আজকের বাংলাদেশ একদম জরাজীর্ণ বাংলাদেশ। স্বার্থের হাতে মুষ্টিবদ্ধ বাংলাদেশ। যে দেশে প্রাণ বলে কিছু নেই। আইন আজ অকার্যকর, বিচার এখন মেঘের আড়ালে — আমরা কি মুক্ত দেশের নাগরিক? মুহাম্মদ ইউনূসের হাতে বাংলাদেশ যাওয়ার পর থেকে এই দেশ অস্থির হয়ে উঠেছে। অন্তর্বতী সরকার চোখ, কান বন্ধ করে বসে আছে।
একসময় এই দেশে পুলিশ মানেই নিরাপত্তা, আদালত মানেই ন্যায়বিচার—মানুষ শ্রদ্ধা করত, ভয় নয়, আস্থা রাখত। কিন্তু আজ? আজ মানুষ পুলিশের সামনে দাঁড়িয়ে কাঁদে না, হাসে—ব্যঙ্গ করে।
এই সরকারই তো অবৈধ। জনগণের ভোট ছাড়াই ক্ষমতায় বসে তারা আইনকে নিজের হাতে খেলনা বানিয়ে ফেলেছে একেবারে।
অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে মানুষ ভয় পায় সেই আদালতকে—যেখানে ধনী-বড়লোক ছাড়া কেউ ন্যায় পায় না। এই কি সেই সোনার বাংলাদেশ, যেখানে একদিন শেখ হাসিনার শাসনে বিচার হতো, আইন কার্যকর ছিল, প্রশাসন জনগণের বন্ধু ছিল?
আওয়ামী লীগের নাম নিশান মুছে ফেলার চেষ্টা চলছে। যে দেশ জন্ম নিয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরে, সেই দেশের মাটি থেকে আওয়ামী লীগকে মুছে ফেলার চেষ্টা করা মানেই হচ্ছে জনগণের রক্ত, ভাষা, সংস্কৃতি এবং স্বাধীনতার ইতিহাসকে অস্বীকার করা।
১৯৪৯ সালে প্রতিষ্ঠিত আওয়ামী লীগ শুধু একটি রাজনৈতিক দল নয়, এটি একটি আন্দোলনের নাম। আজ যারা আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার স্বপ্ন দেখে, তারা ইতিহাস ভুলে গেছে। মুহাম্মদ ইউনূস তো ইতিহাসের পাতার পরোয়া করেন না।
দেশবিরোধী অপশক্তির ষড়যন্ত্র চলছে বাংলাদেশে। অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে শান্তি-উন্নয়ন-অগ্রগতি কিচ্ছু নেই। বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার এক উদ্ভট সরকার।
মুহাম্মদ ইউনূসের হাতে বাংলাদেশ! যিনি দেশপ্রেম কাকে বলে তাই জানেন না।বাংলাদেশের সংবিধানে উল্লেখ রয়েছে, রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব তথা, মন্ত্রী বা সংসদ সদস্য হতে হলে তাঁকে বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে। এবং দ্বৈত নাগরিক হলে বিদেশি নাগরিকত্ব ত্যাগ করতে হবে। উল্লেখ করতে হয়, সময়মত বিদেশি নাগরিকত্ব ত্যাগ না করায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেত্রী ড. শাম্মী আহমেদ দলীয় মনোনয়ন পেলেও তার প্রার্থিতা বাতিল হয়েছিল। আরো নজির আছে।
মুহাম্মদ ইউনূস কীভাবে? মুহাম্মদ ইউনূস এখন আর রহস্য নন, তিনি এখন একটা টপিক ।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বাংলাদেশ ও আমেরিকার দ্বৈত নাগরিক। সারাবিশ্ব ভ্রমণের সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পাসপোর্ট ব্যবহার করতেন। এবং প্রধান উপদেষ্টা হবার পরে তিনি বাংলাদেশি লাল পাসপোর্ট (D00017703) নিয়েছেন।
সবচেয়ে গম্ভীর বিষয়টি হচ্ছে, যেকোন নতুন পাসপোর্ট নেবার সময় পুরানো পাসপোর্টের নম্বর উল্লেখ করার নিয়ম থাকলেও মুহাম্মদ ইউনূস এখানে ব্যতিক্রম । তাঁর ক্ষেত্রে এটি প্রতিপালিত হয়নি। পুরানো পাসপোর্টের মেয়াদ অনেক আগে শেষ হয়ে গেলেও নতুন বাংলাদেশি পাসপোর্ট নেননি।
পুরানো পাসপোর্টের নম্বরটি কেন উল্লেখ করেননি, তার ও কারণ আছে। পুরানো পাসপোর্ট সাথে, তাহলে এত ঘনঘন দেশ-বিদেশ ভ্রমণ করেন কিভাবে? এতে করে তাঁর আমেরিকান নাগরিকত্বের বিষয়টি প্রকাশ পেয়ে যাবে। তারপর তিনি বঞ্চিত হবেন।
এই কারণে তিনি উপদেষ্টা হবার পর লাল পাসপোর্ট গ্রহণের সময় পুরানো কোন পাসপোর্টের নম্বর উল্লেখ করেননি।
এদিকে, আরো যেমন, উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, হবিগঞ্জের কুখ্যাত স্বাধীনতাবিরোধি সৈয়দ মুহিবুল হাসানের কন্যা বিশিষ্ট পরিবেশবাদী আইনজীবী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বাংলাদেশ ও ব্রিটিশ নাগরিক, অর্থাৎ দ্বৈত নাগরিকত্ব রয়েছে। আছেন ড. খলিলুর রহমান।
মুহাম্মদ ইউনূসের কতটুকু দেশপ্রেম আছে তা তো আমরা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি।
যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব নিতে হলে কঠিন শপথ নিতে হয় যুক্তরাষ্ট্র যদি যুদ্ধে লিপ্ত হয় তখন যদি প্রয়োজন হয় তাহলে ব্যক্তিকে যুক্তরাষ্ট্রের হয়ে যুদ্ধ করতে হবে। অর্থাৎ দেশে থাকতে হলে দেশের হয়ে লড়তে হবে প্রয়োজনে। এই বোধটা ওরা দিয়ে দেয়। এইক্ষেত্রে স্বাভাবিকভাবেই যারা আমেরিকার নাগরিক আছেন, তারা সেই দেশকেই প্রাধান্য দিতে সবসময় বাধ্য থাকবেন ।
আর এমন লোকেরা সিংহাসনে বসে বাংলাদেশের মঙ্গল চাইবেন, এটা কী আশা করা যায়? এখন বাংলাদেশের জনগণকে ভাবতে হবে মুহাম্মদ ইউনূস আসলে করছেনটা কী? আদৌ কি বাংলাদেশ নিয়ে ভাবেন তিনি? নাকি শুধুই দেশটা বেচে দিতে এসেছেন?
দেশে চক্রান্ত চলছে, আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ নষ্ট করে দেয়ার। ছাত্রলীগের ছেলেমেয়েদের কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে দেয়া হচ্ছে না, চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে, দোকানপাট ব্যবসা বাণিজ্য লুটপাট করে বেদখল করা হয়েছে ।
এগুলো খুবই পরিকল্পিত ভাবে করা হচ্ছে, মূল লক্ষ্য হলো ছাত্রলীগ, যুবলীগ ধ্বংস করার মাধ্যমে আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ প্রজনন প্রক্রিয়া চিরতরে ধ্বংস করে দেয়া । মেটিকুল্যাস প্ল্যান।
বর্তমানে মুহাম্মদ ইউনূসের সময় পাকিস্তানসহ স্বাধীনতাবিরোধী সব শক্তি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের উপর প্রতিশোধ নিচ্ছে এবং মুহাম্মদ ইউনূস ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হচ্ছে। ক্ষমতার লোভে ইউনূস অন্ধ এখন।
ড. ইউনূস তাঁর ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করবার জন্য বাংলাদেশকে বর্গা করে দিয়েছেন? বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের আর রইলোটা কী? মানবিক করিডোর নিয়ে কি ভাবছে বাংলাদেশ? আরাকান পাচ্ছে মানবিক করিডোর! এতে পার্বত্য চট্টগ্রাম হুমকিতে পড়বে। প্রশ্ন, মানবিকতা দেখাতে গিয়ে আমরা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবো? এটি কি আসলেই শেষ পর্যন্ত মানবিক করিডোর থাকবে?