ঢাকা: চিরবিদায় জুবিন গার্গ! তিনি বলতেন, আমার কোনো জাতি নেই, আমার কোনো ধর্ম নেই, আমি মুক্ত, আমি স্বাধীন।
এই মানুষটা জীবনে যে কত ভালোবাসা পেয়েছেন তার প্রমাণ আজকের ভারত। আসামসহ কাঁদছে সারা ভারত, এমনকি আমাদের বাংলাদেশও।
বাংলাদেশ আজ অবাক, শিল্পীর মর্যাদা কীভাবে রক্ষা করতে হয় তা জানে ভারত। সাবিনা ইয়াসমিনও আক্ষেপের সুরে কথাগুলো বলেছেন। যে আমাদের বাংলাদেশে শিল্পীদের কোনো সম্মান নেই। এগুলো দুঃখজনক।
শুক্রবার সিঙ্গাপুরে মারা যান জুবিন গার্গ। তবে তাঁর মৃত্যু নিয়ে তদন্ত চলছে। আজ ভোরে দ্বিতীয়বারের জন্য আসামের গুয়াহাটিতে মরণোত্তর পরীক্ষা হয়, তবে ফলাফল এখনো প্রকাশ করা হয়নি।
জুবিন গার্গের অকাল মৃত্যুতে থমকে গেছে সারা দেশ। আসামের লোকজন স্তম্ভিত।
রবিবারই অসমে পৌঁছেছে গায়কের নিথর দেহ। চোখের জলে ভূমিপুত্রকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে হাজির হয়েছিলেন তাঁর হাজারো অনুরাগী।
আজ, মঙ্গলবার সাতসকালে জুবিনের শেষকৃত্যেও তেমনই দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি হল। গায়কের কফিনবন্দি দেহ দেখে ভেঙে পড়েছে আট থেকে আশি সবাই।
চোখের জল বাঁধ মানছে না অসমবাসীর। মঙ্গলবার জুবিনের শেষকৃত্যের জন্য গুয়াহাটির জাতীয় সড়কেও যান চলাচল বন্ধ ছিল।
মুখ্যমন্ত্রী ডক্টর হিমন্ত বিশ্ব শর্মা সব সামাল দিয়ে চলেছেন সুশৃঙ্খলভাবে।
গায়কের শেষকৃত্যের জনসমুদ্র বিশ্বের সর্ববৃহৎ চতুর্থ জমায়েত হিসেবে নাম লেখাল ‘লিমকা বুক অফ রেকর্ডে’।
মঙ্গলবার গুয়াহাটি এইমসে ময়নাতদন্তের পর নির্ধারিত সময়ে কামারকুচি এনসি গ্রামে জুবিনের শেষকৃত্য শুরু হয়।
অর্জুন বরুয়া স্পোর্টস কমপ্লেক্স থেকে জুবিনের শববাহী গাড়ি পৌঁছয় শেষকৃত্যস্থলে। একুশ তোপে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বিদায় জানানো হয় গায়ককে।
মানুষে মানুষে ভরা। জীবনে মানুষ কিনেছেন জুবিন। শিল্প এমনই হয়। সবাইকে একত্রে বাঁধে।
ভিড়ে জুবিন ভক্তরা ‘মায়াবিনি রাতির বুকুত’ জনপ্রিয় গান ধরেন। আরেকদিক থেকে শয়ে শয়ে মানুষ স্লোগান তুললেন ‘জয় জুবিনদা।’
শেষকৃত্যের সময়ও বাজানো হল ‘মায়াবিনি’ গানটি, ঠিক যেমনটা বছর দুয়েক আগে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন জুবিন যে- আমি মরলে গোটা অসমজুড়ে এই গানই বাজবে। সেটাই যেন কামারকুচির শেষকৃত্যে অক্ষরে অক্ষরে ফলে গেল।
পঞ্চভূতে বিলীন হলেন গায়ক জুবিন গর্গ। শেষকৃত্যে কান্নায় ভেঙে পড়েন জুবিনপত্নী।
জুবিন গার্গের মুখাগ্নি করেছেন তাঁর বোন পামি বরঠাকুর। সঙ্গে ছিলেন জুবিনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী অরুণ এবং কবি-গীতিকার রাহুল।
সুষ্ঠভাবে গায়কের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে। আজ দুপুর দুইটার পর দোকান পাট সব খোলা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।