ঢাকা: শিল্পী জুবিন গার্গের ভক্ত ভারত তো বটেই, আমাদের বাংলাদেশেও তাঁর বহু ভক্ত আছেন যারা এই গায়কের মৃত্যুতে মূহ্যমান। যেহেতু তিনি প্রচুর বাংলা গান গেয়েছেন। এবং সার্থকভাবে ভক্তের হৃদয়ে প্রোথিত হয়েছে।
হঠাৎ করে এত কম বয়সে, এত কম সময়ে তাঁর চলে যাওয়াটা ভক্ত, পরিবারের মেনে নেয়া কঠিনই বটে। জুবিন গার্গের মৃত্যু নিয়ে বহু বিতর্ক উত্থাপিত হচ্ছে।
আসামের মুখ্যমন্ত্রী ডক্টর হিমন্ত বিশ্ব শর্মা এই বিষয়ে মুখ খুলেছেন। এবং উচিৎ তদন্ত হবে এই আশ্বাসও দিয়েছেন।
জুবিন গার্গকে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানানো হচ্ছে বিভিন্ন জায়গায়। বিশেষ করে আসামে। গুয়াহাটি মহানগর থমথমে শিল্পীর মৃত্যুতে।
বহু বছর ধরেই মৃগীর সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। সমুদ্রের জলেই অচৈতন্য অবস্থায় পাওয়া যায় তাঁকে।
তবে মৃগী সমস্যা থাকা সত্ত্বেও ম্যানেজার বা সঙ্গীরা কেন তাঁকে জলের ধারে যেতে বাধা দিলেন না, ঠিক কী ঘটেছিলো ঘটনাটি? এই নিয়ে বেশ কিছু প্রশ্ন উত্থাপিত হচ্ছে!
এই মৃত্যুর সঠিক তদন্তের কথা উঠে আসছে বারবার।
আজ স্বতঃস্ফূর্তভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে সব দোকানপাট, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভক্তরা স্মরণ করছেন জুবিন গার্গকে। নির্ঘুম রাত কেটেছে গতকাল সকলের।
আজ সিঙ্গাপুরে সম্পন্ন হয়েছে জুবিনের মরণোত্তর পরীক্ষা। হয়তো আজ রাতের মধ্যেই আসামে পৌঁছাবে জুবিনের মরদেহ।
আসামের মুখ্যমন্ত্রী ডক্টর হিমন্ত বিশ্ব শর্মা জানিয়েছেন, জুবিন গার্গের নশ্বর দেহ ভারতীয় দূতাবাসের আধিকারিকদের উপস্থিতিতে সঙ্গী দল শেখরজ্যোতি গোস্বামী, সন্দীপন গার্গ, এবং শ্রী সিদ্ধার্থ শর্মা (ম্যানেজার) র হাতে অর্পণ করা হয়েছে।
সিঙ্গাপুরের জেনারেল হাসপাতালে মরণোত্তর পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। জুবিন বরঠাকুরের অন্তিম সংস্কারের দিন সমস্ত বিদ্যালয়, মহাবিদ্যালয় বন্ধ দেয়া হবে।
অসম তথা গোটা ভারতের হৃদয় জয় করা গায়ক জুবিন গর্গ (Zubeen Garg) শুধুই এক শিল্পীর নাম নয়, তিনি ছিলেন উত্তর-পূর্ব ভারতের সাংস্কৃতিক পরিচয়ের এক অনন্য প্রতীক।
বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী ছিলেন তিনি।
১৯৭২ সালের ১৮ নভেম্বর মেঘালয়ের তুরায় জন্ম জুবিন গর্গের। তাঁর আসল নাম জুবিন বড়ঠাকুর, তবে তিনি ‘গর্গ’ গোত্রনাম ব্যবহার করেন।
বাবা মোহিনী বড়ঠাকুর ছিলেন আমলা এবং সাহিত্যিক, যিনি ‘কপিল ঠাকুর’ নামে কবিতা লিখতেন। মা ইলি বড়ঠাকুর ছিলেন গায়িকা ও নৃত্যশিল্পী।
মা-ই ছিলেন জুবিনের প্রথম গুরু। সেকথা তিনি বারবার বলেছেন। এবং সবচেয়ে বড় হলো জুবিন নিজেকে অর্ধেক বাঙালি বলতেন। যেহেতু বেশ কয়েক বছর তিনি আসামের করিমগঞ্জে কাটিয়েছেন।
তাঁর ছোট বোন জঙ্কি বড়ঠাকুরও পরিচিত গায়িকা ছিলেন, যিনি ২০০২ সালে পথ দুর্ঘটনায় মারা যান। আর এক বোন পাল্মে ভরতনাট্যম নৃত্যশিল্পী।
অসমের বিভিন্ন জায়গায় প্রাথমিক পড়াশোনা করেন জুবিন। পরে আসামের জোরহাটের জেবি কলেজ এবং গুয়াহাটির বীরলা বড়ুয়া কলেজে পড়াশোনা করেন।
রবিন ব্যানার্জির কাছে তিনি তবলা শিখেছিলেন এবং রমণী রায়ের কাছে লোকগান শিখেছিলেন। বাঙালির কাছাকাছি থেকেছেন এবং তিনি খুব ভালো বাংলা বলতেন।