্ছিলেন না!

৮ জুলাই, মঙ্গলবার এই বিবৃতিটি গণমাধ্যমে পাঠান বেঙ্গল নিউজ টোয়েন্টিফোরের সম্পাদক তৈমুর ফারুক তুষার।

বিবৃতিতে সাংবাদিকরা বলেন, “দেশ এখন মব সন্ত্রাসের কাছে জিম্মি, গণমাধ্যমও এই জিম্মি দশা থেকে মুক্ত নয়।”

তারা অভিযোগ করেন, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা, চাকরিচ্যুতি, গণমাধ্যম কার্যালয়ে হামলা, এমনকি সাংবাদিক হত্যা ও নির্যাতনের ঘটনায় সাংবাদিক সমাজ গভীর নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, দেশের কয়েকটি প্রধান পত্রিকার কার্যালয়ের সামনে প্রকাশ্যে গরু জবাই করে জিয়াফতের আয়োজন করা হয়েছে, যা ছিল মব সন্ত্রাসীদের স্পষ্ট হুমকি।

বিভিন্ন পত্রিকা ও টিভি হাউস দখল করা হয়েছে, তালিকা ধরে চাকুরিচ্যুত করা হয়েছে। এসব ঘটনায় অভিযুক্তরা চিহ্নিত হলেও তাঁদের আইনের আওতায় আনা হয়নি। এতে সন্দেহ দেখা দিয়েছে,

“ক্ষমতাধর কোনো মহল এসবের পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে।”

উদ্বেগ প্রকাশ করে তারা জানান, গত বছরের জুলাই থেকে চলতি বছরের মে পর্যন্ত অন্তত ১০ জন সাংবাদিক হত্যার শিকার হয়েছেন। ১১ মাসে মামলা হয়েছে ৪১২ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে, যাদের মধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছেন ৩৯ জন।

একই সময়ে ১৬৮ জনের প্রেস অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড বাতিল এবং ১০১ জনকে বিভিন্ন প্রেসক্লাব থেকে বহিষ্কার বা সদস্যপদ স্থগিত করা হয়েছে।

৩০০’র বেশি সাংবাদিকের বিদেশ গমন নিষিদ্ধ এবং শতাধিক সাংবাদিকের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে এক হাজারেরও বেশি সাংবাদিক চাকরি হারিয়েছেন।

বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছর পার হলেও সাংবাদিকদের নিরাপত্তা, চাকরির সুরক্ষা বা স্বাধীনভাবে কাজের পরিবেশ গড়ে ওঠেনি।

বরং ঢাকা-চট্টগ্রামের মতো জায়গায় সাংবাদিক সংগঠনের (ডিইউজে ও সিইউজে) কার্যালয় ১১ মাস ধরে তালাবদ্ধ থাকা দুঃখজনক এবং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার জন্য হুমকিস্বরূপ।

বলেন, গণমাধ্যম একটি রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ—এর কণ্ঠরোধ করা মানেই মানুষের বাকস্বাধীনতার ওপর আঘাত।

বিবৃতি দেওয়া সাংবাদিকদের কয়েকজন হলেন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি আবু জাফর সূর্য, ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাবেক সভাপতি ও সম্পাদক সৈয়দ শুক্কুর আলী, সিনিয়র সাংবাদিক নজরুল কবীর, বাংলা ইনসাইডারের প্রধান সম্পাদক সৈয়দ বোরহান কবির, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের আকতার হোসেন, ঢাকা সাব এডিটরস কাউন্সিলের সাবেক সভাপতি জাকির হোসেন ইমন, টিভি ক্যামেরা জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়শনের সভাপতি মোহাম্মদ ফারুক হোসেন, ডিআরইউর সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ জামাল, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজ) যুগ্ম মহাসচিব মহসিন কাজী, সহসভাপতি মাহমুদুল ইসলাম নয়ন, সিনিয়র সাংবাদিক জামাল উদ্দিন, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সাইদুজ্জামান সম্রাট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি দীপক চৌধুরী, সম্পাদক ফরহাদুল ইসলাম প্রমুখ।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *