গোপালগঞ্জ থেকে ঢাকার উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল এ্যন্ড কলেজ। তারপর সর্বশেষ ২২ জুলাই সচিবালয়। এরই মাঝে কক্সবাজারের চকোরিয়া।
এসব ক্ষেত্রেই ইন্টেরিম সরকারের প্রধান শান্তির নোবেলের দূত জঙ্গী ইউনুসের ইঙ্গিতে আর আওয়ামী সভানেত্রী শেখ হাসিনার ফুফাতো বোনজামাই জামায়াতী সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামানের বাহিনী ও পুলিশের করিৎকর্মা বাহিনীর শান্তিময়(!) কর্মকান্ড ।
তা হলো- গোপালগঞ্জে নিরস্ত্র জনতাকে নির্বিচারে গুলি-হত্যা-বুটজুতায় পিষ্ঠ, ১৬ জুলাই থেকে অদ্যাবধি ধরপাকড়-নির্যাতন-গ্রেপ্তার।
গত ২১ জুলাই ঢাকার উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল এ্যন্ড কলেজে পরিকল্পিত ( এমনটাই তথ্য-প্রমান বলছে) বিমান বিধ্বস্ত-কয়েকশ শিশু শিক্ষার্থী আগুনে ঝলসে নিহত-আহত। লাশ গুমের অভিযোগের প্রতিবাদ ও উদ্ধারকাজ চালাতে গেলে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের ওপর সেনাবাহিনীর নির্মম হামলা।
২২ জুলাই এই বিমান দুর্ঘটনা (!) হতাহতের কারণ অনুসন্ধান, শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরারের পদত্যাগ, শিক্ষা সচিব সিদ্দিক জুবায়েরের অপসারনসহ বিভিন্ন দাবি জানাতে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা সচিবালয়ে গেলে তাদের ওপর পুলিশের ব্যাপক সাউন্ডগ্রেনেড, বেধড়ক লাঠিচার্জ ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ ইত্যাদি।
এর আগে ১৯ জুলাই কক্সবাজারে বিএনপি’র সিনিয়র নেতা ও সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সালঅউদ্দিন আহমদের বিরুদ্ধে কক্সবাজারে জঙ্গী টোকাইদের অনিবন্ধিত রাজনৈতিক দল এনসিপি’র নেতাদের তীব্র কটূক্তি ও আপত্তিজনক মন্তব্যে চকোরিয়ায় সালাউদ্দিনের সমর্থক ও বিএনপি’র বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা এনসিপির মঞ্চ ভেঙ্গে দিলে সেনাবাহিনী বেধড়ক লাঠিচার্জ করে বিক্ষুব্ধ জনতার ওপর।
সেই যে স্বাধীনতার স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম ও সমাধিস্থলেল জেলা গোপালগঞ্জ থেকে এনসিপি’র জঙ্গী টোকাই নেতারা ধাওয়া খেয়ে শেখ হাসিনা আমলের সংগৃহীত এপিসি’তে করে কড়া নিরাপত্তায় পালিয়ে প্রাণে বেঁচেছেন সে থেকে এখন অব্দি তারা সেনা প্রহরাতেই চলাফেরা করেন।
এতই যদি অভ্যুত্থান বা বিপ্লবের নেতা হবে এই জঙ্গী টোকাইরা তাহলে মাইলস্টোন স্কুলে উদ্ধারকাজে গেলো না কেন ? তাদের কাউকেই সেখানে দেখা যায়নি। এমনকি মুমুর্ষু শিশুদের জন্য রক্ত সংগ্রহের আহ্বানও তাদের পক্ষ থেকে করেনি কেউ।
কিন্তু গতবছর বন্যার সময় বন্যাদুর্গতদের সাহায্যার্থে কোটি কোটি টাকা তুলে নয়-ছয় করেছে-এমন অভিযোগতো জনগণের মুখে মুখে। তাদের নিজেদের লোকেরাই প্রকাশ্যে বলে বেড়ায়।
আবার এরই মধ্যে গত ২১ জুলাই গভীর রাতে চট্টগ্রাম নগরীর চকবাজার এলাকায় জামায়াতে ইসলামীর ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবির ক্যাডার ও বিএনপি দলীয় ক্যাডারদের মধ্যে বেশ কয়েকঘন্টা ধরে সংঘর্ষ-গোলাগুলি-ককটেল বিষ্ফোরনের মত ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটে।
এমনকি তারা চকবাজার থানায় ঢুকেও মারামারি করেছে বলে ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। এসবই নাকি আধিপত্য-চাঁদাবাজির ভাগবাটোয়ারা নিয়ে। এতে কয়েকজন গুলিবিদ্ধ ও আহত হয়েছে। মাত্র এক সপ্তাহের অল্প কয়েকটি ঘটনার বিষয় উল্লেখ করলাম এজন্য যে আরো দিতে গেলে আপনাদেরই ধৈর্যচ্যুতি ঘটবে।
এসব ঘটনাপঞ্জি উল্লেখ করছি এ কারনে যে- সত্যিকার অর্থে এসব ঘটনা-অঘটন স্বাভাবিক প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে হয়নি। সবকিছুই ঘটানো হয়েছে। গোপালগঞ্জ নিয়ে আগে থেকে এনসিপি জঙ্গী টোকাইরা উস্কানিমুলক পোষ্ট দিয়েছে ফেইসবুকে।
তারা সারাদেশে পদযাত্রা করলেও গোপালগঞ্জে পদযাত্রা’র পরিবর্তে ঘোষনা করেছে ‘ মার্চ টু গোপালগঞ্জ’। তারমানে গোপালগঞ্জ দখল করতে হবে। এতে স্বাভাবিকভাবেই দল-মত নির্বিশেষে খেপেছিল সে জেলার অধিবাসীরা।
তারপর ১৬ জুলাই গোপালগঞ্জে সমাবেশে মুজিবাদের কবর রচনা বা মুজিববাদ মুর্দাবাদ শ্লোগান দিয়ে মুজিবাদর্শের নাগরিকদের খেপিয়ে তুলেছে। ফলে মঞ্চ ভাংচুর কওে উত্তেজিত জনতা। আর তখনই নিরস্ত্র নিরীহ জনগনের ওপর ওয়াকারের লেলিয়ে দেয়া সেনাবাহিনী হায়নার মতো ঝাঁপিয়ে পরে।
নির্বিচারে গুলিবর্ষণে ঠিক কতজন প্রাণ হারিয়েছেন তার সঠিক হিসেব নেই। তবে তা শ’য়ের ঘর পার করেছে ইতিমধ্যেই। কারফিউ, বালক রেইড দিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে কয়েক হাজার মানুষকে। এর মধ্যে প্রচুর হিন্দু রয়েছে। কারণ গোপালগঞ্জে বেশ হিন্দু রয়েছে। আর হিন্দু মানেই বর্তমান সরকারের কাছে আওয়ামীলীগের লোক। সুতরাং তাদের ওপর নির্যাতনও বেশি।
** এ নির্মম-পাশবিক ঘটনার রেশ কাটেনি। কিন্তু এরই মধ্যে গত ২১ জুলাই ঢাকার উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুলে আছড়ে পড়ে চীনের তৈরী বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর যুদ্ধবিমান। জ্বলে পুড়ে নিহত হলো কয়েকশত নিষ্প্রাণ শিশু। আরো যে কত মায়ের বুক খালি হবে তার ইয়াত্তা নেই।
নিহত আহতদের উদ্ধারে ওই স্কুলের শিক্ষক-ছাত্রসহ স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলেও দেখা পাওয়া যায়নি মানবতার ফেরিওয়ালা, শান্তির ফেরিওয়ালা ইউনুসের দল এনসিপি’র কাউকে। এখান থেকে কোলমতি শিশুদেও লাশ গুমের সময় প্রতিবাদ করেছিল শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও স্থানীয় জনতা। আর যায় কোথায় ?
ওয়াকার বাহিনী ঝাঁপিয়ে পড়ে বেধড়ক পিটুনি দিয়েছে তাদের। এই হলো জাতিসংঘ শান্তিমিশনে যাওয়া বাহিনী। এই তাদের শান্তি প্রতিষ্ঠার নমুনা ?
এরই মধ্যে ২২ জুলাই জঙ্গী আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার ও ডাষ্টবিন শফিক নামে পরিচিত প্রধান উপদেষ্টা ইউনুসের তথ্য সচিব শফিকুল আলম সেখানে গেলে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েন।
প্রায় নয় ঘন্টা মাইলস্টোন স্কুল এ্যন্ড কলেজে অবরুদ্ধ হয়ে থাকার পর পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সশস্ত্র প্রহরায় তারা পেছনের পথ দিয়ে বের হতে সক্ষম হন সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার পর। সারাদিনই পুলিশ-সেনাবাহিনীর সঙ্গে বিরোধ চলছিল সেখানে শিক্ষার্থীদের।
অথচ বাতাসে পোড়া লাশের গন্ধ আর মা-বাবাদের আর্তনাদে এলাকার পরিবেশ ছিল অশ্রুসজল। কিন্তু ওই শান্তির নোবেলজয়ী ইউনুসের তাতে কি ? তারতো চাই ক্ষমতা।
এই যুদ্ধবিমানটিকে প্রধান উপদেষ্টার অফিস থেকে বলা হয়েছে প্রশিক্ষণ বিমান হিসেবে। আর সেনাসদরের আন্তসংযোগ শাখা বা আইএসপিআর থেকে বলা হয়েছে যুদ্ধবিমান। তারমানে সরকার প্রধান ও সেনাবাহিনীর মধ্যে যে কি পরিমাণ সমন্বয়হীনতা রয়েছে তা একেবারেই দিবালোকের মত স্পষ্ট। সরকার প্রধান জানেন না এটি প্রশিক্ষণ বিমান না যুদ্ধবিমান !
এক অথর্ব-ক্ষমতালোভী-অর্থলোলুপ নোবেল লরিয়েট ইউনুসকে আর কত সহ্য করবে এ বাংলার মানুষ সেটাই এখন দেখার বিষয়। আবার তারভেরিফাইড ফেসবুক থেকে মাইলস্টোন ঘটনায় নিহত-আহতদের সাহায্যের জন্য জনগণের কাছ থেকে অর্থ সাহায্য চেয়ে পোষ্ট দেয়া হয়েছিল।
তারমানে মৃত্যু নিয়েও এই চরম অর্থলোভী ইউনুস তার সামাজিক ব্যবসার ফাঁদ পেতেছিলেন। কেমন অর্থপিশাচ এই ইউনুস !! তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে প্রবল সমালোচনা ওঠায় তা প্রত্যাহার করা হয়েছে। তবে প্রচুর স্ক্রিনশট রেখে দিয়েছে জনগণ।
মাইলস্টোন স্কুলএ্যন্ড কলেজে এই মর্মান্তি ঘটনার তিনদিন আগেই হাওয়াই দীপপুঞ্জ থেকে অপারেট করা Aanonymus Main Page থেকে সতর্ক করে দেয়া হয় একটা স্কুল বিল্ডিং দুর্ঘটনার শিকার হবে এবং অনেক শিশু জীবন হারাবে। ঘটনার পর তারা পোষ্ট দিয়ে জানায় তাদের দেয়া তথ্য মোতাবেক ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে নানা সন্দেহ-প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
** আরো একটি বিষয় ব্যাপক সন্দেহের জন্ম দিয়েছে। এ বিষয়টিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবি ও ভিড়িও সহ ঘুরে বেড়াচ্ছে। তা হলো- পাইলট তৌকির বিমান থেকে ইজেক্ট করে প্যারাসুটের মাধ্যমে নেমেছিলো।
বিমান বিধ্বস্তের সময় সে বিমানে ছিলো না। পাশের একটি টিনশেড ভবনের বদ্ধ ঘর থেকে তাকে উদ্ধার করা হয় ঘটনার প্রায় ঘন্টা খানেক পরে। দর্শনার্থীরা গাছে প্যারাসুটের বেলুন ঝুলতে দেখে সেনাবাহিনীর সদস্যদের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে, গাছের পাশে থাকা টিনশেড ভবনের একটি তালাবদ্ধ ঘর থেকে মুমুর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে সিএমএইচে নিয়ে যায়। চিকিৎসারত অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
এ বিষয়টিও নানা সন্দেহের সৃষ্টি করেছে জনমনে। এর কোন ব্যাখ্যা সরকার দেয়নি বা পাওয়া যায়নি।
শুধু এটি নয়। মতিউর রহমান নামে একজন ফেইসবুকে পোষ্ট দিয়েছিলেন যে বিমান বিধ্বস্ত হবে, শতাধিক শিশু আহত হবে। এই পোষ্টটি দেয়া হয়েছে ২১ আগষ্টের তিনদিন আগে। তার বাড়ি শরিয়তপুর জেলার সখিপুর এলাকার তারাবুনিয়া এলাকায় যদিও তিনি নাকি এখন চাঁদপুরে অবস্থান করছেন। তার পিতার নাম আবদুল্লাহ তাঁতী।
এই মতিউর রহমানের রাজনৈতিক পরিচয় হিসেবে জানা গেছে সে ইসলামী ছাত্র শিবির করতেন বা সেই মতাদর্শেই আছেন এখনো। এই যে ফেইসবুকে দুটি ভয়াবহ পোষ্ট তা কি সঠিক তদন্ত করবে এই জঙ্গী ইউনুস সরকার ? মনে তো হয়না।
** জঙ্গী ইউনুস সরকারের অপশাসনে অতিষ্ঠ হয়ে সরকারের কূটনীতিকের অত্যন্ত লোভনীয় চাকরি ত্যাগ করার দুঃসাহস দেখিয়েছেন মরক্কোর রাষ্ট্রদূত হারুন- আল- রশিদ। তিনি তার ফেইসবুক পোষ্টে লিখেছেন, সারজিস হাসনাতের মতো আত্মঘাতী জঙ্গিরা কী করে ছাত্রলীগের সদস্য হল ?
এর নানান কারণ থাকতে পারে। সাধারণ কারণ হল মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতি শিথিলতা প্রদর্শন। মৌলবাদিদের সাংস্কৃতিক আগ্রাসন থেকে আওয়ামী লীগ বা ছাত্রলীগকে রক্ষা করতে না পারা। ফল হল জামাতের কৌশলের কাছে পরাজয়।
বঙ্গবন্ধুর পরিবারের একমাত্র শেখ হাসিনা এবং শেখ রেহানা ছাড়া এবং উনাদের সন্তানরা ছাড়া আর প্রায় সবাই, যতদূর দেখি আর কি, সৌদি পোশাক পরা শুরু করেছে। আপনি আওয়ামী লীগের মন্ত্রীদের ঘরের মহিলাদের আর জামাতের নেতাদের ঘরের মহিলাদের দুই কাতার করুন। দেখবেন কোন কাতার কাদের তা বুঝতে পারবেন না।
আপনি ওয়াকারের স্ত্রীকে দেখুন। ওয়াকার চাকরি থেকে অবসর নেয়ার এক মাস পর দেখবেন তার দাড়ি শফিকের দাড়ির চেয়ে লম্বা। তার স্ত্রী কাল বস্তায় ভরা। এখনই যেই অবস্থা। মৌলবাদিরা এই আগ্রাসনটা সব জায়গায় সফলভাবে করতে পেরেছে।
এই কূটনীতিক আরো লিখেছেন- এখন আমাকে গালি দিতে পারেন, এতে দোষ কি? দোষ এইটা যে ইসলামে যে আরও দশটা জিনিসকে হারাম ঘোষণা করেছে তার সবগুলির কোনওটা থেকে কেউ বিরত থাকে না। দুর্নীতি, চুরি, মিথ্যা বলা, অন্যের ক্ষতি করা। এর কোনওটা কিন্তু কেউ পালন করে না।
সবাই শুধু দাড়ি রেখে আর বোরকা পরে বেহেশতে যেতে চায়। দাড়ি রেখে আর বোরকা পরে সবাই মনে করে আল্লাহ বাকি পাপ সব এমনি এমনি মাফ করে দেবে। এবং সেভাবেই শিক্ষা দেয়া হয়।
হারুন- আল- রশিদ এর ভাষায় বোরকা পরলে উত্তেজনা কম হবে এটা একটা খোঁড়া যুক্তি। যদি উত্তেজনা কমাইতে চান তা হলে সবাইকে যথেষ্ট পরিমাণ পেতে দিন। আর যদি পোশাকভিত্তিক উত্তেজনা হ্রাস করতে চান তা হলে সবার সব পোশাক খুলে ফেলুন। দেখবেন অপ্রয়োজনীয় উত্তেজনা মরে গেছে।
মানুষতো প্রাণিজগতের একটা সদস্য মাত্র। অন্য প্রাণিদের উত্তেজনাঘটিত সমস্যা নাই, কারণ তারা পোশাক পরে না। দাড়ি আর জোব্বাতে সব মাফ। কাজি ইব্রাহিম তারেক মনোয়ার এরা কি কোনও সত্য কথা বলে? বলে না। তবু কেউ কি ওদের পাছায় চাবুক মারে? মারে না। ওরা যাদের দেখিয়ে দেয় সবাই তাদের পাছায় চাবুক মারতে আসে। দুই দিন আগে যে সুদখোর মায়ের সাথে জেনা করে দুই দিন পরে সেই সুদখোরের ঘরে আমরা দলে দলে লামিয়াদের পাঠাই।
তিনি আরো লিখেছেন- জঙ্গি আন্দোলনে একটা লাশ পড়লে তা দশটা হয়ে যায়। সারা বাংলাদেশ কাঁদতে থাকে। জঙ্গিদের অধীনে দশটা লাশ পড়লে একটা পড়েছে বলে বলা হয়। সারা বাংলাদেশ নিশ্চুপ থাকে।
** এদিকে ২২ জুলাই শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ করতে গিয়ে, মাইলষ্টোন ট্র্যাজেডির লাশের হিসেব জানতে গিয়ে পুলিশ সেনাবাহিনীর মার খেয়ে রক্ত ঝরাচ্ছে। শিক্ষার্থীদের মেরে রক্তাক্ত করছে ইউনূস-ওয়াকারের বাহিনী। যতদূর জানা যায় এসব নিরাপত্তা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে ইতিমধ্যেই জামাত শিবির ঢুকেছে।
তারাই এসব করে যাচ্ছে। এসব শিক্ষার্থীরা শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার এবং শিক্ষাসচিব সিদ্দিক জোবায়েরের পদত্যাগসহ বেশকিছু দাবিতে সচিবালয়ে বিক্ষোভ করছিল। একসময় তারা সচিবালয়ে ঢুকে পড়ে ও কিছু গাড়িও ভাংচুর করে। তারপরই সেনা-পুলিশ বেধড়ক লাঠিচার্জ-টিয়ারগ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয় তাদের।
সচিবালয়ের আশপাশের একমাইল এলাকা পরিণত হয়েছিল রণক্ষেত্রে। রক্তাক্ত হয়েছে শিক্ষার্থীরা। গ্রেপ্তার করা হয়েছে অনেককে। অবস্থাটি এমন হয়েছে যে, এই বাংলাদেশে কোন কিছুর প্রতিবাদ করা যাবেনা।
এমনকি নিহত আহত হলেও, নিষ্পাপ শিশুদের লাশ গুম করা হলেও। এমনই বৈষম্য বিরোধী সমাজ চেয়েছিল এই বাংলাদেশের মানুষ ? এমনই মানবিক সমাজ চেয়েছিল ? এমন বাকস্বাধীনতা চেয়েছিল গত ২০২৪ সালের জুলাই-আগষ্টে ?
এজন্যই বলার চেষ্টা করেছি যে, খুন-পরিকল্পিত হত্যাকান্ড-সেনা-পুলিশ নির্যাতনে মৃত্যুপুরী বাংলাদেশ।
** এরই মধ্যে বাংলাদেশে জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশন’ এর একটি অফিস ঢাকায় স্থাপনের ব্যাপারে জাতিসংঘ ও বাংলাদেশের ইউনুস সরকার নাকি ইতিমধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। সাধারণত যেসব দেশ সংঘাতপূর্ণ থাকে সেসব দেশেই তাদের এই অফিস স্থাপন করে থাকে।
তারমানে মার্কিন তাবেদার ইউনুস সরকার ডিপ স্টেট এর অধীনে মেটিকুলাস ডিজাইন অনুযায়ী মার্কিন পাপেট এর মতো বাংলাদেশকে একটি সংঘাতময় রাষ্ট্রে পরিণত করেছেন ইতিমধ্যে। সেই ডিজাইনেই এই মানবাধিকার হাইকশিনের অফিস স্থাপন হতে যাচ্ছে।
২১ জুলাই বিমান বিধ্বস্ত হয়ে আগুন লাগার পর ওই মাইলস্টোন স্কুলের এক মহিয়সী শিক্ষিকা মেহরিন চৌধুরী নিজের জীবন বিপন্ন করে তার সন্তানসম শিশু শিক্ষার্থীদেরকে বাঁচাতে ছুটে গিয়েছিলেন অগ্নিদগ্ধ ক্লাশরুমে।
কিন্তু তিনি নিজে অন্তত: ২০ টি শিশুকে উদ্ধার করার পর নিজেই আগুনে মারাত্মকভাবে দগ্ধ হন। তাকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনষ্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন। মানবতার প্রকৃষ্ট উদাহরন হয়ে বেঁচে থাকবেন তিনি অনন্তকাল। এই বাংলার জনগনের কাছে না হলেও তাঁর শিক্ষার্থীদের কাছে।
তাঁর স্মৃতিতে বীরেন্দ্র নাথ অধিকারি নামে একজন সচেতন নাগরিক শ্রদ্ধা জানিয়েছেন এভাবে-
তিনি শিক্ষক, তিনিই মা!
========
ঝড় উঠেছিল আগুনের ঝর মাইলস্টোনে,
জ্বলছিল চারপাশ—দিগভ্রান্ত, আর্তচিৎকার মৃত্যুকূপে।
সবার আগে সরে যেতে পারতেন তিনি—
চাইলে বাঁচতে পারতেন, জানতেন সে পথ সোজা।
কিন্তু রেখে যেতে পারেননি তাঁর ছোট্ট ছোট্ট একেকটা জান—
তাঁর চোখের তারারা যে তখন শ্রেণিকক্ষে বন্দিপ্রাণ!
ছিলেন তিনি কি শুধুই এক শিক্ষিকা?
না, ছিলেন মায়ের মতো বুকে আগলে রাখা আশ্রয়িকা।
যাঁর মুখ বুক পুড়ে ছাই হয়ে গেল,
তবু ভালোবাসা এক ফোঁটা কমেনি কখনো।
আশিভাগ দগ্ধ শরীর, তবুও দাঁড়িয়ে ছিলেন
মৃত্যুর মুখে, মনের জোরে প্রাণের টানে শিশুদের বাঁচালেন।
দুর্ঘটনায় তাঁর মৃত্যু হলেও সন্তান রক্ষায় নির্ভিক তিনি অটল—
এ এক গাথা, সাহসের, আত্মদানের, মহিমা থেকে মহত্তম।
মাহরিন চৌধুরী— তুমি নেই তবু আছ কোটি হৃদয় জুড়ে,
শিক্ষকের শপথে, শিশুর নিঃশ্বাসে, পিতা-মাতার ভরসায়।
তোমার অমর গল্প রবে শিক্ষালয়ের দেয়ালে দেয়ালে,
তোমার নাম জ্বলবে প্রদীপ হয়ে সব অন্তরের দীপমালায়।
ফুল ঝরে পড়ে গেছে গন্ধ ছড়িয়ে দিগন্তজুড়ে,
তোমার চলে যাওয়ায় যে আলো জ্বলে, নিভে নাতো কভু!
তুমি ছিলে সাহসিনী, তুমি শিক্ষাদাত্রী ছিলে মা,
তোমার প্রতি শ্রদ্ধা অতল, অশ্রুভেজা প্রণাম নিরন্তর।
# নুরুল ইসলাম আনসারি, লেখক, প্রাবন্ধিক।