ঢাকা: কথায় আছে অতি বাড় বেরো না ঝড়ে পড়ে যাবে, অতি ছোট হয়ো না ছাগলে মুড়িয়ে খাবে। অন্তর্বর্তী সরকার আসার পর বাংলাদেশ ঠিক সেই পথেই যাচ্ছিলো। পাকিস্তানের সাথে হাতে হাত মিলিয়ে ভাবটা চূড়ান্ত পর্যায়ে চলে গিয়েছিলো।

ভারত এতদিন চুপ করে ছিলো। কারণ ভারতের নীতি প্রতিবেশীর সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণ করা। কিন্তু সব সহ্যের সীমা অতিক্রম করে গিয়েছে।

এবার বাংলাদেশ থেকে স্থলপথে সমস্ত আমদানি নিষিদ্ধ করল ভারত!যে সব পণ্যের ব্যবসা ধাক্কা খেলো, তার মধ্যে রেডিমেড পোষাক, প্লাস্টিক পণ্য, পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্যসামগ্রী ও কাঠের ফার্নিচার উল্লেখযোগ্য। মূলতঃ সেভেন সিস্টার্স রাজ্যগুলোর মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে স্থলপথে বাণিজ্যই বন্ধ করা হল।ফলে প্রায় ২ বিলিয়ন ডলারের বাংলাদেশী রপ্তানির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হল।

সরকারপ্রধান ইউনুসের সেভেন সিস্টার্স নিয়ে আলটপকা মন্তব্যের পাল্টা বিদেশমন্ত্রকের পদক্ষেপ এটা।

চিন সফরে গিয়ে সেভেন সিস্টার্স নিয়ে যে মন্তব্য করেন বাংলাদেশের অন্তর্বতীকালীন প্রধান মহম্মদ ইউনূস তা নিয়ে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। তিনি বলেন, ‘সেভেন সিস্টার্স’ অর্থাৎ, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলির জন্য ‘সমুদ্রের একমাত্র অভিভাবক’ না কি বাংলাদেশ। ভারতের সেভেন সিস্টার্স নিয়ে বাংলাদেশের এই মন্তব্যকে ভালোভাবে দেখছেন না কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। ইউনূস চিনে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্পর্কে আলাপ আলোচনা করতে গিয়েছিলেন। সেখানে কেন এই প্রসঙ্গ তুললেন, তা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়।

উত্তর পূর্বের রাজ্যগুলো হল অসম, অরুণাচল প্রদেশ, নাগাল্যান্ড, মণিপুর, মিজোরাম, ত্রিপুরা ও মেঘালয়। ইউনূসকে বলতে শোনা যায়, ‘ভারতের সাতটি রাজ্য যা সেভেন সিস্টার্স নামে পরিচিত, এগুলো ল্যান্ডলকড দেশ। ভারতের ল্যান্ড লকড এলাকা। তাদের সমুদ্রে পৌঁছানোর কোনও পথ নেই।’

তারপরই চিনকে বিনিয়োগের আমন্ত্রণ জানিয়ে মহম্মদ ইউনূস বলেন, ‘এই সমগ্র অঞ্চলে বাংলাদেশই সমুদ্রের একমাত্র অভিভাবক। সুতরাং এটি একটি বিশাল সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করে। ফলে চিনা অর্থনীতির জন্য এটা ভালো খবর।’ ইউনূস বলেন, ‘আমাদের সম্পর্ক কয়েক বছর ধরে খুবই মজবুত। আমাদের বাণিজ্যিক সম্পর্ক ভালো। চিনের কারণে আমরা খুব উপকৃত হই।’

তারপর নড়েচড়ে বসে ভারত। এবার ইউনূসের দেশের উপর চড়াও হল দিল্লি। এক ধাক্কায় বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে ব্যবসার রাস্তা বন্ধ করে দিল কেন্দ্র সরকার।

ভারতের নয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, স্থলপথে বাংলাদেশের সঙ্গে সমস্ত ব্যবসায়িক রুট বন্ধ করা হয়েছে। ফলে এখন বাংলাদেশ থেকে ভারতে আর কোনোরকম পণ্য আসতে পারবে না। উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশে যুক্ত যে সমস্ত ব্যবসায়িক রুট ছিল, তাতে তালা লাগিয়ে দেয়া হয়েছে।

ভারত সরকারের নয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এখন শুধুমাত্র দুটি বন্দর দিয়ে বাংলাদেশ ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য করতে পারবে। তা হলো কলকাতা বন্দর এবং মুম্বাই বন্দর। এই দুই সমুদ্র বন্দরকে ব্যবহার করে বাংলাদেশী পণ্য ভারতীয় বাজারে যেতে পারবে।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *